ভাইয়ের_বন্ধু_যখন_বর😍 ---------(season 2) [🖤] part_14🍁
"আজ শুক্রবার,সাপ্তাহিক ছুটির দিন।আমার ইচ্ছা ছিলো ঘুমিয়ে পাড় করব দিনটি।কিন্তু কপাল আমার!
এখন আমি জিসানদের বাড়ীর সামনে দাঁড়িয়ে আছি।আজ জিসানের দাদার মৃত্যু বার্ষিক।প্রতি বছর এই দিনটিতে মিলাদ পড়ানো হয়।এতিম বাচ্চাদের মধ্যে খাবার ও কাপড় চোপড় বিতরন করা হয়।খুব বিশেষ ভাবে দিনটি পালন করা হয়।"
---এই বাড়ীতে বছরের তিনটি দিন খুব কড়া নিয়মে পালন করা হয়।একতো জিসানের দাদা সুলেমান আহমেদ এর মৃত্যু বার্ষিক,দ্বিতীয় হলো জিসানের জন্ম দিন আরো একটা দিন আছে,কিন্তু সেই দিন কার নামে মিলাদ পড়ানো হয় তা জানা নেই।
এমনকি জিসানও জানে না।জিসান একদিন জিঙ্গেস করেছিলো,কেনো সেদিনটি এতো বিশেষ ভাবে পালন করা হয় কিন্তু তৌফিক সাহেব সময় হলে জানতে পাড়বে বলে এড়িয়ে যেতেন।তাই কেউ আর জানার দ্বিতীয় বার চেস্টা করেনি।
'জিসানের দাদা সুলেমান। নামটা যেমন রাজকীয় তেমনি উনি দেখতে ও রাজার মতো ছিলো।জিসানদের ফ্যামিলি এলব্যামে তাকে আমি দেখেছি।মজার বিষয় হলো,জিসান অনেকটা দেখতে তার মতো।শুধু চেহারার দিক থেকে না, আচার আচরণেও নাকি দাদার মতো।জিসানের দাদা রাজকীয় বংশের না হলেও সে কালের জমিদার বংশের ছেলে ছিলেন।
তার এটিটিউড,চাল চলন আর জিদের কারনে তখন তাকে সবাই খুব ভয় পেতো।লোকটি নাকি খুব জেদি টাইপের ছিলো।জিসানের দাদীকে নাকি অন্য গ্রাম থেকে তুলে এনে বিয়ে করেছিলেন। কি সাংগীতিক পারশেন তিনি।আর তার জিদ এটিটিউড সব জিসান বস্তা ভরে ভরে বংশগত পেয়ে গিয়েছে।'
---আমি বাড়ীতে প্রবেশ করার সাথে সাথে আন্টি মানে জিসানের মা এসে আমাকে জরিয়ে ধরলেন।কেমন আছিস মা।আসতে কোনও কস্ট হয়নিতো।
"না না আন্টি আমি ভালো আছি। আর আসতেও কস্ট হয়নি।"
---আয়তো ভেতরে আয়।কখন ধরে দুয়ারে দাঁড়িয়ে আছিস।আন্টি আমার হাতটা ধরে ড্রয়িং রুমের সোফায় বসিয়ে দিলো।ড্রয়িং রুমে জিসানের দু'মামী,আর ফুফু বসে ছিলো।আমি তাদেরকে সালাম করলাম।ফুফু আমাকে আদর করলেও মামীরা মনে হয় আমাকে দেখে এতোটা খুশি না তা দেখেই বুঝা যাচ্ছে।আমিও তাদের সাথে কিছুক্ষণ গল্প করলাম।
আন্টি নিশি কোথায়।
"আর কোথায় ম্যাডাম এখনও ঘুমায়।"
---বাহ আমার ঘুম হারাম করে ম্যাডাম ঘুমাচ্ছেন।আহারে আমি বাসায় থাকলে আমিওতো এখন নাক ডেকে শান্তির ঘুম দিতাম।কিন্তু মার কারনে এখানে এতো সকাল সকাল আসতে হলো।মা সকাল সকাল ডাক দিয়েই বলতে লাগলো জিসানদের বাসায় যাওয়ার জন্য রেডি হতে।
"আমি এতো সকাল ওখানে গিয়ে কি করবো, তোমাদের সাথে বরং দুপুরে যাবো বলে আবার শুয়ে পড়েছিলাম।কিন্তু মা আমার, আবার হাতটা ধরে টেনে উঠিয়ে বসালো।
