Update Story
📢 গল্পঃসিনিয়র_খালাত_বোন_যখন_বউ পর্বঃ০৬    📢 গল্পঃসিনিয়র_খালাতো_বোন_যখন_বউ পর্বঃ০৫    

ভাইয়ের_বন্ধ_যখন_বর😍 --------( season 2) [🖤] Part_36🍁



     "  বালুকাময়ের উপর খালি পায়ে হেটে চলছে রুহি আর রায়হান।কিছুক্ষন পর পর তীরে আচড়ে পড়ছে নীল সমুদ্রের ঢেউ।প্রতিটি ঢেউ এর জলরাশি ভাসিয়ে নিয়ে যাচ্ছে তাদের জীবনের না পাওয়া হাজারো আনন্দ,কষ্ট বেদনা গুলো।"
--ইন্দ্রজালিক সৌন্দর্যে ভরপুর আমাদের এই কক্সবাজারের সমুদ্র সৈকত।কোলাহল মুক্ত শান্ত এই সমুদ্র সৈকতে রুহি আর রায়হান ঘুরতে এসেছে।রায়হানের হাত ধরে,কাধে মাথা রেখে সূর্যাস্ত দেখছে।রুহির সব স্বপ্ন যেনো আজ সত্য হলো,তার ভালোবাসার মানুষটিকে এতো কাছে পেয়ে।"

---হঠাৎ রুহি দেখে ওর শ্বাশুরী রেনু বেগম সমুদ্র থেকে এক বালতি পানি এনে ওর শরীরে আচমকা মারলো।
 মুহুর্তেই রুহি ধড়ফড়িয়ে উঠে বসলো।চোখগুলো ভালো করে কোচলে দেখলো ওতো এখনো ওর রুমেই।আর ওর সামনে কোমরে হাত দিয়ে বড় বড় চোখ করে দাঁড়িয়ে আছে ওর শ্বাশুরী।তার মানে ও স্বপ্ন দেখছিলো এতোক্ষন।

"রেনু বেগমকে এভাবে দেখে কিছুটা ভয় পেয়ে গেলো রুহি।বুঝে উঠতে পাড়ছে না শ্বাশুরীর এভাবে তাকিয়ে থাকার কারনটা কি।
পরীক্ষণে বুঝতে পারলো ওতো পুরো কাক ভেজা হয়ে বসে আছে।"

---রেনু বেগমের দিকে তাকিয়ে,আন্টি একি করলেন।
 আমাকে এভাবে পানি মারলেন কেনো।কতো সুন্দর স্বপ্ন দেখছিলাম জানেন।

"ও হো আমার মহারানি। স্বপ্ন থেকে বাস্তবে ফিরার জন্যই তো পানি ঢাললাম।সেই কখন থেকে ডেকে যাচ্ছি।কিন্তু আপনি তো কুম্ভকর্ণের মতো ঘুমাচ্ছেন তো ঘুমাচ্ছেন। 
বলি কি সব ঘুম কি আজই ঘুমিয়ে ফেলবেন।বেলা তো কম হলো না।একটু শরীরটাকে হিলান।ঘরের কাজগুলো করবে কে শুনি।
হায়রে! আমার কপাল,ছেলের বউ থাকতে এই বয়সে আমাকে নাকি ঘরের কাজ করতে হবে।একটু ন্যাকামি করে।"

---রিলেক্স আন্টি,আজ হঠাৎ আপনি এমন কেনো করছেন।আর মাত্রই তো সকাল আটটা বাজে।এতো কিসের তারা।

"মাত্র আটটা বাজে বলছে এই মেয়ে!আরে তোমার স্বামীর হয়তো কোনও কাজ নেই।কিন্তু বাড়ীতে আমরা বুড়ো বুড়ি তো আছি।তাদের দিকে একটু খেয়াল তো রাখো।

 ---রায়হানের কাজ নেই মানে।একটু বিস্মিত হয়ে।

'রিনা বেগম চলে যেতে নিলে,রুহির কথায় আবার থেমে যায়।কেনো তুমি জানো না।'

---কি?

"রায়হানের চাকরী চলে গেছে।"

---রুহি বিছানা থেকে চিৎকার দিয়ে উঠে দাঁড়ায়।কি?আর কেনো?

