Update Story
📢 গল্পঃসিনিয়র_খালাত_বোন_যখন_বউ পর্বঃ০৬    📢 গল্পঃসিনিয়র_খালাতো_বোন_যখন_বউ পর্বঃ০৫    

ভাইয়ের_বন্ধু_যখন_বর😍 -------(season 2) [🖤] part_18🍁




"প্রায় আধ ঘন্টা ধরে তিশা ওয়েটিং রুমে বসে আছে।রিসিপশনে বসে থাকা মেয়েটি কলেজ ড্রেস পড়া তিশাকে তেমন পাত্তা দিলো না।নিজের নামটা কাগজে লিখে দেওয়ার পরও রিসিপশনার নামটা চেকও করেনি একবার।
তাই বাধ্য হয়ে তিশাকে এখন অপেক্ষা করতে হচ্ছে ওয়েটিংরুমে।ক্লান্ত শরীরটা এসির হালকা ঠান্ডা বাতাসে শীতল অনুভূতি হয়ে ঘুমের ঘোর লাগছে।তাই শোফায় হালকা হেলান দিয়ে চোখটা বন্ধ করার সাথে সাথে ঘুমিয়ে গেলো তিশা।
অফিসে কর্মরত সবাই আসা যাওয়ার সময় কলেজ পড়ুয়া একজন মেয়েকে ওয়েটিং রুমে দেখে খুব আশ্চর্য হচ্ছে।সবাই ভাবছে হয়তো অফিস কর্মরত কারো সাথে দেখা করতে এসেছে।"

---জিসানের বিদেশী কিছু ক্লাইন্ট আসায় একটু ব্যস্ত ছিলো।তাই তিশার খোঁজ নিতে পারেনি।ক্লাইন্টদের বিদায় দিয়ে নিজের কেবিনে গিয়ে একটু আশ্চর্য হলো।তিশাকে রুমে আশা করেছিলো।কিন্তু তিশা নেই,তাহলে কি ও আসেনি।
না আসলে রফিক অবশ্যই আমাকে একবার কল করতো।জিসান তার পি এ সোমকে ডাক দিলো।
-সোম এসে হাজির হলো।
'আমার একজন গেস্ট আসার কথা ছিলো, সে কি আসে নি।'
-স্যার আসলে তো জানতাম।আমি নিজে রিসিপশনে গিয়ে রিনিকে বলে এসেছি, কেউ আসলে আমাকে ইনফোর্ম করতে।
'জিসানের মাথায় চিন্তা ভর করলো।সাথে সাথে রফিক কে কল করলো।রফিকের কথা শোনার পর,জিসান তাড়াহুড়া করে কেবিন থেকে বের হলো।'
-পিছন পিছন সোমও ছুটলো।
'রিসিপশনে যাওয়ার সময় ওয়েটিংরুমের দিকে চোখ পরে জিসানের।তিশাকে দেখে একটা দীর্ঘ শ্বাস ছাড়ে,এতোক্ষনে চিন্তায় যেনো মাথা ফেটে যাচ্ছিলো।রফিককে ফোন দেওয়ার পর যখন বললো,তিশাকে নাকি অফিসের সামনে নামিয়ে দিয়েছে আরো আধ ঘন্টা আগে,অথচ তিশা অফিসে আসে নাই।তাই জিসান ভয় পেয়ে গিয়েছিলো।'

"-জিসান তিশার সামনে হাটুগেড়ে বসলো।তিশার কপালে আসা ছোট চুলগুলো কানের পিছনে গুঁজে দিয়ে, হালকা লো ভয়েজে ডাক দিলো।তিশাএএএএ.......।কয়েকটা ডাকে তিশার ঘুম ভেঙ্গে গেলো।চোখ খুলে জিসানকে নিজের সামনে এভাবে হাটুগেরে বসে থাকতে দেখে অবাক হলো,
সরি একটু চোখ লেগে গিয়েছিলো।

---জিসান তিশার গালে একটু ছুঁয়ে, তুই ঠিক আছিস।

"তিশা মাথা নারালো,ইয়া আমি ঠিক আছি।"