আমার গালটা ধরে বললো,তিশা তুই এখন ওই বাড়ীর বউ।তাই তোরও কিছু দায়িত্ব আছে ও বাড়ীর মানুষদের প্রতি।তুইও জানিস এতো বছর জিসান ছিলো না বলে এই দিনটি ঠিকমতো পালন করেনি।
আজ এতো বছর পর জিসান আসায় এবারের আয়োজনটাও অনেক বড় করে করা হয়েছে।এখন তুইও ও বাড়ীর একজন সদস্য,মেহমান না।
তোকে কখনো কোনও বিষয় উনারা জোড় করেনি।কিন্তু মা তোরও তো বুঝতে হবে।ওদিক দিয়ে তানজিলা হয়তো একাহাতে এতো কিছু সামাল দিতে কস্ট হয়ে পড়ছে।তোরও উচিৎ ওকে সাহায্য করা।তাই রেডি হয়ে নে।তোর শ্বশুরবাড়ী থেকে গাড়ী আসছে তোকে নিতে।"
---মা আমার কপালে একটা আদর দিয়ে চলে গেলো।সম্পর্ক যেহুেতু হয়েছে সম্পর্কের সাথে জড়িত দায়িত্ব গুলোকে এড়িয়ে চললে হবে না।তাই আমিও চলে এলাম এখানে।
"তারিনকে কোলে নিয়ে আন্টি আর তানজিলা ভাবির সাথে কিছুক্ষণ গল্প করলাম।এর পর ভাবি সকালের নাস্তা রেডি করতে চলে গেলো।আমি তারিনকে সাথে নিয়ে নিশিকে ডাকতে গেলাম।
প্রায় ১০ মিনিট ধরে নিশিকে ডেকে যাচ্ছি কিন্তু ম্যাডাম উঠার নামই নিচ্ছি না তাই বেড সাইডের টেবিলের উপর রাখা গ্লাসের পানির ছিটা দিতে লাগলাম।বেচারী পানির ছিটায় ধড়ফড়িয়ে উঠলো।"
---আমাকে সামনে দেখে আবাক হলো।এই তুই এতো সকালে আমার বাসা কি করছিস,হারামি।
"আমি ওর পাশে বসে,কুত্তা মুখ সামলিয়ে কথা বল,আমি আজ আমার শ্বশুর বাড়ী এসেছি।তোর বান্ধবী হয়ে আসেনি।তাই সম্মান দিয়ে কথা বলবি আজ আমার সাথে।"
---ও তাই নাকি।তো ভাবিজান ভাইকি এখনো জানতে পারছে আপনার আগমন যে আমাদের বাড়ীতে হয়েছে।
"আমি মুখচোখ ছোট করে মাথা নাড়ামাল,মানে না।"
---তাহলে নিজের সোয়ামিকে না জাগিয়ে এই অদমের ঘুম কেনো হারাম করছেন।জান আমার ভাইজানের কাছে যান।নিশি আবার ঘুমাতে গেলে তিশা টেনে উঠিয়ে ওয়াসরুমের দিকে পাঠায়।আর ঘুমাতে হবে না আমার একমাত্র ভাইয়ের একমাত্র বউ,আর আমার একমাত্র হবু ভাবি যান গিয়ে ফ্রেস হন।আপনার মিস্টার হ্যান্ডশাম যে কোনও সময় এসে পরবে।তিশার কথায় দু'জনেই অট্টহাসি দিলো।এর পর নিশু ফ্রেস হতে চলে গেলো।আর তিশা তারিনকে নিয়ে আবার নিচে চলে যায়।
"তারিনকে ডাইনিং টেবিলে বসিয়ে,ভাবী কোনও সাহায্য লাগবে,বলো আমি করে দিচ্ছি।তানজিলা ভাবী আমার মাথায় হাত রেখে, তোমাকে কিছু করতে হবে না তুমি এখানে বস।তুমি আসছো এতেই অনেক খুশি আমরা।ভাবী চলে যেতে নিলো,কি মনে করে আবার ফিরে এলো।তোমাকে একটা কাজ করতে হবে।পারবে তো।
_____আমি না জেনেই হ্যা বলে দিলাম।"
||
||