"কেনো আবার,ওই বাড়ীর মেয়ের সাথে প্রেম করে, বিয়ে করবে আরেক জনকে।তাহলে তারা কি তোমার জামাইরে নিয়ে গিয়ে পূজো করবে।
রেনু বেগম আর এক মুহুর্তও দাঁড়ালো না,চলে গেলো।"

---আর রুহি মাথায় হাত দিয়ে বসে পড়লো।
 রুহি ফ্রেস হয়ে ড্রয়িংরুমে এসে দেখে,রায়হান শোফায় বসে আপেল খাচ্ছে আর টিভি দেখছে।রুহি বুঝতে পারলো ওর শ্বাশুরী মিথ্যা বলে নি।কারন এতোক্ষনে রায়হান অফিসে চলে যাওয়ার কথা।

"রুহি নাস্তা বানানোর জন ফ্রিজ থেকে ডিম বের করতে নিলে,রেনু বেগম এসেই বাধা দেয়।
কি করছো,রুহি?"

 ---কেনো আন্টি ডিম বের করছি অমলেট এর জন্য,নাস্তা করবেন না।আমি আজ আপনাদের সবার জন্য পরোটা,অমলেট,হালুয়া করবো।রায়হান যেহেতু বাসায় আছে আজ ওকে নাস্তা করিয়েই ছাড়বো দেখেন।রুহি অনেকটা খুশি হয়ে।

" রুহি ডিম নিয়ে কিচেনের দিকে যেতে নিলে,রেনু বেগম হাতটা ধরে ফেলে।দাঁড়াও রুহি।"

--আবার কি হলো আন্টি।

"ডিম গুলো রাখো।"

--কেনো আন্টি।

"রেনু বেগম মাত্র দুটো ডিম রুহির হাতে দিয়ে বাকি গুলো ফ্রিজে রেখে দিলো।"

'-দুটো দিয়ে কি হবে,আমরা মানুষতো চারজন।'

 --চারজনের জন্য দুটো ডিমই বেশি বুঝলে।
শুনো এখন পাকের ঘরে গিয়ে দেখো পান্তা ভাত আছে। কাল রাত তো অনেকগুলো ভাত বেঁচে গিয়েছে। আমি বুদ্ধি করে পানি ঢেলে রেখেছি।এখন কাজে দিবে।তুমি ডিম ভাজো,সাথে শুকনো মরিচ পুড়া,আর পেঁয়াজ এক্সট্রা দুটো ছিলে টেবিলে রাখো।আমরা আজ এটা দিয়েই নাস্তা করবো।আর শুনো মেয়ে ডিম দুটো ভেজে সমান চার ভাগে ভাগ করে ফেলবে কেমন।

"আন্টি এসব কি বলছেন।আমরা পান্তা খাবো,কেনো।চিল্লিয়ে।"

                  ---আরে রুহি তুমি ভুলে গিয়েছো,রায়হানের চাকরী চলে গিয়েছে।আর তোমার শ্বাশুরের পেনশনের অর্ধেক টাকা চলে যায় লোন শোধ করতে,যা আমরা তিশার বিয়ের সময় নিয়েছিলাম।
আর এখন হাতে অল্প কিছু টাকা আছে।আর এখনো মাসের অর্ধেক বাকি আছে,ঘরে বাজারোও শেষ।তার উপর এখনো কারেন্ট বিল,গ্যাস বিল,পানির বিল,আরো অনেক কিছুর বিল বাকি আছে।
তাইতো একটু হিসাব করে চলতে হবে।তুমিতো এই বাড়ীর লক্ষী বউ তুমি বুঝবে নাতো কি প্রতিবেশি বুঝবে আমাদের কষ্ট বলো।

 " রুহি রেনু বেগমের দিকে হা করে তাকিয়ে আছে,তবে এটা তো কিছুই না।
রেনু বেগম যখন বললো,কাজের লোকও এখন আর আসবে না,তাই ঘরের সব কাজ এখন থেকে রুহিকেই করতে হবে।
আর রুহির কাজের তালিকায় রেনু বেগম তাকে কাপড় ধোয়া,ঘর মোছা,রান্না করা,থালাবাসন ধোয়া এসব ভাগ করে দিয়েছে।আর বাকি যা আছে রেনু বেগম সামলিয়ে নেবে।"

--কেনো জানি পুরো দুনিয়া ঘুড়ছে,চোখের সামনে সব ঝাপসা দেখছে।রুহি জ্ঞান হারিয়ে নিচে পরে যায় হঠাৎ।

"শব্দ পেয়ে রায়হান পিছনে তাকিয়ে দেখে,রুহি নিচে পরে আছে।ডোন্ট কেয়ার একটা লুক নিয়ে,মাকে বলে।চেক করে দেখোতো মা বেঁচে আছে কিনা মরে গেছে।"

