Update Story
📢 গল্পঃসিনিয়র_খালাত_বোন_যখন_বউ পর্বঃ০৬    📢 গল্পঃসিনিয়র_খালাতো_বোন_যখন_বউ পর্বঃ০৫    

ভাইয়ের_বন্ধু_যখন_বর😍 --------(season 2) [🖤] Part_23🍁




 "অনেকদিন পর আজ আহমেদ ভিলা নতুন রঙ্গে সেজেছে।আমাদের পিচ্ছি তারিনের জন্মদিন বলে কথা।বাড়ীর সবাই ভীষন ব্যস্ত।পুরো বাড়ী মাথায় তুলে ফেলেছে জিসান।পারে না পুরো বাড়ী বিয়ে বাড়ীর মতো সাজিয়ে ফেলুক।মনে হয় তারিনের আজ জন্মদিন না বিয়ে।
তারিনের জন্মের সময় জিসান ছিলো না।তারিনের অনেক কিছু জিসান মিস করেছে।তাই এবারের জন্মদিনে নিজের সব শখ পূরণ করবে।ভাইয়ের একমাত্র মেয়ে বলে কথা।তাওহিদ আর তানজিলা  অবশ্য এসব কিছু করতে চায়নি,সাদামাঠা ভাবে পালন করতে চেয়েছিলো কিন্তু জিসানের জিদে সবাইকে মানতে হয়েছে।"

---সন্ধ্যায় যথাসময় পার্টি শুরু হয়েছে।সবার মধ্যমনি তারিনকে সাদা রং এর ফ্রকে একদম বার্ভি ডোল লাগছে।তারিনের সাথে মেচিং করে তাওহিদ ও তানজিলা ও সাদা পরেছে আজ।
তাদের তিনজনকে ভারী সুন্দর লাগছে।রেড কালারের কার্পেট বিছানো সিড়ি দিয়ে যখন তিনজন নেমে আসছিলো,তখন সবার মুখে একই কথা পার্ফেক্ট ফ্যামিলি।

'-জিসানের মেঝাজ গরম,তাও আবার তিশার উপর।বার বার বলার পরও মেয়েটা লেট করেছে আসতে।রাগে লাল হওয়া জিসান বন্ধুদের সাথে কথা বলছিলো,আর তখনি রায়হানের ডাকে সবাই ওই দিকে তাকায়।
কিন্তু জিসানের চোখ রায়হানের পিছে দাঁড়িয়ে থাকা একটা লাল পরীর উপর পরে।গাঢ় লাল রং এর গ্রাউন,সাথে মেচিং হিজাব আর মুখে আছে খুবই নরমাল সাজ।এতেই মনে হচ্ছে জিসান খুন হবে সেই নারীর প্রেমে বার বার।'

---কথায় আছে না রুপ নাই যার সাজন বেশি রুপের মাইয়া সাজে না, জিসানের মনে এখন একথা বেজে উঠেছে।রুপ মানেই সুন্দর,আর সেই সুন্দর সব ক্ষেত্রেই হয়।কালো সাদা চামরাটা ব্যাপার না।কালো মেয়েদেরও অনেক সময় এমনেই সুন্দর লাগে,সাজতে হয় না।কালো মেয়েরা তো মায়াবতী হয়।
তবে তিশা কালো নয়।তিশার গায়ের রং হলদেটে সাদা।একদম সাদা নয়।দুধের মধ্যে এক চিমটি হলুদ মিক্সড করলে একটা ভিন্ন রং দেখা যায়।পুরো সাদাও নয়,পুরো হলুদও নয়।জিসানের কাছে তিশার রংটা তেমনিই মনে হয়।এর মধ্যে রেড কালারটা তিশার শরীরে অসাধারণ লাগছে।এমন রুপে তিশাকে জিসান খুবই কমই দেখেছে।তাইতো চোখ ফেরানো দায় হয়ে পরছে আজ।

"তিশার ঠিক পিছনে লাবনি দাঁড়িয়ে ছিলো।আজ লাবনিও লাল পরেছে।জিসানের শাড়ী পছন্দ বলে,লাল নেটের একটা শাড়ী পরে এসেছে।সাথে দামি অর্নামেন্ট ও মুখে ভারী মেকআপ।মূলত তিশার পাশে লাবনিকে দেখেই জিসানের মনে এমন কথা এসেছে।
তিশার নরমাল সাজ যেখানে জিসানকে ঘায়েল করতে পারে,সেখানে লাবণির ভারী মেকআপ কোনও কাজের না।বলে না, কেউ তোমাকে ভালোবাসলে এমনেই ভালোবাসবে।তুমি যেমন আছো তেমনি ভালোবাসবে।তোমার বাহিরের চাকচিক্য নয়,তোমার মনটাকে দেখে ভালবাসবে।সে ভালোবাসা হয় পিউর।একদম সোনার মতো খাঁটি।"