"আমি চায়ের কাপ হাতে নিয়ে জিসানের রুমের সামনে দাঁড়িয়ে আছি।আমার তো এখনি কাপাকাপি শুরু হয়ে গিয়েছে।কী দরকার ছিলো আগ বাড়িয়ে সাহায্য করার কথা বলার,আজকাল কাউকে সাহায্য করতে নেই।এতে নিজের কূয়ায় নিজেই পড়তে হয়।
এখন যেমন আমি পড়েছি।ভাবিকে কেনো যে এসব বলতে গেলাম,না বললেই হতো।তাহলে তো ভাবি আমাকে এই বাঘের খাঁচায় পাঠাতো না।দোয়া দূরদ পড়ে বুকে একটা ফু দিয়ে দরজা খুলে ভেতরে গেলাম।"
---কি আশ্চর্য! রুম এখনো অনেকটা অন্ধকার।ভূতুরে পরিবেশ। কারন জানালায় পর্দা দেওয়া।রুমের লাইট অফ করা।বিছানার দিকে তাকিয়ে আমি শোকড।
জিসান খালি গায়ে উপর হয়ে শুয়ে আছে তাও আবার এই গরমে পাতলা কম্বল গায়ে দিয়ে।আর দিবেই না কেনো।এসির পাওয়ার এতো বাড়ীয়ে দিয়েছে যে আমারি কেমন ঠাণ্ডা ঠাণ্ডা অনুভূতি হচ্ছে।বরফের মতো শীতল হয়ে যাচ্ছি আমি।কিন্তু কেনো?
এসির কারনে নাকি জিসানকে এই প্রথম উদাম শরীরে দেখতে পেয়ে জানি না।কনফিউশন এ ভুগছি আমি।
'আমার চিন্তা এখন আমি আস্তে করে চা টা রেখে চলে যাবো।ব্যাস তাহলেই আর কোনও সমস্যা হবে না।যেমন ভাবা তেমন কাজ,আমি চা টা রেখে মাত্র চলে যাবার জন্য পা বাড়ালাম____ ওমনেই জিসান আমার হাতটা ধরে টান দিয়ে বিছানায় ফেলে দিয়ে আমাকে জরিয়ে ধরে শুয়ে পড়লো। আমি তো এখনো শোকড এর মধ্যে আছি,কি হলো আমার সাথে।'
---জিসানের ঘন নিশ্বাস আমার গলায় পড়ছে।এক হাত দিয়ে আমার কোমড়কে আঁকড়ে ধড়ে আছে।একতো উনি এভাবে জরিয়ে ধরে আছে তার উপর এমন খালি গায়ে।আমার শরীর ঘেমে যাচ্ছে,এসির এতো শীতল টেম্পোরেজার ও আমি ঘামছি।কি আশ্চর্য!
একটু আগেও তো আমি জমে বরফ হয়ে যাচ্ছিলাম।আর এখন ঘেমে যাচ্ছি।কিন্তু কেনো?আমার কোনও বড় রোগ হলো নাতো।
"আমি আস্তে আস্তে কাপাকাপা হাতে জিসানকে সরানোর চেস্টা করছি।কিন্তু তাকে একচুলও সরাতে পারছি না।হাতির মতো মানুষটিকে আমার মতো মশা কি তুলতে পারবে।আমি জিসানকে ডাকতে লাগলাম,শুনছেন প্লিস উঠুন।কেউ এসে পড়বে।"
---উম!তিশা।একটু শান্তিতে ঘুমাতেদে "জান"।কাল অনেক লেট করে ঘুমিয়েছি।সব একা সামলাতে হয়েছে।ভোড় রাতে ভাইকে আর বাবাকে রেখে আমি এসেছি একটু রেস্ট নিতে।সো ডোন্ট ডিস্টার্ব।
"তাহলে আপনে ঘুমান, আমাকে তো যেতে দিন।সবাই কি ভাববে,আমি এই রুমে এতোক্ষন কি করছি।"
---জিসান মাথাটা উঠিয়ে,ঘুম জড়ানো কন্ঠে।তোকে ভাবি পাঠিয়েছে।
"হুম!আমি মাথা নেড়ে।"
---আমিই ভাবিকে বলেছি আমার বউটা বাসায় আসলে সবার আগে আমার রুমে পাঠিয়ে দিতে।তাইতো তুই এখানে।কেউ কিছু ভাববে না।আর ভাবলে ভাবুক।তুই আমার বউ।তাই করো ভাবনার কিছু যায় আসে না।
আর আমার রুমে কেউ আসার সাহস করবে না,আমার অনুমিত ছাড়া।ডোন্ট ওয়ারি।