--রেনু বেগমও সত্যি সত্যি রুহির হাতটা ধরে পালস্ চেক করলো বেঁচে আছে কিনা।তার পর সেও চলে গেলো রুহিকে ওখানেই ফেলে।

"শামসুর রহমান শব্দ শুনতে পেয়ে ড্রয়িংরুমে চলে এসেছিলো। আর এসেই মা ছেলের কাহিনী দেখে তব্ধ  হয়ে গেলো।
করছো টা কি তোমরা মা ছেলে মিলে বলোতো।"

---রেনু বেগম স্বামীর কথায় একটু বিরক্ত হয়ে,তোমাকে এসবে নাক গলাতে হবে না,যাও তুমি তোমার কাজে যাও।
শামসুর রহমান ও বুঝলো,এদের বলে লাভ নেই।তাই সে ও ইগনোর করে চলে গেলো।
_________

"আহমেদ ভিলায় সবাই একসাথে বসে সকালের নাস্তা করছিলো,হঠাৎ তৌফিক সাহেব জিসানকে উদ্দেশ্য করে বললো।
তুমি সিলেট কবে যাবে জিসান।"

--জিসান তার বাবার দিকে একটু প্রশ্নবোধক চোখে তাকালো।এরপর নিজেই জিঙ্গেস করলো,সিলেট!আমি কবে বললাম আমি সিলেট যাবো।

"আমি বলিনি তুমি বলেছো,আমিতো জানতে চাইছি।"

---কিন্তু কোনও কারন ছাড়া আমি সিলেটে কেনোই বা যাবো বাবা।

" কারন আছে, তোমার নানা দিলওয়ার চৌধুরী।সে তোমাকে বার বার দেখার ইচ্ছা প্রকাশ করছে।আমার জানা মতে সে এক বছর ধরে বিছানায় পরে আছে।কখন কি হয়ে যায় বলা যায় না।আমি চাই তুমি একটি বার তার সাথে দেখা করে আসো।তাহলে হয়তো শান্তি মতো একটু মরতে পারবে লোকটি।"

---যারা আমার মা বেঁচে থাকতে তার সাথে কোনও সম্পর্ক রাখেনি, তাদের সাথে এখন আমার কি সম্পর্ক।কেনো আমাকে খুঁজছে।
আমি কোথায়ও যেতে পারবো না।আর এ ব্যাপারে আর কিছু শুনতেও চাই না।
জিসান আর কিছু না বলে,উপরে চলে গেলো।তৌফিক সাহেব তিশাকে ইশারা করে জিসানকে বুঝাতে বললো।তিশাও তাই জিসানের পিছনে পিছনে চলে গেলো।

" হাটুর উপর ভর দিয়ে মাথায় হাত দিয়ে বসে আছে জিসান।আবারও মনে পরে গেলো,কিছু বেদনাদায়ক স্মৃতি।মায়ের মুখটা বার বার চোখের সামনে ভেসে আসছে।চোখে কেনো জানি সব কিছু ঝাপসা দেখছে।"

---তিশা এসে কাধে হাত রাখার সাথে সাথে জিসান তিশার কোমড়টা শক্ত করে জড়িয়ে ধরে।নিরবে যে জিসান কাঁদছে,তার উষ্ণ চোখের জলগুলো বলে দিয়েছে তিশাকে।
তিশা একহাত দিয়ে জিসানের মাথাটা ধরে রেখেছে আরেক হাতে দিয়ে জিসানের পিটে হাত বুলিয়ে জিসানকে শান্ত করার চেষ্টা করছে।তিশা খুব ভালো করেই বুঝতে পারলো জিসানের নিজের মায়ের কথা মনে পড়েছে।তাই তিশাও  কিছু বললো না আর।

---তিশা আমি ওখানে গেলে নিজেকে কিভাবে সামলাবো,ওই বাড়ীর প্রতিটি কোনায় কোনায় মায়ের অস্থিত্ব বিরাজ করছে।মায়ের স্মৃতি গুলো আকড়ে ধরতে গিয়ে আমি এর মাঝে আবার নিজেকে হারিয়ে ফেলবো নাতো।
আর ও বাড়ীর লোকগুলো,আমার মায়ের শেষ সময় তারা কেউ ছিলো না।এখন আমাকে ওদের কেনো প্রয়োজন।আমি এদের কাউকে দেখতে চাই না।
               
