ভাইয়ের_বন্ধু_যখন_বর😍 ----------(season 2) part_9🍁
"আজ তাওহিদ ভাইয়ার গায়ে হলুদ।সকাল হতেই মা তারা দিচ্ছে জিসান ভাইদের বাসায় যাওয়ার জন্য।কিন্তু আমি বুঝি না,এতো সকাল সকাল আমি ওখানে গিয়ে কি করবো।আরে ভাই বিয়ে তো আমার না,তাহলে অন্যের বিয়ের জন্য আমি আমার এতো সাধের ঘুম কেনো নষ্ট করবো।ঠিক এ সময় মা আমার ঘরে ভূতের মতো আগমন করলো।"
---তিশা তুই উঠবি না।
"আমি চোখ দুটো হালকা খুলে,উফফ মা!এমন কেনো করছো।গায়ে হলুদ রাতে,আর এখন সকাল। এতো তারাতারি আমাকে কেনো ঐ বাসায় যেতে হবে।
কাজের মেয়ের কি অভাব পরেছে।নাকি আমার বাসায় খাবারের অভাব পরেছে।"
---দেখ,তিশা। বাজে কথা বলিস না।
'নিশি,জিসান,আর তোর আন্টি কয়েকবার কল করেছে, তোকে পাঠিয়ে দেবার জন্য।'
---আমি আবার চোখ দুটো বন্ধ করে,আন্টিকে বল আমি বিকেলে এসে পড়বো।
'-ঠিক আছে,এই নে.....আমার হাতে মা তার ফোনটা ধরিয়ে চলে গেলো।আমাকে জিঙ্গেস করার সুযোগও দিলো না কে ফোন দিয়েছে।যতোসব।'
---ফোনটা কানে দিয়ে,ঘুম ঘুম কন্ঠে,হ্যা...লো।
"কিন্তু কেউ কথা বলছে না দেখে।আরে ভাই চুপ করে বসে কি ধ্যান করছেন।কথা বলছেন না কেনো।সকাল সকাল ফোন করে আমার ঘুম নষ্ট করেন,যতোসব আজাইরা পাবলিক।ফোনটা কাটতে নিলে..."
---তিশাএএএএএ....(সোফ্টলি কন্ঠে কেউ)
"আমিতো শোকড!এতো সুন্দর করে কে ডাকছে।কন্ঠটা খুব চেনা চেনা লাগছে,তিতা করলার কন্ঠ না এটা।বাট এই মানুষটি কখনো আমাকে এমন মধুর কন্ঠে ডাকেনি।অলওয়েজ চিল্লিয়ে ডাকে।হঠাৎ এতো চেন্জ। "
---হুম।আমার মুখ দিয়ে বের হয়ে গেলো।
"কয়টা বাজে এখনো ঘুম থেকে কেনো উঠিস নি ।উঠ তারাতারি।আর রেডি হয়ে চলে আস বাসায়।"
---আরো একটু ঘুমাই না জিসান ভাইয়া।আমি এখন এসে কি করবো।বিয়েতো আমার না যে, না আসলে অনেক ক্ষতি হয়ে যাবে।যার বিয়ে সে থাকলেই চলবে।বাকি মানুষের কি কাজ ওখানে।
"কেনো!তোর কি বিয়ে করার শখ জেগেছে।বিয়ে করবি?রাজি থাকলে তোর বিয়েটাও করিয়ে দেবো।আমি কিন্তু এক পায়ে রাজি।"
---আমি ঘুম থেকে লাফ দিয়ে উঠে বসে পরি।আরে..রে কি বলছেন।ব্রেক মারুন,আমি কখন বললাম আমি বিয়ে করবো,আমি তো জাস্ট………।
আমাকে আর বলতে দিলো না।
'-এক ঘন্টা সময় আছে তোর কাছে,তারাতারি ফ্রেস হয়ে রেডি হয়ে নে,আমি গাড়ী পাঠাচ্ছি ভদ্র মেয়ের মতো চলে আসবি।
রাতে আমাদের সাথেই সেন্টারে যাবি।আমি কিছু বলতে যাবো,তার আগেই ফোনটা কেটে গেলো।হিটলার কোথাকার, কথাও শুনলো না।'
---আমার আর কি করার,চলে গেলাম তাদের বাসায়।আমি না গেলে এই ব্যক্তি আমার কান ধরে নিয়ে যেতো।তার থেকে ভালো নিজের পায়ে হেটে যাই।সম্মান তো বাঁচবে।
||
||
"রাতে যথা সময় গায়ে হলুদ আড়াম্ভ হলো।আমি ও নিশি সবার পরে সেন্টারে গেলাম।রেডি হবার সময় বুঝতে পারলাম,আমার সোপিং এর রহস্য। জিসান নামের পাবলিকের কারসাজি এটা।আমার আর নিশির সব কিছুই এক,শুধু কালার আলাদা।"
---এক এক করে সবাই তাওহিদ ভাইকে হলুদ দিয়ে দিলো।হলুদের পর নাচ গানের আয়োজন করা হয়েছে।আর এতে সবাই খুব ইনজয়ও করছে।
আমিও এক পাশে দাঁড়িয়ে গান শুনছিলাম।হঠাৎ একটা অচেনা ছেলে এসে আমার পাশে দাঁড়ালো। আমি একটু সরে দাঁড়ালাম। সে আবার আমার কাছে এসে জিঙ্গেস করলো_____
hello bab,I'm Orko... what's your name.... !