---জিসান রায়হানকে পাশ কাটিয়ে তিশার দিকে চলে গেলো।রায়হান তো আশ্চর্য জিসানের বিহেভ দেখে।এতো লেট করলি কেনো।কতো বার ফোন দিয়েছি,ফোনও রিসিভ করিসনি,এতো কিসের ব্যস্ত তোর।কথা বলছিস না কেনো... জিসান একনাগাড়ে বলেই গেলো।
তিশা কিছু বলতে যাবে,তার আগেই রায়হান এসে, কি রে আমিও যে আসছি চোখে দেখিস নি।
জিসান বিরক্ত চোখে রায়হানের দিকে তাকিয়ে,তুই কি আমার গার্লফ্রেন্ড নাকি বউ তোর দিকে নযর দিতে হবে।যা তোর দলের মানুষ সব ওই দিকে দাঁড়িয়ে আছে,ওখানে যা।
রায়হান তাকিয়ে দেখলো ওদের ফ্রেন্ডসরাও ইশারা করে ওকে ডাকছে।রায়হান ভালো করে জানে বন্ধু তার বউ পাগল,তাই বলে লাভ নেই।

'-কিছুক্ষণ পর কেক কাটা হলো।ছোট্ট তারিন তিশা ও জিসানকে  এক সাথে কেক খাওয়ালো।জিসান তারিনকে একটা বড় ডোল দিয়ে বললো,এটা তোমার ছোট চাচা-চাচীর তরফ থেকে।
তিশা জিসানের দিকে তাকিয়ে বললো,আমার তরফ থেকে মানে।এটাতো আপনি দিলেন।
জিসান সবার আড়ালে তিশার কোমড়টা ধরে টান দিয়ে কাছে টেনে এনে,জান আমরা কি আলাদা।এটা কেমন কথা, দুটো শরীর একি মনে গাথা।চোখ টিপ মেরে।'

---লাবনি দূর থেকে সবই দেখছে,জিসান যে তিশার সাথেই চিপকে আছে।এতো কি আছে এই মেয়েটার মাঝে যে অন্য কাউকে দেখার সময় নেই জিসানের।দাঁতেদাঁত চিবে সব সহ্য করছে।ওয়েটার কে ডাক দিয়ে একগ্লাস সোপ্ট ড্রিংক নিয়ে লাবণি তিশার দিকে আসছিলো ,হঠাৎ লাবনির হাতের সোপ্ট ড্রিংকটা তিশার শরীরে পরে গেলো।
আম সো সরি তিশা,আসলে স্লিপ খেয়ে তাল সামলাতে পারি নি।।আর ওমনেই ড্রিংকগুলো ব্যালেন্স হারিয়ে পরে গিয়েছে,আম সরি বেবি।তুমি কিছু মনে করোনি তো।
'ইটস ওকে আপু,ভুল সবারি হয়।'
-রাইট।লাবণি একটা বিশ্বজয় হাসি দিয়ে চলে গেলো।

"-লাবণি যে ইচ্ছা করে কাজটা করেছে,তা তিশা খুব ভালো করেই বুঝতে পেরেছে।কিন্তু পার্টিতে কোনও সিনক্রিয়েট করতে চায় না তাই চুপ হয়ে আছে।কিন্তু দূরে থাকা দু'টো চোখের মালিক সব দেখেছে।সে আর কেউ না জিসান।জিসান দেখেছে লাবণি ইচ্ছা করে যে কাজটা করেছে।জিসান কিছু বলতে নিলে,তিশা জিসানের বাহু ধরে করুন চোখে ইশারা করে,যাতে জিসান কিছু না বলে।
তিশার চাওনি বুঝে জিসান আর কিছু বলে না,তবে হাত ধরে তিশাকে নিজের রুমে নিয়ে যায় জামাটা পরিষ্কার করতে।"

---কিছুক্ষণ ধরে নিশিকে দু'জন মহিলা খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখছে।নিশির ধারণা এরা বার্থডে পার্টিতে আসেনি,মনে হচ্ছে মেয়ে দেখতে এসেছে।নিশিকে কিসব আজব আজব প্রশ্ন করছে।নাম কি,কোন ক্লাশে পড়ছে,রান্নাবান্না জানেনি,বয়স কতো।শুধু এতোটুকুতে থামেনি,নিশিকে ঘুড়িয়ে ফিরিয়ে চুল দেখছে,নিশির হাইট চেক করছে।আরো কতো আজগুবি জিনিস,যা মেয়ে দেখতে আসলে সচারচর মহিলারা করে।
নিশি ব্যাচারী বুঝতে পারছে না কি করবে।মেহমান বলে কিছু বলতেও পারছে না।আশেপাশে তাকিয়ে বারবার কাউকে খুঁজছে, তাকে এই বিপদ থেকে উদ্ধার করবে কে।

"ঝড়ের গতিতে হঠাৎ কেউ নিশির কাধে হাত দিয়ে নিজের সাথে মিশিয়ে নিলো।নিশি চকিতে সামনে তাকিয়ে দেখে রায়হান।হাসি মুখে মহিলা দু'টোকে সালাম দেয়।তো কেমন আছেন আন্টিরা।
-আমরা তো ভালো কিন্তু তোমাকে যে চিন্তে পারলাম না।
'আমি!আমি হলাম এই রমনীর স্বামী ,যাকে আপনারা এতোক্ষন খেলনা ভেবে নেড়েচেড়ে দেখছিলেন।আমি তো সেই খেলনা,থুক্কু এই মেয়েটির হাসবেন্ড। '
নিশিতো স্ট্যাচু হয়ে দাঁড়িয়ে রায়হানের কথা শুনছে।এই মুহুর্তে কি রিয়েক্ট করা যায় তা নিয়ে সংশয়ে ভুগছে।কারণ এমন সিচুয়েশনে নিশি কখনো পরেনি।মুখ এক হাত হা করে রায়হানের দিকে তাকিয়ে আছে।কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় হলো, নিশির পেটের মধ্যে কেমন যেনো শুড়শুড়ি করছে।এমন অদ্ভুত ফিলিংস লাগছে যা হয়তো ভাষায় প্রকাশ করা যাবে না। 
-ও আচ্ছা, এই মেয়ে তুমি বিবাহিত। আগে বলোনি কেনো।শুধু শুধু আমাদের সময় নষ্ট করেছো।মহিলা দুটো চলে যেতে নিলে,রায়হান পিছন দিয়ে বলে উঠে,আন্টি নেক্সট টাইম খেলনা দেখতে বাজারে যাবেন।

