Update Story
📢 গল্পঃসিনিয়র_খালাত_বোন_যখন_বউ পর্বঃ০৬    📢 গল্পঃসিনিয়র_খালাতো_বোন_যখন_বউ পর্বঃ০৫    

ভাইয়ের_বন্ধু_যখন_বর😍 ---------(season 2) part_10🍁




"তিশা ঘুমিয়ে আছে,কিছুক্ষন আগেই ডাক্তার কাবেরী এসে তিশাকে চেকআপ করে গিয়েছেন।ডাক্তার কাবেরী জিসানদের ফ্যামিলি ডাক্তার।তিশাকে কিছুটা শান্ত ও রিলেক্স করার জন্য ঘুমের ইনজেকশন দিয়ে দিয়েছেন।ডাক্তার যাওয়ার সময় বলে গিয়েছেন____ তিশার প্রোপার খেয়াল রাখতে।
এখনো তিশা বাচ্চা।বয়সও বা কি ১৩ বা ১৪ হবে,আর এতোটুকু বয়সে এমন ইন্সিডেন্ট তিশার জন্য ক্ষতিকর।তিশাকে যতো দ্রুতো সম্ভব নরমাল করার চেস্টা করতে হবে।তা না হলে ওর ব্রেনে আঘাত আসবে।আর ও  ট্রোমা থেকে ইজিলি বের হতে পারবে না।এটা ওর জন্য মারাত্মক শোকডের বিষয়। "

---জিসান ড্রয়িং রুমে বসে আছে,রাগে এখনো মাথার রগ গুলো ফুলে আছে।কিছুতেই যেনো নিজেকে শান্ত করতে পারছে না।
ওর একটাই কস্ট অর্ককে নিজ হাতে খুন করতে পারলো না।তার আগেই রায়হান ওকে বাঁচিয়ে ফেলেছে।তাই রাগে কটমটিয়ে রায়হানের দিকে তাকিয়ে আছে।এখনতো রায়হান কেও মারতে মন চাইছে।আজ ওর কারনে অর্ক বেঁচে গেছে।

"-তৌফিক সাহেব এতোক্ষন ফোনে ব্যস্ত ছিলেন।ছেলেটাকে নিয়ে তিনি পরেছেন মহা যন্ত্রনায়।কারো কথা শুনে না।রাগের মাথায় একটার পর একটা সিনক্রিয়েট করে আসে,আর তা সামলাতে তৌফিক সাহেবকে ভোগান্তিতে পরতে হয়।
আজ ও তার ব্যতিক্রম না।অর্ক মিনিস্টারের ছেলে,এটা সামলাবে কিভাবে সেটাই এখন সব থেকে বড় কথা।"

---উনি ফোনে কথা বলে শোফায় বসে পরলেন।আর মিসেস রাবেয়া বেগম ছেলের মাথা ঠান্ডা করার চেস্টা করছেন।তা দেখে তৌফিক সাহেবের মন চাইছে,মা ব্যাটা দুজনকেই আফ্রিকা জঙ্গলে পাঠিয়ে দিতে।তাদের দু'জনের জন্য ওটাই সবথেকে শ্রেষ্ঠ জায়গা।মানুষের মধ্যে থাকার যোগ্যতাই নেই এদের।ছেলে আকাম করবে আর মা ছেলের মাথায় পানি ঢেলে মাথা ঠান্ডা করাবে।বাহ!কি ফ্যামিলি আমার।

"-বুঝলাম অর্ক যা করেছে ঠিক করেনি,কিন্তু তাই বলে নিজেও কি ওর মতো ক্রিমিনাল হয়ে যেতে হবে।অর্ককে অন্যভাবেও শাস্তি দেওয়া যেতো।কিন্তু এখন!এখন কি হবে।মা ব্যাটারতো কোন টেনশন নেই।"

---আর এদিক দিয়ে যে আমার পিছে বাঁশ পরেছে তাতে তাদের কি।

"তুমি এটা কিভাবে করতে পারলে জিসান।"(তৌফিক সাহেব আর সহ্য করতে না পেরে জিসানকে জিঙ্গেস করলো)