'আর এখন চুপচাপ আমার সাথে শুয়ে থাক,আর আমাকে তোর শরীরের মিস্টি ঘ্রাণ টা নিতে দে।জিসান তিশার গলায় নাক ঘষতে থাকে।আমাকে মাতাল করতে তোর এই ঘ্রানটাই যথেষ্ট। আর আমি মাতাল হতে চাই বার বার।
মুখটা উঠিয়ে জিসান আমার কপালে দু'গালে কিস করে আমার গলায় নিজের মুখ ডুবালো।টুকরো টুকরো কিস করতে লাগলে।আমি আবেশে চোখ বন্ধ করে ফেললাম।অদ্ভুত এক ফিলিং কাজ করছে আমার মাঝে।আমি যেনো আমার মাঝে নেই।অন্য এক সুখের রাজ্যে আমি ভাসছি ।জিসানের ঠোঁটের স্পর্শ গলা থেকে একটু নিচে নামতে নিলেই,আমি চিৎকার দিয়ে উঠি।'
"নো নো নো। প্লিজ।"
----জিসান তিশার দিকে তাকিয়ে দেখে তিশা চোখমুখ খিচে আছে।একটু বাঁকা হেসে,তাহলো চুপচাপ আমাকে ঘুমাতে দেয়।কোনও শব্দ করবি না আর এখান থেকে যাওয়ার চিন্তা বাদ দে।
এই বলে আবার শুয়ে পড়লো।তা না হলে আদরের ডুশ কিন্তু বাড়িয়ে দেবো।তখন আর কোনও বাধা শুনবো না।
"পাক্কা দুঘন্টা পর আমি জিসানের রুম থেকে বের হতে পেরেছি।কিন্তু এখন আমার আন্টি আর ভাবির সামনে যেতে ভীষন লজ্জা লাগছে।তারা কি ভাবছে।আল্লাহ সব রেখে এই লোকটারে কেনো আমার গলায় ঝুলালা।এই লোক জায়গা সময় কিছু দেখে না রোমাঞ্চ করার সময়।আর বার বার আমায় লজ্জায় পড়তে হয়।"
||
||
"তিশা তানজিলার সাথে ডাইনিং টেবিল পরিষ্কার করতে লাগলো।জিসান সিঁড়ি দিয়ে নামছে তার ভিজা চুলগুলো ঝাঁকাতে ঝাঁকাতে।এস কালারের গেন্জীতে তার বডি ফিটনেস একদম ফুটে উঠেছে।ড্রয়িং রুমে বসে থাকা উনার কাজিনরাও তার দিকে হা করে তাকিয়ে আছে।"
---রাগে আমার গা জ্বলে যাচ্ছে।এতো হ্যান্ডশাম হবার কি দরকার ছিলো।আমাকে বলে কারো নযরে না আসতে।নিজের বেলায় কিছু না।তিশা বির বির করে বলছে।
"জিসানের চোখ এড়ায়নি ব্যাপারটা।জিসান বাঁকা হেসে তিশার পাশের চেয়ারটাতে বসে সবার সামনে তিশার ওড়না দিয়ে নিজের মাথাটা মুছতে লাগলো।তিশা কেমন রিয়েক্ট দিবে বুঝতে পাড়ছে না।
আশেপাশে তাকিয়ে দেখলো সবাই এই দিকে তাকিয়ে আছে।আর আমি অসহায় মুখে ভাবির দিকে তাকিয়ে আছি।ভাবিও মিটমিটিয়ে হাসছে।কি আজব সিচয়েশনে আমাকে ফেললো।"
'জিসানকে নাস্তা দিয়ে আমি চলে যেতে নিলে আমার হাতটা ধরে উনার পাশের চেয়ারে বসালো।'
---আরে কি করছেন সবাই দেখছে।
'জিসানের যেনো কোনও রিয়েকশন নেই,সে মনে হয় আমার কথাটা শুনেও শুনলো না।অল্প একটু নাস্তা নিয়ে আমার মুখের সামনে এনে, হা কর।'
---আমি আশেপাশে তাকিয়ে, আমি নাস্তা করে আসছি। আপনে করুন। আমি উঠতে নিলে আবার হাতটা ধরে ফেলে।
---একদম উঠবি না।আর এতোটুকু খেলে তুই মোটা হবি না।তাই চুপচাপ খেয়েনে।আর আমার খাবার শেষ না হওয়া পর্যন্ত উঠবি না।এখানেই বসে থাকবি।