"আমি তার দিকে তাকিয়ে চিন্তা করতে লাগলাম,চিনি কিনা,না আমি চিনি না।কিন্তু ছেলেটা যে আমাকে অনেকক্ষন ধরে ফোলও করছে তা বুঝতে পেরেছি।এখন একা পেয়ে কথা বলতে এসেছে।"
'সে আবার নাম জিঙ্গেস করায়,ভদ্রতার খাতিরে আমিও বলে দিলাম।আমি তো আবার একটু বেশি ভদ্র মেয়ে।'
---তিশা,মাই নেম ইজ তিশা।আমি চলে যেতে নিলে ছেলেটা আমার হাতটা ধরে ফেলে।আমি তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকাই।হাত কেনো ধরেছেন।একটু রেগে।
'why are you shouting, clam down.I am coming to talk to you.you look so hot.Read in any class.... bab..'
---ছাড়ুন আমার হাত,আমি কিন্তু এখন ঠিকই চিৎকার দেবো।এটা বলার পর অর্ক আমার হাতটা আরো জরে চেপে ধরলো,
'ওয়াও,তোমার দেখি রুপের সাথে তেজও আছে,পিচ্ছি হলে কি হবে।কিন্তু এটিটিউট তো বড়দের মতো।'
"তুমি জানো আমি কে?মিনিস্টারের ছেলে।যে মেয়ের গায়ে আঙ্গুল দিয়ে ইশারা করবো সাথে সাথে আমার কাছে এসে পড়বে।আর আমি সেধে তোমার সাথে কথা বলতে এসেছি।তুমি আমাকে এবোয়েড করছো।সাহস তো তোমার কম না।"
"খুব জোরে গান বাজছে,তাই এদিকে কি হচ্ছে কেউ শুনতেও পাচ্ছে না।"
---হাত না ছাড়লে,থাপ্পর দিয়ে দাঁত ফেলে দেবো ফাজিল ছেলে।সাহস কি করে হলো,আমার হাত ধরার।ছাড় বলছি,এক ঝটকা দিয়ে হাতটা ছাড়িয়ে ফেলি।তুই কে আমি জেনে কি আচার বানাবো।দূরে থাক আমার থেকে।
"ও রিয়ালি, আমার সাহস দেখতে চাও।তাহলে চলো।আমার হাতটা আবার ধরতে নিলে।আমি পেছনে সরে যাই,আর পেছনে দাঁড়ানো ব্যক্তিটার সাথে ধাক্কা খাই।তাকিয়ে দেখি জিসান ভাই,অগ্নি চোখে তাকিয়ে আছে।"
---আমি জিসান ভাইয়ের পেছনে লুকিয়ে____ভাইয়া দেখুন না,এই ছেলেটা কতোক্ষন ধরে আমার সাথে অসভ্যতামী করছে।
"জিসান ভাইয়া চুপ কিছুই বললো না,আমি কিছুটা শোকড!
উনি নিশিকে কল করে আমাকে ওর সাথে নিয়ে যেতে বললো,আর জিসান ভাই অর্কের কাধে হাত রেখে সেন্টারের বাহিরে চলো গেলো।আমি এখনো তাদের যাওয়ার দিকে তাকিয়ে আছি।অদ্ভুত বিষয়!জিসান ভাই এতো শান্ত কিভাবে।নাকি ঝড় আসার পূর্বাভাষ।"
---আমি নিশির সাথে চলে গেলাম।কিছুক্ষন পর উনিও কি সুন্দর মতো ফাংশনে এসে হাজির হলেন।এমন বিহেভিয়ার যে কিছুই হয়নি।অবশ্য পুরো অনুষ্ঠানে অর্ককে আমি আর দেখি নাই।
"পরের দিন বিয়েটাও ভালো মতো হয়ে গেলো,তানজিলা ভাবিকে সবাই স্বযত্নে বরন করে নিলো বাসায়।আমি অবাক হলাম যখন তানজিলা ভাবির আমাকে দেখার আগ্রহ যেনে।
আরে আমিতো এই বাড়ীর কেউ না,তাহলে আমাকে দেখার জন্যও আগ্রহ কেনো।ওয়াই!