"তিশা খুব চিন্তায় পরে গিয়েছে,কিভাবে জিসানকে মানাবে।জিসানতো এখন নিজের মাঝেই নেই।কিছুক্ষণ পর তিশা,
শুনেছি আয়শা মা নাকি নানা জানের অনেক আদরে মেয়ে ছিলেন।একটি বার চিন্তা করেন,নানা জানের কতোটা কষ্ট হয়েছে আয়েশা মাকে হারিয়ে।

--বাবা মায়ের রাগের পিছনেও সন্তানের জন্য থাকে গভীর ভালোবাসা।তখন নানাজান তার জায়গায় ঠিক ছিলেন।সে শুধু তার মেয়ের কথাই চিন্তা করে তার উপর রাগ করেছে।কিন্তু নানাজান যদি জানতো এতে আয়েশা মাকে হারাতে হবে চিরদিনের জন্য,তাহলে হয়তো কখনো রাগ করে থাকতেই পারতো না।
হয়তো নানাজানের ভেতরেও পাহাড় সমান কষ্ট জমেছে মায়ের শেষ সময় উনি মায়ের কাছে থাকতে পারেনি বলে।এখন আপনাকে একটি বার নিজ চোখে দেখে নিজের সেই কষ্টটা কমাতে চায়।হয়তো এটাই তার শেষ ইচ্ছা হতে পারে।

'শুনেছি,ওই বাড়ীতে নাকি আপনার মামারাও থাকে,তাদের ঘরে কোনও ছেলে নেই।তবে আপনার আরো তিনটি ছোট বোন আছে।তাদের মাথায় বড় ভাই হয়ে একবার স্নেহের হাতটি রেখে আশ্বাস দেন,তাদেরও একটা ভাই আছে।'

-তিশা জিসানের মুখটা দুহাতের তালুতে নিয়ে,মায়ের কথা চিন্তা করেই একবার দেখা করে আসুন।একবার মায়ের সব স্মৃতিগুলো নিজ চোখে দেখে স্পর্শ করুন।মাকে কাছে না পেলেও মাকে অত্যন্ত অনুভব তো করতে পারবেন ওখানে।

---জিসান খুব মনেযোগ দিয়ে কথাগুলো শুনলো,এর পর ডিসাইড নিলো ও যাবে।তবে একা না।

" তাহলে কবে যাবেন পানতুমাই গ্রামে।"(তিশা)

---পানতুমাই!

"হুম,পানতুমাই। আপনাদের গ্রামের নাম।"

" স্ট্রেঞ্জ! এটা আবার কোথায়।আর কি বিদঘুটে নাম।পানতুমাই!"

 ---আপনি পানতুমাই চিনেন না।পানতুমাই বাংলাদেশের সবচেয়ে সুন্দর গ্রাম।ভারত সীমান্ত মেঘালয়ের কাছে এর অবস্থান।পাহাড় ঘেষা আঁকাবাকা রাস্তা দিয়ে যেতে হয় ওখানে।অনেক সুন্দর গ্রামটি।ওখানে গেলে আসতেই মন চাইবে না।

'-জিসান সন্দেহ দৃষ্টিতে তিশার দিকে তাকিয়ে আছে।তুই জানিস কিভাবে এতো কিছু।'

---বললে রাগ করবেন নাতো।

"না,বল।"

--- আবির ভাইয়া গিয়েছিলো উনার ফ্রেন্ডসদের সাথে মেঘালয় দেখতে।তখন উনি পানতুমাই গ্রামেও গিয়েছিলো।ওখানে উনারা অনেক ছবিও তুলেছে।তখন দেখেছি,আসলেই গ্রামটা অনেক সুন্দর।
___________

"নিশি আয়নার সামনে এসে,নিজের পড়নের টি শার্টটি কোমড়ের দিকে হালকা উঠিয়ে দেখে এখনো কেমন লালচে হয়ে আছে।
সেদিন পার্টি থেকে আসার পর নিশির খেয়ালি ছিলো না এটার কথা।তবে পরের দিন শাওয়ার নেওয়ার সময়,পানি আর সাবানের কারনে জায়গাটা কেমন চিনচিন করে উঠে।আর তখনই নিশি রুমে এসে চেক করে দেখে তিনটি নকের দাগ স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে।"

--নিশির তখনই পার্টির সেই লোকটির কথা মনে পরে।কে সে,তার সাথে আমার কোন জন্মের দুশমনি ছিলো যে আমার কোমড়ে তার নকের দাগ দিয়ে দিলো।আর তার স্পর্শ গুলো সেটাতো আরো সাংঘাতিক ছিলো।কেনো জানি খুব চেনা চেনা লাগছিলো।এটা কি সত্যিই রায়হান ভাই ছিলো।
এরপর তো পুরো পার্টিতে তাকে আর দেখিনি।কোথায় চলে গিয়েছিলো কে জানে।'