||
||

"বার্থডে পার্টি শেষ হয়েছে অনেক্ষন হলো।সবাই যে যার বাসায় চলে গেলো।রায়হান, জিসান ও ওদের কিছু ফ্রেন্ড মিলে ছাদে নিজেদের একটা ব্যাচেলার পার্টি আয়োজন করলো।তিশার বাবা যাওয়ার সময় তিশাকেও নিয়ে যেতে চাইলো।কিন্তু জিসান তানজিলা কে ইশারা করলে,তানজিলা তিশাকে আটকে ফেলে।তিশার বাবার কাছে রিকোয়েস্ট করে তিশা আজ রাত এখানেই থাক।রায়হান তো আছেই।আর ওদের ব্যাচেলার পার্টি শেষ হতে হতে ভোর।রায়হান না হয় কাল সকালে সাথে করে নিয়ে যাবেনি তিশাকে।
শামসুর রহমান তানজিলার কথা ফেলতে পারলো না,তানজিলা কে নিজের মেয়ের চোখেই দেখে।তাই বলে দিলো কাল সকাল হলেই যেনো তিশাকে পাঠিয়ে দেয়।"

---জিসান উপর থেকে সব দেখছিলো,তিশার বাবা চলে যাওয়ায় মুখে এক চিলতি হাসি ফুটে উঠলো।নিশিও অনেক খুশি, কারণ পরীক্ষার আগে এমন সময় আর পাবে না ওরা।আজ দু'বান্ধবী মিলে অনেক গল্প করবে।হেব্বি মজা হবে তাইনা তিশা।তিশাও অনেক খুশি,আজকাল তিশা নিজেও জিসানের আসেপাশে থাকতে চায়।তানজিলা ও নিশির সাথে কথা বলতে বলতে হঠাৎ উপরে চোখ যায় তিশার।
'জিসান প্যান্টের পকেটে হাত দিয়ে দাঁড়িয়ে এক ধ্যানে তাকিয়ে আছে তিশার দিকে।কিছুক্ষণের জন্য তিশার মনে হলো,জিসান চোখের পলক ফেলতে ভুলে গেছে।কেমন ঘোর লাগা চোখে তাকিয়ে আছে।দূর থেকেই মনে হয় তিশাকে জ্বালিয়ে দেবে।'

"-ছাদে পাটি বিছিয়ে কেউ বসে আছে,কেউ কেউ আধো শোয়া হয়ে মোবাইল টিপছে।জিসান হাতের উপর মাথা রেখে শুয়ে উপরের দিকে তাকিয়ে আকাশ দেখছে।রায়হান নিজের ফোনে ব্যস্ত। ব্যাকগ্রাউন্ড এ গান বাজছে.....

"বড় লোকের বেটি লো লম্বা লম্বা চুল, এমন মাথায় বেঁদে দেবো লাল গেন্দা ফুল ।
বড় লোকের বেটি লো লম্বা লম্বা চুল, এমন মাথায় বেঁদে দেবো লাল গেন্দা ফুল ।
এমন মাথায় বেঁদে দেবো লাল গেন্দা ফুল।"

___রনি-আরে ইয়ার কি গান,শুনলে মনের মধ্যে কেমন প্রেম প্রেম জাগে।এতো প্রেম রাখি কই বলতো।

-তোরতো সব কিছুতেই প্রেম জাগে এটা আবার নতুন কি।প্রেমে তো তুই পিএইচডি করেছিস,আর বাকি কি আছে(জিসান)।

-লাভ কি এতো পিএইচডি করে, একটাকেও ধরে রাখতে পারলো না।শালা তুই মেয়েদের ডাম্প করিস,নাকি মেয়েরা তোকে বলতো।(সোয়েল)।

-সত্যি করে বলতো ক্লান্ত হোসনা তুই।(রায়হান)। 

-আরে ভাই আমি কি করবো,আমি যাকে পছন্দ করি,কিছুদিন পর তারা আমাকে পছন্দ করেনা।আর আমাকে যারা পছন্দ কর কিছুদিন পর তাদের ন্যাকামো ভালো লাগে না আমার।

-লাস্ট টাকে কেনো ছাড়লি,মেয়েটাতো ভালোই ছিলো।(জিসান)

"আরে দূর,কি যে বলিস,এক নাম্বারের মিনমিনা শয়তান।আমাকে বলে কি, আমি নাকি কিস করতে পারিনা।চিন্তা করছিস এখন নাকি এই মাইয়া আমাকে কিস করা সেখাবে।আরে আমার কিস এর রেকর্ড শুনলে যে কেউ নির্ঘাত ষ্টোক করবে।আর আমাকে বলে আমি নাকি কিস করতে জানি না।"