তার আবার ভাইটাইয়ের গলায় আমাকে জুলিয়ে দেবার প্লানিং করছে নাতো।খুবই কনফিউজড আমি।আজ কাল কাউকে বিশ্বাস করতে নেই।"
-----বিয়ের পর বেশ কিছুদিন কেটে গেলো,আমি সেদিনের ঘটনাটাও মন থেকে মুছে ফেললাম।কিন্তু বলে না,কিছু ঘটনা আপনার পুরো জীবনকে চেন্জ করে ফেলে,আমার সাথেও তাই ঘটলো।আমি ভুলে গেলেও একজন মানুষ ভুলে নি,আর সে হলো অর্ক।সেদিন জিসান ভাই বাহিরে নিয়ে অর্ককে অনেক মারে,পরে রায়হান ভাই ও তাদের ফ্রেন্ড রনি এসে জিসান ভাইকে আটকায়।
"তবে তৌফিক আংকেল খুব রেগে যায়,জিসান ভাইয়ের উপর।কারন অর্ক কোন সাধারন ছেলে ছিলো না।মিনেস্টারের ছেলে।খুব কৌশলে এই ঘটনাটা ধামা চাপা দেন আংকেল।আর জিসান ভাইকে ওয়ার্নিং।"
||
||
"দেখতে দেখতে আমার এইটের ফাইনাল পরীক্ষা শেষের দিকে। আমি অনেক আকাশ পাতাল চিন্তা করে রেখেছি।আরে বাবা,পরীক্ষা শেষ হলেই তো নাইনে উঠে যাবো।নিজের মধ্যে একটু বড় বড় ফিলিংস আসা শুরু হয়েছে ।এতোদিন তো পিচ্ছির মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিলাম।"
---কিন্তু আমার এই খুশিটা ছিলো একদম ক্ষণস্থায়ী।আমার কপালে হয়তো অন্য কিছু লিখাছিলো। বলে না আমরা অনেক কিছু চিন্তা করে রাখলে কি হবে, আমাদের চাবিকাঠি তো অন্যের হাতে।সে যেভাবে চাইবে তাই হবে।অনেক দিনের তিলে তিলে গড়া কুড়ের ঘড়টাও হঠাৎ আসা ঝড় হাওয়ায় ভেঙ্গে যায় তারই হুকুমে।
"আমার জীবনেও এমন এক ঝড় এসে পরে,সেদিন আমার লাস্ট পরীক্ষা ছিলো।পরীক্ষা দিয়ে স্কুল থেকে বের হলাম খুশি মনে।ফ্রেন্ডসদের সাথে একটু আড্ডা দিয়ে বাড়ীর দিকে হাটা ধরলাম।মনটা অনেক খুশি।এবার রিলেক্স হবার পালা,নতুন নতুন কতো সুন্দর মুভি এসেছে তা সব দেখবো।মাকে বলবো সীমা আপুদের বাসায় নিয়ে যেতে,অনেক দিন হলো দেখিনা।"
---এসব চিন্তা করতে করতে হাটছিলাম।হঠাৎ একটা মাইকো এসে আমার সামনে দাঁড়ায়। আমি কিছুটা ভয় পেয়ে গেলাম।মাইকোটাকে দেখে আমি আমার হাটার গতি বাড়িয়ে দিলাম।কিন্তু শেষ রক্ষা পেলাম না।
মাইকো থেকে অর্ক ও আরো দুজন ছেলে নেমে এসে আমাকে জোড় করে তুলে নিলো।চিৎকার দেওয়ার আগেই মুখ চেপে ধরলো।অনেক চেস্টা করেও ছুটতে পারছিলাম না।আমার ছুটাছুটির কারনে অর্ক রুমাল দিয়ে নাকে মুখে চেপে ধরলে আমি জ্ঞান হারিয়ে ফেলি।
"যখন আমার জ্ঞান ফিরে,নিজেকে একটা রুমে আবিষ্কার করি।মাথাটা এখনো ধরে আছে।চোখে এখনো কেনো জানি ঘুম ঘুম ভাব আছে।আমি কোথায় আছি ভাবতে লাগলাম।
মনে পড়ে গেলো আমাকে তো অর্ক তুলে এনেছে এখানে।হঠাৎ দরজা খুলার শব্দে আমি আতকে উঠলাম।চেয়ে দেখি অর্ক ও আরো দুজন ছেলে রুমের ভেতরে প্রবেশ করলো।আমি অর্ককে দেখে চিৎকার করে উঠলাম আমাকে এখানে কেনো এনেছেন।কি ক্ষতি করেছি আমি আপনার ।"