---কেবিনে না বসে এখানে কেনো বসে ছিলি।জিসানের কথার জবাব না দিয়ে তিশা রিনির দিকে তাকালো।রিনিতো যথারীতি ভয়ে শুকনো ঢোক গিললো।অফিসের বেশকিছু কর্মচারী কৌতূহল নযরে তাকিয়ে আছে।আসলে সবার মাঝে কিউরিসিটি কাজ করছে।তাদের রুড বস,একটা পিচ্ছি মেয়েকে এতো আদর মাখা কন্ঠে ডাক দিলো যেনো, ঘুম ভাঙ্গার অপরাধে তাকে কেউ এখন জেলে ভরে দেবে।

"জিসান তিশার চাহনি বুঝতে পেরে,রিনির দিকে তাকায়।ওকে আমার কেবিনে না পাঠিয়ে এখানে বসতে বলেছেন কেনো,মিস রিনি।সোম আপনাকে বলেনি কিছু।"
-একচুয়েলি স্যার সোম স্যার বলেছেন, একজন গেস্ট আসবে।আমি ভাবলাম হয়তো কোনও ইম্পোরটেন্ট ক্লাইন্ট আসবে।কিন্তু ওকে দেখে আমি ভাবলাম তেমন ইম্পোরটেন্ট না,আর তখন আপনে আমাদের বিদেশি ক্লাইন্টদের সাথে ব্যস্ত ছিলেন তাই আর কি।

"তাই আর কি,আপনে নিজেই ডিসিশন নিয়ে নিয়েছেন। মিস রিনি প্রথমত এই অফিসে ডিসিশন নেওয়ার জন্য আমি এখনো আছি।তাই আপনাকে বেশি ভাবতে হবে না।আর দ্বিতীয়ত যাকে আপনে তুমি বলে সমোন্ধন  করছেন।সে ও অফিসের বস।তাই তাকে রিসপেক্ট দিয়ে কথা বলুন।রিনি সহ অফিসের সবাই কৌতূহল চোখে জিসানের দিকে তাকিয়ে আছে।"

---কি হলো মিস রিনি,আপনে হয়তো বুঝতে পারেননি আমার কথা তাইতো।ওকে ওয়েল...।
তিশার লিখা কার্ডটা কোথায় মিস রিনি।রিনি কার্ডটা ঝটপট খুঁজে বের করে জিসানের সামনে আনলো।

পড়ুন!

'-কার্ডে তিশার পুরো নামটা দেখে রিনি একবার জিসানের দিকে আরেকবার তিশার দিকে তাকালো।'

---কি হলো পড়ুন।ধমক দিয়ে।

'মিসেস তিশা জিসান আহমেদ,রিনি পড়লো।'

---মিস রিনি জরে পড়ুন।রিনি তখন জোরেই নামটা বললো।
অফিসের সবাই স্তব্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে রইলো।সবাই তিশার দিকে তাকিয়ে আছে।কলেজ ড্রেস পড়া,মাথায় দু'টো বেনি করা।গলায় একটা আইডেন্টিটি কার্ড ঝুলানো।দেখতেই অনেকটা বাচ্চা বাচ্চা ফিলিং আসে এই মেয়ের মধ্যে। আর এই মেয়ে নাকি জিসান আহমেদ এর ওয়াইফ।

"জিসান আহমেদ এর মতো একজন বিজনেস টাইকুন।যার নিজের হাতে গড়া এতো বড় বিজনেস সাম্রাজ্য।পত্রিকায়, ম্যাগাজিনে এখনো তাকে মোস্ট এলিজিবল ব্যাচেলার বলে জানে সবাই।এমনকি তার অফিসে কর্মরত সবাই এটাই জানে।তার ওয়াইফ নাকি একজন টিনেজার।হাউ স্ট্রেঞ্জ!"

-ইয়েস, সি ইজ মাই ওয়াইফ।আমি আপনার বস হলে,আমার মিসেস ও আপনার বসই হবে।রাইট!