'তুই কাজটা একদম ভালো করিসনি রায়হান।'(জিসান)

---আমি তোমাকে কিছু জিঙ্গেস করছি।তুমি আমার কথার উত্তর না দিয়ে রায়হানকে কেনো ধমকাচ্ছো।

"তিশা তোর বোন হয়, আর তোর বোনের সাথে ঐ জানোয়ারটা এতো নোংরা কাজ করতে চাইছে,আর তুই ওই *** কে বাঁচালি।ওয়াই....রায়হান।"

---তৌফিক সাহেব ঠাস করে জিসানের গালে একটা থাপ্পর লাগিয়ে দিলো।
বেয়াদব ছেলে____ও তোকে বাঁচাবার জন্য এমন করেছে।আর কি করতে চাইছিস।হাত পা ভেঙ্গে দিয়েছিস।এখনো নাকি জ্ঞান ফিরে নাই।আর জ্ঞান ফিরলেও আর কখনো চলতে পারবে কিনা সন্দেহ।আর তুই এখনো এসব বলছিস।

"এতো কিছু নিজে করে আবার এই ছেলেটা( রায়হান) কেই ধমকাচ্ছিস।আরে ও না থাকলে তুই আরো আগে জেলের ভাত খাইতি।বার বার সব জায়গা থেকে তোকে বাঁচিয়ে আনে।তোকে জেলে ঢুকিয়ে দেওয়াই ভালো।তাহলে হয়তো তোর একটু শিক্ষা হতো।"

---জিসান মাথা নিচু করে এখনো বসে আছে,মনে হচ্ছে কোনও লাভ হয়নি ওকে এই থাপ্পর টা মেরে,উল্টা তৌফিক সাহেবের হাত ব্যথা করছে।

'আংকেল মাথা ঠান্ডা করুন,এখন মাথা গরম করে কিছু হবে না।'(রায়হান)

জিসানের কারো কথা এখন ভালো লাগছে না,তাই উঠে উপরে চলে গেলো।
 
 "বাবা রায়হান ঠিক বলেছে,জিসানকে পরে দেখবো।আগে এটা কিভাবে সামলাবো।অর্কের বাবা দেশে নাই।তাই হয়তো এখনো পরিস্থিতি আমাদের হাতে।কিন্তু কাল উনি দেশে ফিরছেন।এসেই আগে জানতে চাইবে তার ছেলের এ অবস্থার জন্য কে দায়ী।আর তখন তিনি তার সব শক্তি লাগিয়ে দেবে জিসানকে শাস্তি দিতে।তার জানার আগেই আমাদের কিছু করতে হবে।"(তাওহিদ) 

---তাওহিদ তুই তারাতারি ব্যবস্থা কর,তোকে যা বললাম।এই আপদটাকে এখান থেকে বিদায় কর।তা না হলে,আমি সহ্য করতে পারবো না আমার চোখের সামনে থেকে আমার ছেলেকে হেন্ডক্যাপ পড়িয়ে পুলিশ নিয়ে যাবে।এটা আমি সহ্য করতে পারবো না।
তৌফিক সাহেব কেঁদে উঠলেন।যতোই বকাবকি করুক,কিন্তু সব বাবা মাই নিজের সন্তানকে ভালোবাসে। কিন্ত জিসানের এই রাগটাকে খুব ভয় পায় তৌফিক সাহেব।কখন কি করে বসে।

'জিসান তিশার রুমে প্রবেশ করে।তিশা গুটিশুটি দিয়ে বাচ্চাদের মতো ঘুমিয়ে আছে।তানজিলা, নিশি আর তিশার মা মেয়ের পাশে বসে আছে।এতো বড় একটা দূর্ঘটনার পর মেয়েকে কিছুতেই একা ছাড়বে না আর।'