---ফোনের শব্দে নিশির ধ্যান ভাঙ্গলো।ফোনের স্কিনে নিলার নামটা ভেসে উঠছে।
নিশি জানে কেনো ফোন করেছে,তাই ফোনটা ধরে কিছুক্ষণ কথা বলে,রেডি হতে চলে গেলো।আজ ভার্সিটি যেতে হবে বলে।

"রুহি জ্ঞান ফিরে দেখে ,ও যেখানে অজ্ঞান হয়ে পড়েছিলো সেখানেই  পরে আছে।কেউ ওকে ধরে আর উঠায় নি।
ঘড়িতে তাকিয়ে দেখে ১০টা বাজে। ও এতোক্ষন ধরে অজ্ঞান হয়ে পড়েছিলো,অথচ রায়হান মানবতার খাতিরেও ওকে একবার ধরলো না।নিজেকে খুব অসহায় লাগছে আজ ওর।"

---রেনু বেগম রুহির সামনে দাঁড়িয়ে,যেখানে সেখানে ঘুমানোর অভ্যাস কবে থেকে হলো তোমার রুহি।আর এভাবে কেউ ঘুমায়।অন্তত একবার বলবে তো।তাহলে জায়গাটা আমি একবার ঝাড়ু দিয়ে দিতাম।

"রুহি কিছুটা অবাক রেনু বেগমের আচরনে, এই মহিলার মাথায় কি কোনও সমস্যা আছে,নাকি গোবর ভরা।কিসব আবল তাবল বকছে।(রুহি মনে মনে)

আন্টি আমি ঘুমাইনি,আমি জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছিলাম।
আর আমার ঘুম ধরলে আমি এই ফ্লোরে কেনো ঘুমাবো,রুমে চলে যেতাম না।
যত্তসব!
রুহি উঠে রুমে চলে গেলো।"

---রেনু বেগমও চলে গেলো ভাবতে ,রুহিকে এরপর কি শিক্ষা দেবে।
___________

" লন্ডনের এক বিলাশবহুল কেবিনের কাচের টেবিলের সামনে বসে আছে একজন অচেনা লোক।আর তারই সামনে দাঁড়িয়ে থাকা লোকটিকে ইশারা করার সাথে সাথে সে বলতে শুরু করে___

স্যার আপনার কথামতো আমরা সব খোঁজ খবর নিচ্ছি।মেয়েটির পুরো নাম তিশা রহমান। কিছু দিন আগে বিজনেস টাইকুন মিস্টার জিসান আহমদ এর সাথে ধুমধামে বিয়ে হয়েছে ।
দেশের অনেক ম্যাগাজিনে তাদের ছবি এবং প্রেম কাহিনীও ছাপা হয়েছে।এই হলো তাদের ম্যাগাজিনের পিক।লোকটা টেবিলের উপর ম্যাগাজিন গুলো রেখে দিলো।"
               ---অচেনা লোকটি তার হাতে রাখা পাথরের পেপার ওয়েটটি ঘুড়াচ্ছে আর বাজের মতো তীক্ষ্ণ নযরে ম্যাগাজিনে ছাপানো তিশার ছবিটির দিকে তাকিয়ে আছে।

চোয়াল দুটো শক্ত হয়ে যায় ,অচেনা লোকটির।তিশার ছবিটাতে আঙ্গুল রেখে,উফঃ তুমিতো দেখি আগের থেকে আরো বেশি সুন্দর হয়ে গিয়েছো ডার্লিং।
কি ভেবে ছিলে আমাকে এতো সহযে সরিয়ে দিতে পারবে তোমার জীবন থেকে।নো ডিয়ার!খেলাতো জাস্ট শুরু।তোমার উপর আমার ইন্টারেস্ট এখনো শেষ হয়নি।আর হবেও না।

"যে কাহিনী তোমাকে দিয়ে শুরু হয়েছে তার শেষও আমি তোমাকে দিয়েই করবো।জাস্ট ওয়েট ডার্লিং।
হা হা হা করে লোকটি বিদঘুট ভাবে হেসে চলছে।আর তার প্রতিধ্বনি গুলো কাচের দেওয়ালে বারি খেয়ে পুনরায় চলে আসছে।

চলবে......।


No comments