'রিনি মাথা নাড়ালো হ্যা।'

---সো নেক্সট টাইম রিসপেক্ট এর সাথে কথা বলবেন।আমি একি অপরাধ দ্বিতীয় বার ক্ষমা করিনা।

"তিশা বসে বসে এতোক্ষন জিসানের কার্যকলাপ দেখছিলো।তিশার মনে যেনো লাড্ডু ফুটেছে আজ।জীবনে এতো খুশি কখনো হয়নি।যতোটা আজ হলো।পুরো অফিসের মানুষ যে ৪২০ ভোল্টেজ শোকড খেয়েছে,তা তাদের চাঁদের মতো মুখ খানি দেখলেই বুঝা যাচ্ছে।বিশেষ করে অফিসের সুন্দরী মেয়েগুলোর। "

---তিশার ব্যাগটা নিজের কাঁধে নিয়ে তিশার হাতটা ধরে সবার সামনে দিয়ে নিজের কেবিনে চলে গেলো।তিশাকে নিজের চেয়ারে বসিয়ে নিজেও একটা চেয়ার টেনে তিশার সামনে বসে।তিশার হাতটা ধরে,তুই রাগ আমার উপর।
'তিশা মাথা নাড়ায়, না।তাহলে তাকাস না কেনো আমার দিকে।'

"কি করে তাকাবো....! আপনার নযর যে আমাকে প্রতিনিয়ত গ্রাস করে তা কি আপনে বুঝেন।আপনার চোখের চাহনি যে আমাকে ব্যাকুল করে তুলে,ডুবে যেতে মন চায় কোনও অদূর সমুদ্রে।যাবেন কি আমার সাথে।ভাসবো আমরা দু'জনে,হারিয়ে গিয়ে দু'জনের মাঝে।তিশার মনের প্রথম প্রেমের প্রথম অনুভূতি গুলো বলতে চায় জিসানকে কিন্তু পারছে না।কেবল মনে মনেই ভেবে চলছে।জিসানের সামনে প্রকাশ করার ভাষা যে খুঁজে পায় না ও।
এমনেই তিশার উত্তর।"

---জিসান একটু মুচকি হেসে,তিশার গালদুটো আলতো করে ধরলো।আমি আমার ভালোবাসাটা গোপন রাখতে পারিনা।আমি প্রকাশ করতে বেশি পছন্দ করি।সেটা ভালোবাসা হোক,বা কস্ট বা রাগ।ভেতরে রেখে ছটপট করার চেয়ে চিল্লিয়ে বলে দেওয়া ভালো।এতে মন থেকে অনেক বড় পাথর সরে যায়।
মনের মধ্যে কোনও কিছু বেশি দিন রাখতে নেই,হোক সেটা ভালোবাসা,রাগ,হিংসা।মন নামের ছোট্ট পাখিটির এতে কস্ট হয়।আর এতে পাখিটি রাগ করে মনকে পাথর বানিয়ে দেয়।
তাই মনে কিছু থাকলে বলে দিবি।লুকিয়ে রেখে কি হবে।হয়তো একদিন দেরি হয়ে যাবে।সামনের ব্যক্তিটি যে তোর সামনে সারাজীবন থাকবে এমনতো না।
বেলা শেষে তাকেও একদিন চলে যেতে হবে।তখন হয়তো তুই অফছোস করবি কেনো বললাম না।এখনো অনেক কথা বাকি।কিন্তু শোনার মানুষটি নেই।ঠিক বলেছি।

"-শেষের কয়েকটা কথা তিশার বুকে তীরের মতো লাগলো।চোখে একগাদা জল চলে এলো,যা তিশা তার ঘন পাপড়ি গুলো দিয়ে আসতে বার বার বাধা দিচ্ছে।"

---জিসান ব্যাপারটা বুঝতে পারে।তিশার মাথাটা হলকা করে বুকে চেপে ধরে,প্লিজ ডোন্ট ক্রাই ....জান।আমি তোর কান্নাটা একদম দেখতে পারি না।মনটা  ক্ষতবিক্ষত হয় উঠে।প্লিজ স্টোপ!আমি এখনো আছি তো।
'তিশাও জিসানকে দু'হাত দিয়ে শক্ত করে জরিয়ে ধরতে চায় কিন্তু এখনো কিছু সংকোচ ওর মধ্যে কাজ করে যার কারণে চাইলেও পারছে না।'

---অফিসের লেন্ডলাইনে ফোন আসলে,জিসান ফোনটা রিসিভ করে কিছুক্ষণ কথা বলে,এর পর তিশাকে কেবিনে রেখে একটু বাহিরে যায় কিছু কাজে।তিশাকে কেবিনেই বসে থাকতে বলে যায়।

||
||

"তিশা জিসানের চেয়ারে বসে চকলেট খাচ্ছে আর কেবিনটা দেখছে।সোমকে দিয়ে জিসানই পাঠিয়েছে অনেক গুলো চকলেট,সবই তিশার ফেবেরেট।কেবিনটা খুব সুন্দর করে সাজানো।
মিস্টার জিসানের কেবিন বলে কথা।তারতো আবার সব কিছু পারফেক্ট চাই।কি করে যে আমার মতো অগোছালো মেয়ের পাল্লায় পড়লো আল্লাহই জানে।"