--জিসান শোয়া থেকে উঠে বসলো,কাহিনী কি খুলে বলতো।রনির এক্স গার্ল ফ্রেন্ডের কাহিনী গুলো খুব ইন্টেরেসটিং হয়,তাই সবাই মনোযোগী এবার রনি কি ঘাপলা করেছে।

"-অন্নাদের বাসায় সেদিন কেউ ছিলো না ইয়ার।ফোন পেয়ে আমিও চলে গেলাম।আমার মনেতো লাড্ডু ফুটতে লাগলো।কিন্তু মাইয়া বহুত ফাজিল,আমারে স্বপ্ন দেখাইয়া বলে,জানু চলো আমরা ছবি দেখি বসে বসে আর কি করবো বলো।

---কি আর করার, আমি আর আমার গার্লফ্রেন্ড অন্না ইমরান হাসমির ছবি দেখছিলাম।ইয়ার ইমরান হাসমিকে তো চিনিস,শালা আমারো বাপ।ওর ছবি দেখে আমার শরীরের ইমোশন জেগে গেলো।অন্নারো মনে হয় কিছু একটা হয়েছে।দু'জনে কিছুক্ষণের জন্য হারিয়ে গেলাম।মানে জাস্ট শুধু লিপ কিস ইয়ার তোরা আবার অন্যকিছু ভাবিস না।কিন্তু মাইয়াতো আমারে ৪২০ ভোল্টেজ ঝটকা দিলো।

'-এটা কি তোমার ফাস্ট কিস,জানু।
-নাতো কেনো সোনা।
তাহলো কিস করতে পারো না কেনো।
-কি বলছো,কিস করতে পারবো না কেনো।এইতো একটু আগে তোমাকে কি সুন্দর করে করলাম,গাল দুটো টেনে।
আরে ছুবে না আমায়,এটাকে কি কিস বলে।এতো কম সময়। কিস করতে কমপক্ষে ২০ থেকে ৩০ মিনিট রাখবে।
-কিসব বলো।এতোক্ষন তো বাসর করতেও লাগবে না।কিস করতে বলছো নাকি  কিস নিয়ে গবেষণা করতে বলছো।
একদম বাজে কথা বলবে না,আমি গল্পে পড়েছি নায়ক নায়িকাকে কিস করে ২০মিনিট ৩০ মিনিট পরে ছাড়ে।তারা কতোটা ভালোবাসে একে অপরকে, তুমি আমাকে একটুও ভালোবাসো না।এ্যা এ্যা করে কেঁদে দিলো অন্না।

-এই মাইয়ার কথা শুনে বিশ্বাস কর দোস্ত আমার মাথা ঘুড়াইয়া গিয়েছিলো।আমিতো মাথায় হাত দিয়ে বসেছিলাম কতোক্ষন,অনেক বুঝালাম। কিন্তু ঘ্যানোর ঘ্যানোর কমছেই না।বুঝতে পারলাম একে দিয়ে আমার চলবে না।বেকুব মাইয়া।

____জিসান সহ উপস্থিত সবাই অট্টহাসিতে ফেটে উঠলো।ছাদে সবার হাসির শব্দে নিশি ও তিশা লুকিয়ে দেখতে আসলো ম্যাটার কি।এদের হাসার কারণ যেনে,তিশাতো দৌঁড়।আর নিশিও তিশার পিছে পিছে চলে যায়। কারন কেউ দেখলে তাদেরি লজ্জায় পড়তে হবে।

'রনিতো ব্যাচারা সবার হাসি দেখে রাগে ফুসফুস করছে।থামবি তোরা।'

--সিরিয়াসলি তুই ওই কিসের কারণে ব্রেক আপ করেছিস।(সোয়েল)।

'ভাই ব্যাপারটা শুধু কিসের না।মেয়েটা বড়ই অবুঝ।ফেসবুকে সারাক্ষন গল্প নিয়ে পরে থাকে।আর ঐসব গল্পে কিসব আজগুবি কথা লিখা থাকে,আমি একদিন পরে মাথা খারাপ হয়ে গিয়েছে।নায়ক নায়িকাকে কিস করে ২০মিনিট,এমনকি আধো ঘন্টাও পার করে ফেলে, সিরিয়াসলি!কিস করতে এতো টাইম নিলে ভাই এরা বাকি কাজ কখন করে বলতো।কেউ কেউ তো লিখে বাসর নাকি সারা রাতভর চলে,আরে ভাই আমার কথা হচ্ছে এতো এনার্জি পায় কই।এমন হলেতো বাসর রাতের পরের দিনই বউ পালাবে ভয়ে।'

___সবাই আবার অট্টহাসিতে ফেটে উঠলো।এবার রনির রাগ হলো না,তবে বন্ধুদের এমন কান্ডে একটু নিরাশ হলো।লিসেন গাইস্, এটা হাসার ব্যাপার না খুবই সিরিয়াস ব্যাপার।বিয়ের আগেই সব ক্লিয়ার করে ফেলা উচিৎ। তা না হলে বউ বলবে নতুন জামাই কিছুই পারে না টাইটেল দিয়ে দেবে।