___তানজিলা জিসানকে দেখে ইশারা করে তিশার পাশে বসতে।কিন্তু জিসান মাথা নেড়ে না বলে।তিশা ঘুমিয়ে আছে ঘুমাক।ওকে দেখলেই আমার অর্কের প্রতি রাগটা আরো বাড়বে।তাই জিসান নিজের রুমে চলে গেলো। 

||
||

"জিসান নিজের রুমের বারান্দায় দাঁড়িয়ে খোলা আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে।আর তিশার সাথে ঘটে যাওয়া ঘটনাটা চিন্তা করছে।"

---আজ দুপুরের ঘটনা।জিসান,রায়হান ও ওদের কিছু ফ্রেন্ডসরা মিলে রেস্টুরেন্টে এসেছিলো লাঞ্চ করতে।অনেকদিন পর একসাথে কিছু প্লান করলো।ফ্রেন্ডসদের সাথে আড্ডা ভালোই জমেছিলো।
এমন সময় জিসানের একটা কল আসে।কলটা রিসিভ করতেই জিসানের মুখটা রক্তবর্ণ ধারন করে।রায়হান সহ সবাই বুঝতে পারে এমন কিছু হয়েছে হয়তো যার কারনে জিসান ভীষন রেগে গিয়েছে।

"কিন্তু তবুও জানতে হবে, তাই রায়হান জিসানের কাধে হাত রেখে জিঙ্গেস করলো কি হয়েছে?"

----জিসান ফোনটা রেখে খুব শান্ত কন্ঠে বললো,তিশা কিডন্যাপ হয়েছে।এটা শোনার পর রায়হান বসা থেকে উঠে দাঁড়িয়ে গেলো।ওয়াট!

'হুম,জিসান আবার কাকে জানি ফোন করলো।এবং একটা নাম্বার দিলো।নাম্বরটার লোকেশন জানার জন্য।'

---এদিক দিয়ে রায়হানের মেঝাজ খারাপ হয়ে যাচ্ছে জিসানের এমন নিরব থাকার কারনে।জিসান কে করেছে, আর তুই কার নাম্বার দিয়েছিস।এভাবে শান্ত হয়ে কিভাবে আছিস, আমি চললাম।

'রায়হান যেতে নিলে,জিসান হাতটা ধরে ফেলে।রিলেক্স রায়হান।আগে লোকেশন টা জানতে দে।'

____কে করেছে তুই জানিস।(রায়হান) 

"হুম,অর্ক করেছে।ওর গাড়ীতে তিশাকে দেখেছে শাহিন।শাহিন জিসান ও রায়হানের ফ্রেন্ড।
লোকেশন জানার সাথে সাথে জিসানসহ বাকি সবাই রওনা দিলো।"

                               ----অর্কের আঘাত গুলো তিশা নিতে পারেনি,তাই তিশা আবার অঙ্গান হয়ে যায়।অর্ক কয়েকবার পানির ছিটা দেওয়ার পরও যখন তিশার জ্ঞান ফিরে না,তখন বাধ্য হয়ে চলে যেতে নেয়।যা করবে জ্ঞান ফিরলেই করবে।তা না হলে তিশাকে কস্ট দেওয়ার এতো প্লান সব নস্ট হয়ে যাবে।এসব ভেবে দরজাটা খুললেই,সামনে দাঁড়ানো ব্যক্তিটাকে দেখে না চাইতেও অর্ক ভয় পেয়ে যায়।

"-জিসানের চেহারা রাগে লাল হয়ে আছে, ভেতরে ডুকেই অর্ককে একটা লাথি মারে।অর্ক ছিটকে গিয়ে পড়ে।রায়হান আর ওদের ফ্রেন্ডসরা অর্কের দুই ফ্রেন্ডসদের পিটাচ্ছে। এমন সময় জিসানের ডাকে রায়হান রুমের ভেতরে যায়।"

---জিসান তিশার জ্ঞান ফিরানোর চেস্টা করে,তিশা জিসানের কন্ঠ শুনতে পায়,অল্প চোখ খুলে জিসানকে দেখতে পায়,কিন্তু কোনও কিছু বলার আগে আবার জ্ঞান হারায়।এরপর অনেক ডাকার পরও কোনও লাভ হলো না, তাই রায়হান কে ডাক দেয় তিশাকে নিয়ে যাওয়ার জন্য।