---দরজা খোলার শব্দে সামনে তাকালো তিশা, লাবণি কেবিনে ডুকে তিশাকে জিসানের কেবিনে দেখে হতোবম্ভ।তার চেয়ে বেশি শোকড জিসানের চেয়ারে বসে থাকতে দেখে।
'আরে তিশা তুমি এখানে,এখানে কি করছো।আর জিসানের চেয়ারে কেনো বসেছো।তিশার হাত ধরে,তারাতারি উঠো।জিসান দেখতে পেলে খুব রাগ করবে ডিয়ার।ওর রাগ উঠলে ও হিংস্র হয়ে যায়।ওকে সামলানো তখন ইম্পসিবল।আর নিজের জিনিস কেউ টাচ করুক একদম পছন্দ করে না।তিশাকে উঠিয়ে শোফায় বসিয়ে দিলো।তিশার একদমই মন চাইছিলোনা উঠতে,কিন্তু লাবনির জোড়াজোরিতে উঠতেই হলো।'

'তুমি এখানে কি করছো তিশা।'

---একচুয়েলি আপু আমি....তিশাকে আর বলতে না দিয়ে।ভালোই হয়েছে তোমার সাথে দেখা হওয়াতে।আমার না তোমার একটু হেল্প এর প্রয়োজন………করবে।

---অবশ্যই আপু,আপনে বলুন কি করতে হবে।

"জিসানতো তোমার ভাইয়ের বেস্ট ফ্রেন্ড তাইনা।তাহলে রায়হানতো অবশ্যই জানবে জিসানের কোনও গার্লফ্রেন্ড আছে কিনা।গতও চার বছরের ধরে চেস্টা করছি,কিন্তু ইডিয়েট আমার দিকে ঠিকমতো তাকায় তো না।বরং কাছে গেলেই পালিয়ে বেড়ায় মনে হয় আমার শরীরে কোনও ছোঁয়াচে রোগ আছে। বলতো আমি কি দেখতে খারাপ।"

---তিশা মাথা নাড়ায়,না।

"লাবণি হতাশ হয়ে,জানো প্যারিসে কতও ছেলে আমাকে প্রোফজ করেছে।অথচ আমার মন আটকে গিয়েছে এই নিরামিষটার দিকে।একদমই আনরোমান্টিক একজন মানুষ।সামনে এতো সুন্দরী রমনী বসে আছে,কোথাও একটু চান্স নিবে।তা না করে এড়িয়ে চলে।তুমি কিছু আইডিয়া দিতে পারবে।না আসলে তোমরা তো অনেক বছর ধরে একে অপরকে চিনো,তাই তোমার সাহায্য চাইছিলাম।প্লিজ.....।আই রিয়েলি লাভ হিম।আই ইউল নট সার্ভাইব ইউদাউট হিম।প্লিজ হেল্প মি।"

---লাবনির কথা শুনে তিশার শরীরের রক্ত যেনো গরম হয়ে বুদবুদ করছে।মাথাটা ফাটিয়ে দিতে মন চাইছে সামনে বসা লাবণির।দুনিয়াতে কি পুরুষ মানুষের অভাব পড়ছে,যে তোর আমারটার দিকেই নযর পড়ছে।সাহস কি করে হলো আমার জিসানের দিকে নযর দেওয়ার।তোর ওই চোখ দু'টোতে আমি ফেবিগ্লু লাগিয়ে দিবো।আমার জিসানকে ছাড়া বাঁচবি না,তাহলে মর কোন ডোবাতে ডুবে।আর একবার আই লাভ জিসান বললে,তোকে আমি সত্যি ওই কচুরিপনা ময়লা,আবর্জনময় ডোবাতে ফেলে দেবো।দেখিস!ইউ ডোন্ট নো,হু এম আই?