'-জিসান রনির কাধে হাত রেখে,দোস্ত কিস একটা অনুভূতি, আর সেখানে লিপ কিস তো খুব বিশেষ মানুষকে করতে হয়।তুই যেভাবে হাটেঘাটে কিস করে বেড়াস,এটাতো হওয়ারি কথা।এখন থেকে নিজের বিশেষ মানুষটির জন্য বাঁচিয়ে রাখিস।তাহলে আর এমন সিচুয়েশনে পরতে হবে না।
আর বললি না,গল্পের কথা এটা তো জাস্ট পাঠকদের ইমপ্রেস করার জন্য,বলা হয়।এটাকে সিরিয়াস নেওয়ার কিছুই নেই।'

___রায়হান-ঠিক বলছে জিসান।গল্প মানেই গল্প।গল্পে এমন হাজারো কথা লিখা হয় পাঠকদের আকর্ষণ করার জন্য।কিছু অবুজ গল্পকে অনেকটা সিরিয়াস নিয়ে নেয়।তোর এক্সগার্ল ফ্রেন্ডও এমন, মেয়েটা বুঝার দোষ। আর কিছু না।তুই ঠিকমতো বুঝিয়ে বলতি।অবশ্যই বুঝতো।

||
||

"এভাবে বন্ধুরা কথা বলতে বলতে কখন যে অনেক রাত হয়ে গিয়েছে কেউ টের পায়নি। রায়হান বাদে বাকি সবাই চলে গেলো,রায়হান ও জিসান থেকে বিদায় নিয়ে।
রায়হানকে গেস্ট রুম দেখিয়ে জিসান নিজের রুমে চলে গেলো।কথা ছিলো তিশা এই বাসায় থাকলে নিজেদের রুমেই থাকবে।কিন্তু মেয়েটা আজও নিশির রুমে ঘুমিয়ে পরেছে।জিসান রুমে গিয়ে তিশাকে পেলো না।"

---গভীর ঘুমে তিশা,তাই হয়তো টেরও পায়নি জিসান যে কখন ওকে কোলে করে নিজের রুমে নিয়ে গিয়ে শুইয়ে দিলো।কালো কালারের টি শার্ট আর প্লাজোতে আজ জিসানের চোখে তিশাকে অন্য রকম সুন্দর লাগছে।তিশা নড়াচড়া করে উঠলে,টি শার্টটি সরে গিয়ে সাদা পেটটা বের হয়ে যায়।
জিসান তিশাকে ভালোবাসে সত্যেও কখনো খারাপ নযরে দেখেনি।নিজের ভালোবাসা আর চায়িদা কে একটা লিমিটের মধ্যে রেখেছে।কখনো সেই লিমিট ক্রস করেনি।নিজেকে যথাসাধ্য কনট্রোল করার ক্ষমতা আছে,কিন্তু আজ কি হচ্ছে।এসি রুমেও জিসান ঘামছে।কেমন ঘোরের মধ্যে চলে যাচ্ছে। তিশার সাদা পেটটা ভীষন ভাবে আকর্ষণ করছে জিসানকে।না চাইতেও চোখ বার বার আটকে যাচ্ছে  নাভীর সাথের তিলটার দিকে।

'কখন যে জিসান তিশার অনেকটা কাছে চলে গেছে নিজেও জানে না।বুড়ো আঙ্গুল দিয়ে পেটের তিলটা একটু ছুঁয়ে দিলো।ঘুমের ঘোরে কারো স্পর্শ পেয়ে তিশা আবার একটু নড়ে উঠলে,শার্টটি আরো একটু সরে যায়।জিসানের ধৈর্যের বাদ যেনো আজ ভেঙ্গে যাবে।মনের মাঝে বিশাল ঝড় ভয়ে যাচ্ছে।কখন কিভাবে জিসান নিজেও জানে না জিসানের ঠোঁট দু'টো তিশার সাদা পেটটা ছুঁয়ে দিলো।'

---অবশেষে মন আর ব্রেনের মধ্যে ব্রেনের জয় করে নিলো।জিসান বালকানিতে দাঁড়িয়ে সিগেরেটের ধোঁয়া ছাড়ছে।নিজেকে যথাসাধ্য শান্ত করার চেস্টা শুধু।আমি আমাদের বিশেষ রাতটা এভাবে করতে চাইনা জান।এতো বছরের অপেক্ষা আমার, তিল তিল করে গড়ে তোলা আমার রাজপ্রসাদের রানী তুই।
আমাদের বিশেষ রাত হবে অনেক বিশেষ ভাবে। ঘুমন্ত তিশার মুখের দিকে তাকিয়ে, এই রানীর মনের কথা জানে রাজা তবুও মুখে শোনার প্রতিক্ষা।তোকে বলতে হবে জান,মুখে একবার।আমি শুনতে চাই তোর মুখ থেকে ম্যাজিক্যাল তিনটি ওয়ার্ড(I love u)...