"রায়হান তিশাকে নিয়ে জিসানদের বাসায় আসে।কারন রায়হানের বাবা মাও এখানে।খবর পেয়ে সবাই অপেক্ষা করছে।তিশাকে বাসায় রেখে রায়হান আবার জিসানের কাছে চলে যায়।জিসানের রাগের সম্পর্কে রায়হান খুব ভালো করেই জানে,তাই জিসানকে আটকাতে হবে।"

----রায়হান গিয়ে দেখে অর্ক আর ওর ফ্রেন্ডসদের অবস্থা খুব খারাপ,কিন্তু জিসান তখনো মেরে যাচ্ছে,আরো কিছুক্ষন থাকলে হয়তো মরে যাবে।জিসানদের ফ্রেন্ডসরা জিসানকে ধরার সাহসও পাচ্ছে না।
রায়হান গিয়ে জিসানকে আটকায়।রায়হান জিসানকে বাসায় নিয়ে আসে।আর ওদের ফ্রেন্ডসদের বলে অর্ক আর ওর সাথীদের কোনও হসপিটালের সামনে ফেলে আসতে।কারন ওদের কিছু হলে কারো জন্যই ভালো হবে না।

||
||

"সকাল সকাল তিশার ঘুম ভেঙ্গে গেলো।ঘুম থেকে উঠে তিশা রুমটা দেখে চিনতে পারে না,তাই চারদিকে চোখ বুলায়।রুমটা চিনতে না পারলেও আশেপাশে লোকগুলোকে তিশা খুব ভালো করেই  চিনে।"

---তিশার মা তিশার পাশে ঘুমিয়ে আছ।বাবা সোফায় আর রায়হান বারান্দার ইজি চেয়ারটায় বসে ঘুমিয়ে আছে।সবাইকে খুব ক্লান্ত লাগছে।কালকের ঘটনায় তারাও খুব টেনসড ছিলো।তাদের জন্য হলেও নিজেকে স্বাভাবিক রাখতে হবে।তা না হলে আমার সাথে সাথে সবার কস্ট বাড়বে।তিশা মনে মনে নিজেকে শক্ত করে নিলো।

__তিশা অনেক কিছু চিন্তা করে,মাকে ডাকদিলো।মা... মা।
"তিশার কন্ঠ শুনে তিশার মা ধড়ফড়িয়ে উঠলো।তিশার মুখে হাত দিয়ে, কি হয়েছে তিশা,তুই ঠিক আছিসতো।কিছু লাগবে,পানি খাবি।বল কি লাগবে।শরীর খারাপ লাগছে নাতো।কিছুতো বল মা।চুপ কেনো।"

'মা আমি ঠিক আছি।দেখো তুমি!আমি একদম ঠিক আছি।তুমি আগে বলো আমরা কোথায়।'

---আমরা জিসানদের বাসায়।কাল ডাক্তার তোকে ঘুমের ইনজেকশন  দিয়েছিলো,তুই সারারাত ঘুমিয়ে ছিলি।তাই আমরাও এখানে রয়ে গেলাম।তোর বাবা আর ভাইকে কতো করে বললাম,বাসায় চলে যেতে।কিন্তু না,তোকে ছারা যাবেই না।
তিশাদের কথার শব্দে তিশার বাবা ও রায়হানের ঘুম ভেঙ্গে যায়।তারা সবাই মিলে কিছুক্ষন গল্প করে।রায়হান খুশি,তিশাকে স্বাভাবিক দেখে।কালকের ঘটনা তুলে তিশাকে আর কস্ট দিতে চায়না।
কিছুক্ষন পর তিশা মাকে বললো,মা আমার না খুব ক্ষুধা  পেয়েছে।

"তিশা ডাইনিং টেবিলে বসে আছে,আর সবাই তিশার দিকে তাকিয়ে আছে।তিশাকে এতোটা স্বাভাবিক দেখে সবাই খুশি,কিন্তু "তবুও"রয়ে যায়।