-এমন হাজারো কথা তিশা মনে মনে ভাবছে আর অসংখ্য গালি দিচ্ছেে লাবণিকে।ভালোবাসার যে ঈর্ষায় এতোদিন জিসান জ্বলেছিলো।আজ সেই একই ঈর্ষায় তিশা জ্বলছে।লাবণির মুখে জিসানের নামটাও শুনতে ভালো লাগছে না।তবে কিছু বলতেও পারছে না।জিসান বলেছিলো,
আমার ভালোবাসার দহনে তোকেও জ্বলতে হবে একদিন।তাইতো আজ তিশা জ্বলছে।জিসান আশেপাশে থাকলে হয়তো পোড়ার গন্ধটাও পেতো।

"রিনি কেবিনে ডুকেই তিশাকে সরি বলে-ম্যাম আই এম রিয়েলি সরি।তখনকার ব্যবহারের জন্য,প্লিজ স্যারকে বলবেন এবারের মতো ক্ষমা করে দিতে।স্যার খুব রেগে আছে আমার উপর।"

---ইটস ওকে,আমি কিছু মনে করিনি।এন্ড ডোন্ট ওয়ারি।তিশা সান্তনা দিলো রিনি কে।

'লাবণি কিছুই বুঝতে পারলো না কি হচ্ছে, তাই রিনিকে জিঙ্গেস করলো,ম্যাটার কি?'

"একচুয়েলি ম্যাম আমি চিনতে পারিনি।উনি যে মিসেস জিসান আহমেদ।"

---ওয়াট!লাবণি একটু চিল্লিয়ে।কে মিসেস আহমেদ।আর তোমাকে কে বলেছে এসব নোনসেন্স।তিশা এসব কি?কেনো মিথ্যা বলেছো।ও এম জি তিশা!তুমি আবার  জিসানের উপর ক্রাশ খাওনি তো।

তিশা কিছু বলতে যাবে তখনি, তিশাকে থামিয়ে।দেখো বেবি,আই নো জিসান খুবই হ্যান্ডশাম এন্ড ড্যাসিং বয়।যে কেই ক্রাশ হবে।বাট ডিয়ার তুমি এসবের জন্য ছোট।আর জিসানতো তোমার বড় ভাইয়ের ফ্রেন্ড, বয়সেও তোমার থেকে বেশ বড়।তাই এমন উদ্ভট চিন্তা মন থেকে বের করে দেও।আর জিসান জানতে পারলে তোমার অবস্থা খুব খারাপ করে তুলবে।এধরনের ফাইজলামি ও একদমই পছন্দ করে না।তিশা কিছু বলতে যাবে....

---ঠিক এসময় জিসানও কেবিনে এসে পড়লো।রিনিকে দেখে, তুমি এখানে কি করছো।
"একচুয়েলি স্যার ম্যামকে সরি বলতে এসেছি।"

---ওকে নেক্সট টাইম যাতে ভুল না।কেয়ার ফুল। নাউ গো।
"ইয়েস স্যার।রিনি চলে গেলো।"

'-লাবণি কিছুই বুঝে উঠতে পারছে না কি হচ্ছে।পরে এ নিয়ে চিন্তা করবো।এসব বাদ দিয়ে জিসানকে জিঙ্গেস করলো,তো জিসান লাঞ্চ এর কি প্লান।সামনের কোন ভালো রেস্টুরেন্ট এ চলো যাই।জিসান তিশার দিকে তাকিয়ে,সরি লাবণি লাঞ্চ আজ তোমাকে একাই করতে হবে।আমার আজকের লাঞ্চের প্লান তিশার সাথে।'

---সো ওয়াট!তিশাও আমাদের সাথে জয়েন হবে।এনি প্রবলেম তিশা।তিশার দিকে তাকিয়ে।
'কিন্তু তিশা হ্যা না কিছুই বলতে পারলো না।কারন এমন সিচুয়েশনে কি বলবে বুঝতে পারছে না তিশা, তাই জিসানের দিকে তাকিয়ে আছে।'

But I have a problem.... জিসানের কথায় লাবণি অবাক হলো,আর বিস্মিত চোখে জিসানের দিকে তাকালো।সমস্যা কি জিসান,এমন করছো কেনো।