কিছুক্ষণ পর হাতের সিগেরেট টা ফেলে দিয়ে,রুমে প্রবেশ করে এসির পাওয়াটা বাড়িয়ে তিশাকে নিয়ে কম্বলে ডুকে পড়লো।
এসির হিম শীতল বাতাসে তিশার ঠান্ডা লাগলে,তিশা জিসানের সাথে আরো লেপ্টে যায়।জিসানও তিশাকে নিজের বাহুডোরে জড়িয়ে কপালে একটা আদর দিয়ে দিলো।কিছুক্ষণের মধ্যেই রাজ্যের ঘুম জিসানের চোখে ভার করলো।

---নিশির ঘুম আজ তারাতারি ভেঙ্গে গেলো।তিশাকে পাশে না পেয়ে বুঝতে বাকি রইলো না,বান্ধবীকে কে কিডন্যাপ করেছে।সবাই সবার মতো খুশি,শুধু আমার গাধাটাই কিছু বুঝে না।এটাকে পটাতে পটাতে আমিই মনে হয় বুড়ি হয়ে যাবো।আর তখন সন্যাসীদের মতো গান গেয়ে বেড়াবো....।

""বুড়ি হইলাম তোর কারনে।
পরানের বান্ধবরে,
বুড়ি হইলাম তোর কারনে।""

"নিশি ফ্রেস হয়ে ছাদের দিকে যেতে নিলে,গেস্ট রুমের দিকে নযর পরে।রায়হান ভাইতো থাকার কথা।দেখিতো ফাজিলটা আছে নি।
রুমের দরজা খুলে,আস্তে করে ভেতরে ডুকে।দিনের আলোয়ও ঘর অন্ধকারাচ্ছন্ন।বিছায়নায় কেউ উপুৎ হয়ে শুয়ে আছে।ব্যক্তিটাকে দেখার জন্য একটু সামনে গেলো।এখনো চেহারা দেখা যাচ্ছে না।তাই একটু ঝুকে দেখার চেস্টা করলো।
হঠাৎ ঝড়ের গতিতে কেউ ওকে বিছায়নায় ফেলে কম্বলের মধ্যে নিয়ে খুব শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো।এতো দ্রুতো ঘটনাটা ঘটলো যে নিশি কিছুই বুঝে উঠতে পারলো না।ওর ধ্যান ভাঙ্গলো কারো গভীর নিশ্বাস এসে নিশির ঘাড়ে বারি যখন খেলো।নিশি মাথাটা উঁচু করে বুঝার চেস্টা করে ব্যক্তিটাকে।তাকিয়ে দেখে রায়হান।নিশি যা ভেবেছে।"

---নিশি কিছুটা বরফ হয়ে গেলো,কিছুক্ষণের জন্য।কারন রায়হানের এতো কাছাকাছি কখনো নিশির আসা হয়নি।রায়হান কেনো,আজ পর্যন্ত নিশি অন্য কোনও ছেলের পাশেও বসেনি।আজতো রায়হান ওর একদম কাছে।
বুকের ভেতরের ছোট হার্টটা দ্রুতগতিতে চলছে।শরীরে কেমন কারেন্ট লাগছে বার বার।কাপাকাপা হাতে রায়হানকে সরানোর চেস্টা করছে।নিশির নড়াচড়াতে রায়হান আরো শক্ত করে ধরে ঘাড়ে মুখ ডুবালো।

'উফফ,সুইটার্ট এতো নড়ছো কেনো।এমনেই তোমাকে কাছে পাইনা।বার বার পালিয়ে যাও।এখনতো একটু আদর করতে পারো। রায়হান নিশির ঘাড়ে ঠোঁট ছোঁয়ালো।
নিশির গলা শুকিয়ে গেলো,রায়হানের ঠোঁটের স্পর্শে।হঠাৎ মনে পড়লো,রায়হান ঘুমে কাউকে স্মরণ করছে।কিন্তু কাকে?'

---ওই কোন শাঁকচুন্নিকে স্মরণ করে ঘুমের মধ্যেই লুতুপুতু শুরু করেছে ।তোরে তো আমি.....নিশি খুব জোরেই রায়হান কে ধাক্কা দিলো।নিশির ধাক্কাধাক্কি তে রায়হান হালকা চোখ খুলে দেখে নিশি ওর পাশে।লাফ দিয়ে উঠে যায়।
'এই তুই এখানে কি করিস।'
-আমি যা খুশি তা করি।আগে বলেন ঘুমের ঘোরে কাকে এতো আদর করে ডাকছেন।কে সে?নিশি রাগে কটমটিয়ে।
-রায়হান মাথাটা চুলকিয়ে কারো নাম নিয়েছি আমি।

'হুমমম.....।'

-ক ককার?

'সুইটহার্ট।'

____রায়হান বিছানায় বসে যাক বেঁচে গেলাম এই যাত্রায়।
'বেঁচে গেলেন মানে।রায়হানের একদম কাছে এসে কে এই সুইটহার্ট।'

-রায়হান ভ্রুকুচকে তোকে বলবো কেনো।যা এখান থেকে।এতো সকালে তোকে আমার ঘরে দেখলে কি মনে করবে সবাই।আমার সম্মানের ফালুদা হয়ে যাবে।

'ফালুদার গুষ্ঠিরে কিলাই।আমিতো একবার পেয়েনি এই সুইটহার্ট কে তারপর বুঝাবো নি।'