__তিশা সবার দিকে তাকিয়ে,কি হয়েছে।সবাই আমার দিকে এভাবে কেনো তাকিয়ে আছো।যেনো ভূত দেখছো।সব ঠিক আছে তো।"

'তখনি জিসান সিঁড়ি দিয়ে নামতে নামতে বললো,সব ঠিকই আছে।কিছু হলেতো এতোক্ষনে মিস্টি বিলিয়ে ফেলতো।এতো তারাতারি কিছু হবার সম্ভাবনা ও নেই।

---জিসানের কথায় তাওহিদ  জিসানের দিকে তাকালো।কখন কি বলতে হয়,একটু ভেবেতো বল।(তাওহিদ।)

"এতো ভাবার সময় নেই আমার কাছে,আর ও কি কোন দেশের পেসিডেন্ট,যে আমাকে অনেক ভেবেচিন্তে কথা বলতে হবে।আর তুই এখনো চেয়ে আছিস কেনো।খাবার কি মুখে তুলে দিতে হবে এখন।"

---তিশা ওর বাবা মা আর ভাইয়ের দিকে তাকালো,কেউ কিছু বলছে না,সবাই শুনেও না শুনার ভ্যান করে খেয়ে যাচ্ছে।কারন সবাই জানে জিসান এমনি।তাদের সবার অভ্যাস হয়ে গিয়েছে এখন।তাই তিশাও আর কথা না বাড়িয়ে খাওয়া আরম্ভ করলো।

'আর জিসান খাওয়ার ফাঁকেফাঁকে তিশাকে দেখছে।জিসান ইচ্ছা করেই এসব বলছে,কারন জিসান জানে তিশার আসেপাসে সবাই স্বাভাবিক থাকলে তিশাও কালকের ঘটনা তারাতারি ভুলে যাবে।'

                          "বিকেলে তিশা নিশির সাথে বসে গল্প করছে,আর গল্পের ফাঁকেফাঁকে নিশির কাছে কাল কি কি হয়েছে তা জানার চেস্টা করছে।নিশিও বরবর করে সব বলে যাচ্ছে।এমন সময় নিচের ড্রয়িংরুম থেকে চিল্লাচিল্লির শব্দ পেলো।তিশা ভাবছে আবার কি হলো।"

----ড্রয়িংরুমে জিসান বসে আছে,আর তার অপসাইডে তৌফিক সাহেব।তাদের মাঝখানের টি টেবিলে জিসানের প্যারিস যাবার টিকেট পড়ে আছে।বাবা ছেলের মধ্যে তুমুল ঝড় বয়ে গেলো।এখন তারা দুজনেই চুপ।

"সিচুয়েশন বুঝে তৌফিক সাহেব জিসানকে প্যারিসে পাঠানোর চিন্তা করছে।এতে শুধু জিসান না,রায়হান তিশা ওদের জন্যও ভালো হবে।জিসান এখানে থাকলে সিচুয়েশন আরো খারাপ হবে।না চাওয়া সত্যেও ওর সাথে রায়হান ও তিশার জীবনটাও হেল হয়ে যাবে।রায়হান তো বড়,সব সামলিয়ে ফেলবে।কিন্তু তিশা ওতো একটা বাচ্চা মেয়ে,এসব কিছু সামলানোর বয়স হয়নি ওর।
তাছাড়া তিশার থেকে আপাতোত জিসানকে দূরে রাখাই ভালো।কারন জিসান দিনদিন তিশার প্রতি পজেসিভ হয়ে পড়ছে,যা ভবিষ্যৎ এ না জিসানের জন্য ভালো হবে না তিশার জন্য।"

---কিন্তু জিসান তো জিসানই।তার এক কথা সে যাবে না।সে কিছুতেই যাবে না।ঝড় আসুক, তুফান আসুক, বন্যা হোক তবুও সে বাংলাদেশ ছেড়ে এতো দূর কিছুতেই যাবে না।জিসানের এই না যাওয়ার কারনটা খুব ভালো করেই জানে সবাই,তবুও জিসানকে বুঝাবার বৃথা চেস্টা করছে।
তৌফিক সাহেব সহ্য করতে না পেরে অবশেষে জিসানকে তিশার কসম দিলো,যদি ওর ভালো চাও তাহলে আজই দেশ ছেড়ে চলে যাও।