"জিসান তিশার ব্যাগটা হাতে নিয়ে,আজকাল অফিসের কাজের চাপে আমি তিশার সাথে একদমই সময় কাটাতে পারিনা।তাই আজকে সময় বের করে ওর সাথে লাঞ্চ প্লানিং করেছি।এই সময়টা আমি তিশার সাথে একান্ত কাটাতে চাই।আই হোপ ইউ আন্ডার্স্টান্ড।"

---লাবণি বসা থেকে দাঁড়িয়ে____নো, আই ডোন্ট আন্ডার্স্টান্ড।প্লিজ ক্লিয়ার করে বলবে,হচ্ছেটা কি?আমি ফ্রাস্টেড হয়ে পরছি।তিশার সাথে তোমার এমন কি সম্পর্ক যার জন্য ওকে সময় দিতে হবে।

"জিসান তিশার হাতটা ধরে নিজের কাছে টেনে আনলো।
---যা দেখে লাবণি,আবাক চাওনি দিয়ে তাকিয়ে আছে। 

"জিসান বুঝতে পারে,তাই একটা দীর্ঘ নিশ্বাস ছেড়ে বলে,লাবণি____

She is my wife.There is nothing wrong with wanting to spend time alone with my wife.And one more thing you did not want to know if there is anyone in my life.Then listen,this girl is spreading my mind,my life.My life stops without her.I hope you understand.....

"জিসানের কথায় লাবণি স্থব্ধ হয়ে গেলো।জিসানকে কিছু বলার ভাষা হারিয়ে ফেলেছে।অশ্রুসিক্ত নয়নে জিসানের দিকে তাকিয়ে আছে।জিসান তিশার হাতটা ধরে কেবিন থেকে বের হতে নিলো,কিন্তু লাবণির প্রশ্নে থেমে যায়।"

---কবে করেছো জিসান।বেশিদিন তো হয়নি প্যারিস থেকে আসলে।এতো কি তাড়া ছিলো তোমার।

"জিসান লাবণির দিকে না তাকিয়েই উত্তর দিলো,আমি তিশাকে বিয়ে করার পর প্যারিস গিয়েছি।এখানে এসে নয়।
জিসান আর এক মিনিটও দাঁড়ায়নি।তিশার হাতটা শক্ত করে ধরে বের হয়ে গেলো।"

---জিসান যাওয়ার পর লাবণি নিজের হাতের মোবাইলটা এতো জোরে  আছাড় মারে যে,মোবাইলের প্রতিটি পার্ট চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে যায়।লাবণি চিৎকার দিয়ে নিচে বসে পড়ে।সাউন্ড প্রুফ বলে লাবণির আর্তনাদ কারো কানে গেলো না।নাএএএএএএ......।কেনো জিসানএএএ....কেনোওওওওও।
এতো সহযে আমি তোমাকে হারাতে পারবো না। জিসানএএএএএ।তুমি শুধু আমার,শুধু আমার......।
শুনছোওওওওও।

||
||

"রেস্টুরেন্ট এ গালে হাত দিয়ে বসে সামনের ব্যক্তুিটাকে নিয়ে তিশা আজ গভীর চিন্তায় মগ্ন।এতো চিন্তা তো তিশা মনে হয় নিজের এস এস সি পরীক্ষায়ও করেনি।খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখতে লাগলো তিশা আজ জিসানকে।কি অদ্ভুত তাই না,এই মানুষটি ওর এতো কাছে থাকার পরও তিশা কখনো খেয়াল করেনি,মানুষটির হাসি কতোটা মারাত্মক।এই হাসি দিয়ে কয়েকশ মেয়েকে নিমিষেই খুন করে ফেলতে পারবে।"

---জিসান রেস্টুরেন্টের ম্যানেজার এর সাথে হেসে হেসে কথা বলছে।কারন এটা জিসানের বন্ধুর রেস্টুরেন্ট। তাই ম্যানেজার নিজে এসেছে অর্ডার নিতে।