-কি করবি পেলে,ভ্রুকুচকিয়ে।

___কি করব!কেটে টুকরোটুকরো করে,মরিচ লবন মেখে,রোদে শুকিয়ে কাকদের খেতে দেবো।এটা বলেই
নিশি হনহন করে চলে গেলো।

"রায়হান হাফ ছেড়ে বাঁচলো।উফফ কি সাংগীতিক মেয়েরে।রায়হান,একটুর জন্য বেঁচে গেলি।এই মেয়ে যদি জানতে পারে তোর মনের কথা,তকে আঙ্গুলে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে নাচাবে।সরি সুইটহার্ট এখনো সময় হয়নি বলার,সময় হলে আমিই বলে দেবো।
একটুতো অপেক্ষা করতে হবে তোকে।এই প্রেমটেম আমাকে দিয়ে হবে না।আমিতো তকে একেবারে বউ করে ঘরে তুলবো।তখন দেখবোনি এতো রাগ কোথা থেকে পাস।"

||
||

"দেখতে দেখতে অনেক দিন চলে গেলো,নিশি ও তিশার ফাইনাল পরীক্ষাও শেষ হয়ে গেলো।পরীক্ষার কারণে তিশা অনেক ব্যস্ত ছিলো।জিসানও এর মাঝে জ্বালায়নি।প্রতিদিন রাতে কিছুক্ষণ কথা হতো ওদের।এর পর আর সারা দিন কোনও কথা হতো না।জিসান ইচ্ছা করেই ফোন দিতো না।জিসান চায়না তিশা এখন অন্যকিছু নিয়ে ভাবুক।ভালো মতো সব পরীক্ষা গুলো শেষ হলো।এখন শুধু রেজাল্ট এর আসা"

___ঈদানিং রায়হান রুহি মেয়েটাকে নিয়ে বিশাল ঝামেলায় পরেছে।কথা নাই, বার্তি নাই হুটহাট রায়হানের সামনে চলে আসে।
রায়হান যতোই এভোয়েড করার চেস্টা করে,মেয়েটা ওতোই গায়ে পরে।আজতো লিমিটই ক্রস করে ফেলেছে।রাস্তায় দাঁড়িয়ে গোলাপফুল দিয়ে রায়হান কে প্রপোজ করেছে।ভাগ্যিস রাস্তায় তেমন লোকজন ছিলো না।
রায়হান ইচ্ছামত অনেকগুলো কথা শুনিয়ে দিয়েছে।রায়হানের অপমানে রুহির চোখে অশ্রু ছিলো না।ছিলো অন্যকিছু যা রায়হান দেখতে পায়নি।দেখলে বুঝতে পারতো কতো দ্রুতো একটা ঝড় আসছে তাদের দিকে।

'অনেকদিন পর তিশা নিলুর বাসায় এলো।দুবান্ধবী বিছানায় শুয়ে সিলিং ফ্যানটার দিকে তাকিয়ে আছে।
-নিলু আবির ভাইয়া কিছু বলেছে।
'নিলু নিরবতা পালন করছে।'
-কি হলো বল।
'তুই কেনো বলতে গেলি আবির ভাইকে তিশা।জানিস আজকাল তার সামনে জেতেও লজ্জা করে।'

-আরে আমার লজ্জাবতী, আগে বল।সে কি বলছে।
'আবির ভাইয়ের বাবা মা আসবে কিছুদিন পর আমাদের এংগেজমেন্ট আর বিয়ের ডেট ঠিক করতে।সে নাকি সোজা বিয়ে করবে,প্রেমটেম করে কোন রিস্ক নিতে নারায।'
-তাইনি এটা তো অনেক খুশির কথা।আর ফকিন্নি তুই আমাকে এতো ইন্টেরেসটিং খবর খালি মুখে শুনালি।আমার কিন্তু ডাবল ট্রিট চাই,তোর তরফ থেকে এবং আবির জিজুর তারফ থেকেও।
দু'বান্ধবী হেসে পুরো ঘর কাঁপিয়ে দিলো।এভাবে তিশা বেশ কিছুক্ষণ থেকে বাড়ীতে চলে আসলো।

___এভাবে বেশ কিছুদিন কেটে গেলো।এর পর নিশি ও তিশার ভার্সিটির এডমিশন টেস্টের জন্য কোচিং শুরু হয়ে গেলো।দু'জনেই সমান তালে পড়াশোনা শুরু করে দিলো,ভালো একটা কলেজে চান্স পাওয়ার লক্ষে।দিনগুলো ভালোই কাটছিলো তিশার।
এরি মাঝে তিশার দাদী অসুস্থ হয়ে পড়লো।তাই ওর বাবাকে আর্জেন্ট গ্রামের বাড়ী যেতে হলো।তিশার মাও যেতে চাইলে তিশার বাবা মানা করে।কারণ তিশা একলা হয়ে পড়বে,তখন আবার জিসান তিশাকে নিজের বাড়ীতে নিয়ে যাবে,যা তার পছন্দ না।

"দু'বন্ধু কাক ভিজা হয়ে আজ বাসায় আসলো।রেনু বেগম  দু'জনকে এভাবে দেখে চিল্লাচিল্লি করতে লাগলো।তোরা কি বড় হবি না।এতো বড় ধামড়া ছেড়া দু'টো এখন বৃষ্টি বিলাস করে আসছে।"

---মা একদম না।আমরা ইচ্ছা করে করিনি।ফ্রেন্ডকে এয়ারপোর্টে ছাড়তে গিয়েছিলাম,কিন্তু জানোই তো এখন বৃষ্টির সিজন।আসার সময় তুমুল বৃষ্টি শুরু হলো।আমরা তো একটু দেখতে গাড়ী থেকে বের হলাম,বৃষ্টির স্বাদ কি আগের মতো আছে নাকি চেন্জ হয়েছে।জিসান হা করে রায়হানের দিকে তাকিয়ে আছে।কারণ রায়হান আবল তাবল বকছে।যা রেনু বেগম খুব ভালো করেই বুঝেছে।