"বাবার মুখে এসব কথা শুনে জিসান কিছুক্ষন চেয়ে রইলো।এর পর হাটা ধরলো,উপরে।তিশা ও নিশি কিছু বিষয় নিয়ে হাসাহাসি করছিলো।এমন সময় জিসান এসে তিশার হাতটা ধরে নিচে নিয়ে গেলো সবার সামনে।
ঘটনা এতোই দ্রুতো ঘটলো যে তিশা কিছুই ভাবতে পারছে না।"

---জিসান নিজের বাবার দিকে তাকিয়ে,তুমি চাওতো আমি চলে যাই,ওকে চলে যাবো।কিন্তু আমার একটা শর্ত মানতে হবে।

______কি?(তৌফিক সাহেব)

'আমি তিশাকে বিয়ে করবো,আজই, এখনি।বিয়ের কথা শুনে তিশার পা দু'টো মনে হয় অবশ হয়ে গেলো।কেমন অসহায় দৃষ্টিতে সবার দিকে তাকিয়ে আছে। কেউ কিছু বলছে না কেনো।'

"-আমার মেয়েটা ছোট জিসান,এভাবে তোমার সাথে কিভাবে বিয়ে দিবো।একবার ভাবো।তুমি আগে প্যারিস যাও।তুমি আসতে আসতে তিশাও কিছুটা বড় হয়ে যাবে তখন দেখবো নি।"

---না আংকেল, আমি এতোটা রিক্স নিতে পারবো না।সবাই এখানে জানে সব কিছু, তাই আমি আসা করবো আমার দিকটাও বুঝবেন।আমি এভাবে চলে গেলে শান্তিমতো থাকতে পারবো না।

"এদিক দিয়ে তিশা জিসানের হাত থেকে নিজের হাতটা ছুটানোর চেস্টা করছে।কিন্তু জিসানের অগ্নি দৃষ্টি তিশার দিকে পড়ায় সব চেস্টা শেষ।"

_____জিসানকে সবাই অনেক বুঝানোর চেস্টা করছে।কিন্তু জিসান তো নাছোড়বান্দা।সে যা চায় তা হাসিল না করে এক পাও এগোবে না।জিসানের পাগলামি সম্পর্কে সবাই জানে  তাই কারো কাছে আর কোনও পথ রইলো না।

"অবশেষে জিসান ও তিশার বিয়েটা হয়েই গেলো।সবার অনেক জোড়াজোড়িতে বিয়েটা করতে বাধ্য হলো তিশা।জিসান যা চেয়েছে,তা তো পেলো।কিন্তু সাথে তিনটা শর্ত ছিলো।"

'প্রথম শর্তটা তৌফিক সাহেব দিয়েছিলো।জিসান পাঁচ বছর আগে দেশে ফিরতে পারবে না।'

---আর বাকি দুটো শর্ত তিশা দিয়েছিলো।যখন রায়হান ওকে বিয়ের জন্য মানাতে গেলো।তিশা ও জানে জিসান বিয়ে না করে কিছুতেই যাবেনা,ঘাড়ত্যাড়া মানুষ। 

"তাই সুযোগ পেয়ে দুটো শর্ত ধরিয়ে দিলো।তিশার দুটো শর্তের মধ্যে একটি ছিলো, জিসান ও তিশার বিয়ের কথা সময় না হওয়া পর্যন্ত কেউ জাতে না জানে।কখনো সিচুয়েশন যদি এমন হয় বিয়ের কথা বলতেই হবে,তাহলে বলা যাবে।তাছাড়া না।

তিশার দ্বিতীয় শর্ত ছিলো,তিশার পড়ালেখা শেষ না হওয়া পর্যন্ত তিশা কে কোনও সম্পর্কে আবদ্ধ করতে বাধ্য করা যাবে না।"