"উফ!কি হাসি.....এভাবে কেউ হাসে।কি দরকার এতো হাসার।একটু কম হাসলে কি হয়।উনি যদি জানতো তার এই প্রশস্ত হাসিটা আজ আমার ঠিক কোথায় গিয়ে লাগছে,তাহলে কি বন্ধ করে দিতো।
কই আগে তো ভালো লাগেনি।তাহলে আজ কেনো এতো লাগছে আমার বুকে।
উনার সিল্কি চুলগুলোকে হাত দিয়ে এলোমেলো করে দিতে মন চাইছে।তার সরু খাড়া নাক টাকেও আজ একটু স্পর্শ করতে মন চাইছে।কি অদ্ভুত সব ইচ্ছা জাগছে আজ মনে।
মনে হচ্ছে চকলেট আইচক্রিম আমার সামনে রেখে কেউ কড়া ধরে নিষেধ করছে খেতে পারবে না।শুধু চেয়ে চেয়ে দেখো।কিন্তু চেয়ে দেখলে কি মনের ক্ষুধা মিটবে।অবশ্যই একটু ছেঁকে ও দেখতে হবে।"

---ম্যানেজারের সাথে কথা বলার ফাঁকে জিসান তিশার দিকে তাকিয়ে ইশারা করে কোনও সমস্য।তিশা শুধু মাথা নাড়ায় না।
আবার নিজের ভাবণায় ডুব দেয়, উনি যখন আমার দিকে তাকায় তখন তার চোখের চাওনি যথেষ্ট আমাকে পাগল করার জন্য।এই চাওনিতে নেই কোন লোভ,কোনও কামুকতা।আছে অবিরাম ভালোবাসা,বিশ্বাস আমার জন্য।এ কেমন অনুভূতি জন্ম হলো মনে।একে কি ভালোবাসা বলে,কি অদ্ভুত ফিলিংস্। 
আজ তো এই রগচটা, রাগী,ইগুস্টেক,হিটলার জিসানকেও আমার ভালো লাগছে।মনের ভেতর কেমন প্রেম প্রেম দোলা দিচ্ছে।খুব বিশ্রী বিশ্রী চাওয়াও মনে জাগছে।এ যেমন এখন আমার খুব ইচ্ছা করছে, জিসানের গাল দু'টোতে ডিপলি কিস করে দিতে।আজ তো জিসানকেই আমার চুমুতে ভরে দিতে মন চাইছে।

"ছিঃ তিশা কিসব চিন্তা করছিস।তোর এসব চিন্তা ভাবণা যদি জিসান জানতে পারে তাহলে এখানেই ব্যাচারা বেহুশ হয়ে যাবে।তিশা নিজের ভাবণায় নিজেই লজ্জা পেয়ে গেলো।গাল দু'টো লাল হয়ে গেলো টমেটোর মতো।"

---জিসান ম্যানেজারকে বিদায় দিয়ে___তুই ঠিক আছিস।
'-তিশা মাথা নাড়ায়,হ্যা।'

---তাহলে এতো ব্লাশিং করছিস কেনো।গালদু'টো টমেটোর মতো হয়ে গেছে।আমি কিন্তু খেয়ে ফেলবো।তখন কিন্তু দোষ দিতে পারবি না।

'-তিশা গাল ফুলিয়ে জিসানের দিকে তাকালো।'

---আর জিসান হাসতে হাসতে নিজের এলোমেলো চুলগুলো আঙ্গুল দিয়ে ঠিক করতে ব্যস্ত।যথাসময় খাবার এলে দু'জনে লাঞ্চ করে নেয়।এর পর জিসান তিশাকে বাড়ীতেও পৌছে দেয়।

"গাড়ীতে থাকাকালীন সময়ও তিশার চোখটা আবার লেগে যায়।কারণ বেশ সময় ওরা জ্যামে বসা ছিলো।বাড়ীর সামনে এসেও জিসান তিশাকে ডাক দেয়না।তিশার ঘুমন্ত চেহারাটাও যে মাতোয়ারা করে তুলবে তা তো জিসানের জানাই ছিলো না।এক ধ্যানে তাকিয়ে থাকে জিসান তার ঘুমন্ত পরীটার দিকে। 
তোর ঘুমন্ত চেহারাটা দেখেও আমার নেশা লাগে,তাহলে অন্য কোনও নেশা দিয়ে কি হবে বল।তুই যে আমার আসক্তিতে পরিণত হতে যাচ্ছিস তা কি জানিস।
প্রায় আধ ঘন্টা পর তিশাকে ডাক দেয় জিসান।তিশা ঘুম ঘুম চোখেই জিসানকে বায় বলে চলে যায়।আর জিসান তিশার যাওয়ার দিকে তাকিয়ে মুখে এক চিলতি হাসি এনে,আমার ঘুমন্ত পরী।"

চলবে......

No comments