'-হয়েছে এতো নাটক করতে হবে না,তোদের মাংসের হাড়টাকেও আমি চিনি।তাই এই ড্রামা বন্ধ করে তারাতারি চেন্জ কর।'
-তিশা এতোক্ষন ড্রয়িংরুম এ দাঁড়িয়ে ভাই আর জিসানের কান্ড দেখছিলো।
"রায়হান সোজা নিজের রুমে চলে গেলো।আর জিসান তিশার সামনে গিয়ে দাঁড়ালো।"

---তিশা আড় চোখে একবার জিসানের দিকে তাকালো।ভেজা শার্টটা জিসানের বুকে কেমন যত্নে লেপ্টে আছে,ভিজা চুল থেকে এখনো শিশিরের বিন্দুর মতো পানি চুয়ে চুয়ে জিসানের গাল বেয়ে পড়ছে।তিশার এই বিন্দুকনার উপর খুব হিংসা হচ্ছে।জিসানকে এখনো ও একটু ছুয়ে দেখতে পারিনি।অথচ দেখো এরা দিব্বি আমার বরকে কেমন আপন করে নিয়েছে।

'জিসান তিশার চোখের সামনে তুড়ি বাজিয়ে,এই যে ম্যাডাম।কোথায় আপনে।আছেন নাকি বিদেশ গিয়েছেন।'
--তিশা একটু রাগ করে,কি হয়েছে।
'ম্যাডাম ঠান্ডা লাগছে।'
--তাহলে আমি কি করবো,এই খুশিতে।
'জিসান একটু সামনে এসে বাকা হেসে,একটু গরম করে দিবি।'

"তিশা এক পা পিছে দিয়ে,কক কি যা তা ব বলছেন।"

---জিসান নিজের লেপ্টানো চুলগুলো আঙ্গুল দিয়ে গুছাতে ব্যস্ত হয়ে, তুই দেখি অনেক কিছু বুঝিস।খামাখা আমি তোকে ছোট ভাবি।
তিশা তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে জিসানের দিকে তাকিয়ে আছে।

"রোমান্স পরে করিস,আগে রায়হানের রুম থেকে কিছু কাপড়চোপড় এনে দে।আমি তোর রুমে আছি।জিসান যাওয়ার পর তিশাও জিসানের জন্য কাপড় আর তোয়াল নিয়ে রুমে প্রবেশ করে দেখে জিসান খালি গায়ে দাঁড়িয়ে তিশার বুকশেলফ টা দেখছে।জিসানকে এমন ভাবে তিশা কখনো দেখেনি।তিশার শরীরটা বরফের মতো জমে গেলো।কাঁপাকাঁপা পায়ে জিসানের দিকে গিয়ে তোয়ালটা এগিয়ে দিলো।"

---জিসান চেয়ারে বসে শান্ত হয়ে,মুছে দে।
"তিশা এবার পড়লো,মহাবিপদে।এই লোকটিকে এমনে দেখেই আমি জমে যাচ্ছি,এখন বলেকি মুছে দিতে।আমাকে খুন করার প্লানিং করে আসছে মনে হয়।"

"তিশাএএ.....।"

জিসানের মুখে আজ নিজের নামটা শুনেও কেঁপে উঠলো তিশা।এতো আবেগি কন্ঠে জিসান কখনো ডাকেনি তিশাকে।আজ কি হলো।

---তিশা আর কিছু না ভেবে তোয়ালটা নিয়ে কাঁপাকাঁপা হাতে জিসানের মাথাটা মুছতে লাগলো।তিশার হার্টটা এতো জোড়েই ধকধক করছে,মনে হচ্ছে জিসান নির্ঘাত আজ শুনে ফেলবে।
'জিসান বুঝতে পারছে,আজকাল যে ওর বউটা ওর উপর দূর্বল হয়ে পড়ছে।যেমন ও তিশার উপর।'

"তিশার না বলা সব অনুভূতিগুলো সব জিসান বুঝতে পারে।জিসান তো চায়ই এটা তিশা যেনো ওর ভালোবাসার চাদরে জরিয়ে থাকুক।তিশা চাইলেও যাতে এই চাদরটিকে ছুড়ে ফেলতে না পারে।তিশার অবস্থা দেখে,মুচকি হেসে জিসান তিশার কোমড়টা জড়িয়ে ধরে।
সাথে সাথে তিশার শরীরের পশমগুলো কাটার মতো দাঁড়িয়ে যায়।জিসান শুনতে পারে তিশার ঘন নিশ্বাসগুলো।যা প্রতিনিয়ত প্রমাণ দেয় তার বেঁচে থাকার।"
---রেনু বেগমের ডাকে দু'জনেই চমকে যায়।জিসান তিশাকে ছেড়ে দেয়,আর তিশা দু'কদম পিছে চলে যায়।জিসান কাপড়গুলো নেওয়ার বাহানায় তিশার গালে একটা কিস করে দেয়।জিসানের আচমকা এমন করায় তিশা শোকড হয়ে যায়।
সেদিন জিসান ডিনার করে তারপর বাড়ী যায়।

চলবে...

No comments