---তার মানে জিসান তিশাকে পেয়েও পেলো না।তিশার শর্তগুলো শুনে জিসান শুধু একটু বাকা হাসলো।তবে জিসানের সেই মুহুর্তে সব শর্ত মেনে না নেওয়া ছাড়া কোনও উপায় ছিলো না।

                         ---জিসানের এয়ারপোর্টের যাওয়ার সময় হয়ে গেলো।সবাই জিসানকে বাড়ীর বাহিরে এসে বিদায় জানালো।একজন ছাড়া।জিসান কোনও কথা না বলে উপরে চলে গেলো।সবাই বুঝতে পারলো জিসান কোথায় গিয়েছে।

"তিশা বিছানায় আধোশোয়া হয়ে মাথা হেলান দিয়ে বসে আছে।আর চিন্তা করতে লাগলো,কি থেকে কি হয়ে গেলো।এতো কিছুতো স্বপ্নেও ভাবিনি।
যে মানুষটি কে সারাদিন বকা ছাড়া মনে করতাম না,সে মানুষটি কিভাবে আমার সাথে জরিয়ে গেলো।আমিতো কখনো এমন কিছু চাইনি তাহলে কেনো এমন হলো।

এমন সময় কেউ দরজা খুলে ভেতরে প্রবেশ করলো।তিশা জিসানকে দেখে লাফ দিয়ে উঠে দাঁড়ালো।"

 ---জিসান তিশার সামনে গিয়ে,আমি চলে যাচ্ছি তিশা।এর পর কবে দেখা হবে জানিনা।হয়তো তুই মনে মনে এখন আমাকে ঘৃনা করছিস।কিন্তু আমার মন বলছে একদিন ঠিকই তুই বুঝতে পারবি।

"তিশা তখনো নিচের দিকে তাকিয়ে ছিলো।কিছুই বললো না।
জিসান এককদম সামনে এসে তিশার কপালে একটা আদর দিয়ে দিলো।"
 
---যাওয়ার সময় দরজায় দাঁড়িয়ে শুধু বলে গেলো_____ভালো থাকিস বউ,পারলে আমার জন্য একটু তারাতারি বড় হবার চেস্টা করিস।

'জিসান গাড়ীতে উঠে চলে গেলো,রায়হানও সাথে গেলো।তিশা বারান্দায় দাঁড়িয়ে জিসানের যাওয়ার দিকে তাকিয়ে রইলো।আর জিসান গাড়ীর লুকিং গ্লাস দিয়ে তিশাকে দেখে চোখের এক কোনা দিয়ে এক ফোটা নোনা জল গড়িয়ে পড়লো,যা কেউ দেখার আগেই মুছে ফেললো।'

---জিসানের যাওয়ার পর তিশা ও রায়হানকেও কিছুদিনের জন্য,অন্য কোথাও পাঠিয়ে দিলো তৌফিক সাহেব।অর্কের পিতা প্রানপ্রণ চেস্টা করলো জিসানকে বাংলাদেশ এ এনে চরম শাস্তি দিবে।কিন্তু বাধ সাধলো,একটা সিসিটিভি ক্যামেরা।
সেদিন তিশাকে কিডন্যাপ করার সময় রাস্তায় থাকা সিসিটিভি ফুটেজে সব দেখা যাচ্ছে।আর এ খবর মিডিয়াতে গেলে,অর্কের পিতা জানে,নিজের মান সম্মান তো যাবে,সাথে হয়তো পদটাও।তাই কিছুটা শান্ত হয়ে গেলো।অর্ককে  চিকিৎসার জন্য বাহিরে নিয়ে গেলো।

"তিশাকে নিশির সাথে নিশির স্কুলে ভর্তি করেদিলো।আর সেখানেই নিলার সাথে দেখা হয় তিশার।আর বেস্ট ফ্রেন্ড হয়ে যায়।নতুন স্কুলে উঠে তিশা অতিতের সব কিছু পিছে ফেলতে থাকে।শুধু পারেনা জিসানকে।কারন কোনও না কোনও ভাবে এসেই পরে তিশার সামনে। "

চলবে………।

No comments