---অর্ক হাসতে লাগলো,আমার সামনে মুখ এনে বলতে লাগলো-তোর অনেক তেজ তাই না।সেই তেজ আমি দূর করতে নিয়ে এসেছি।
আর তোর ওই আশিককেও তো শিক্ষা দিতে হবে।আমার গায়ে হাত তুলার পরিনাম কতোটা ভয়ানক হতে পারে এটা এখন বুঝবে।
"আমার চুলের মুঠি ধরে
তোর এমন অবস্থা করবো আজ,যাতে আয়না দিয়ে নিজের চেহারা দেখতেও ভয়ে আতকে উঠবি।আর তোর আশিক তোর এ অবস্থা দেখে বেঁচে থেকেও মরে যাবে।আমি অর্কের কথার আগামাথা কিছুই বুঝলাম না।কোন আশিক এর কথা বলছে।আমার এমন কেউ নেই।
আমি ওর হাত থেকে চুল ছুটাবার চেস্টা করে বলছি। আপনার হয়তো ভুল হচ্ছে,আমার এমন কোনও আশিক নেই।প্লিস আমাকে ছাড়ুন।আমি বাসায় যাবো।"
'আমার কথা শুনে অর্ক সহ বাকি দুছেলে গুলো ও হেসে উঠলো।'
---ব্রো যাই বলিস না,মালটা কিন্তু****।
'হুম ঠিক বলছিস।'
---তাহলে আজ জমিয়ে পার্টি হবে,ভাগে কি আমরাও পাবো।
'অফকোর্স। তা আবার বলতে হবে।'
"আমি এদের কথা শুনে বুঝতে পাড়লাম,আজ আমার সাথে ভয়ানক কিছু হবে।যার কথা হয়তো আমি কোনও দিন কল্পনাও করিনি।এসব কি সত্যি আমার সাথে হচ্ছে।নাকি এখনো আমি ঘুমিয়ে আছি।আর মা কিছুক্ষন পর আমাকে ডাকতে আসবে।তিশা তিশা করে চিল্লাবে।"
---আজ মাকে খুব মনে পড়ছে।মা প্লিজ আমাকে ডাকো,আমি আর এই স্বপ্ন দেখতে চাই না,মা তুমি কোথায়।আমার চোখ দিয়ে পানি পড়ছে।মাথার চুলগুলো মনে হয় ছিড়ে যাচ্ছে এমন মনে হচ্ছে।
"বাকি দুটো ছেলে চলে গেলো,আর অর্ক আমাকে বিছানায় ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিলো।নিজের শার্ট খুলতে লাগলো,আমি এদিক ওদিক দেখতে লাগলাম কোথায় পালানো যায়।অর্ক আমার দিকে এগোতে থাকলে আমি দৌঁড় দিয়ে বারান্দায় চলে যেতে নিলাম।উদ্দেশ্য গিয়ে দরজাটা লাগিয়ে দেবো।কিন্তু আমি বারান্দায় যাবার আগেই অর্ক আমাকে ধরে ফেলে।
ছুটতে চাইলে,আমাকে জরে কয়েকটা থাপ্পর মারে,থাপ্পরের কারনে আমার ঠোঁট ফেটে রক্ত বের হয়ে যায়।আমি অনেকটা দূর্বল হয়ে পড়ি।শরীরে মনে হয় আর শক্তি নেই।আমাকে ধাক্কা দিয়ে আবার বিছানায় ফেলে দেয়।"
---এখন আর উঠার শক্তি পাচ্ছি না,মাথাটাও ভো ভো করছে,চিৎকার করে কাঁদতে মন চাইছে।রায়হান ভাইকে খুব বেশি মনে পড়ছে।আমি কোথাও যেতে চাইলে রায়হান ভাই মানা করলে, রাগ করে বসে থাকতাম।তখন রায়হান ভাই এসে বলতো তিশা বাহিরের জগৎ টা অনেক খারাপ।কখনো এর আসল চেহারা দেখলে তুই সহ্য করতে পারবি না বোন।আর আমি তোকে হারাতে চাই না।
"তিশার চোখ দিয়ে পানি পড়ছে,বার বার একটা কথা মনে পড়ছে,ভাই তুই কোথায়।আমি যে সত্যি সহ্য করতে পারছি না।প্লিজ ভাই আমাকে নিয়ে যা।"
চলবে………।
[পার্টগুলো কেমন হচ্ছে জানাবেন।তাহলে সামনে বাড়তে সহয হবে।]
No comments