"আমি হা করে খাবারটা খেয়ে নিলাম।আমি খুব ভালো করেই জানি না খেলে মিস্টার জিসানও আর খেতো না।জিসানের কাজিনরা মিটমিট করে হাসছে আর মজা নিচ্ছে।কিন্তু জিসানের মামীদের হয়তো জিনিসটা পছন্দ হয়নি।তারা মুখ বাঁকিয়ে সেখান থেকে চলে গেলেন।"
---খাবার শেষ হবার পর জিসান উঠে চলে যাবার সময়,আমার ওড়নাটা মাথায় দিয়ে বললো।কে কী বলছে,কী দেখছে আমার কাছে সে টা ইম্পোরটেন্ট না।আমার কাছে শুধু তুই সবচেয়ে ইম্পোরটেন্ট। আর একটা কথা আজ আর বাড়ীর বাহিরে যাবি না।ঠিক আছে।
-"আমি মাথা নাড়লাম শুধু হা বললাম।"
"মেহমানদের খাবারের আয়োজন বাহিরে করা হয়েছে।তাই সেখানে যাওয়া নিশেধ করে দিয়েছে আমার।জুম্মার নামায এর পরই মিলাদ শুরু হলো।রায়হান ভাই,বাবা ও মিলাদে অংশ নিয়েছে।মা বাবা,আর রায়হান ভাই কিছুক্ষণ আগেই এলো।
আমি নিশির রুমে বসে আছি তার কাজিনদের সাথে।কিছুক্ষণ পর মোনাজাত ধরে মিলাদ শেষ করলাম।এর পরই খাওয়া দাওয়া শুরু হয়ে গেলো।এতিমখানার জন্য মিষ্টি খাবার, কাপড় চোপড় জিসান ও তাওহিদ ভাই নিয়ে গেলো।সাথে জিসানের কাজিন হীরা ও নীড় ও গেলো।এসব করে আসতে আসতে প্রায় বিকেল হয়ে গেলো তাদের।"
---আমি নিশির রুম থেকে মাকে খুঁজতে বাহিরে চলে হলাম,ওমনি আমার শ্বাশুরী মানে জিসানের মায়ের রুমে কিছু শুনে থমকে গেলাম।
জিসানের মামী আন্টিকে অনেক কথা শুনাচ্ছে তাও আবার আমাকে নিয়ে।ব্যাপারটা কী জানতে হবে।তার জন্য দরজার সামনে দাঁড়ালাম।
'আপা কী করলেন,এতো ছোট ঘরের মেয়েকে কিভাবে আনলেন।এই মেয়েতো কোনও দিক দিয়ে জিসানের যোগ্য না।না আছে পড়ালেখা,না আছে বাবা মায়ের কিছু।যা রুপটা আছে ওটা দিয়েই আমাদের সহজ সরল ছেলেটাকে নিজের জালে ফাঁসিয়ে দিয়েছে।'
---মিসেস রাবেয়া বেগম,তার নিজের ভাইয়ের বউদের বুঝাতে লাগলো।এতে মেয়েটার কোন দোষ নেই।কিন্তু জিসামের মামী রুমি এবং রোকসানা বেগম বলে উঠলো,"এমন ছোট ঘরের মেয়েগুলোকে খুব ভালো করেই চেনা আছে আমাদের।এরা পরিবার থেকেই অল্প বয়সে ট্রেনিং নিয়ে নেয়।কিভাবে জালে বড় মাছ ধরবে।"
আপনি আপা বড় বোকা।তাইতো এতো সহজে এসব মেনে নিয়েছেন।এখনো সময় আছে এই আপদকে বিদায় করেন।'
---দেখো তোমরা ভুল.....জিসানের মা কিছু বলতে নিবে তখনই রুমের বাহিরে কিছু শব্দ শুনতে পেয়ে দেখতে যায়।তিশাকে দেখে রাবেয়া বেগম ভয় পেয়ে যায়।রাবেয়া বেগম খুব ভালো করেই জানে এই মেয়েটার জন্য তার ছেলে কাউকে খুন করতেও হাত কাঁপবে না।আর সেখানে জিসান যদি এসব জানে তাহলে সুনামি নেমে আসবে বাসায়।
"কথাগুলো শুনে তিশা স্তব্ধ হয়ে যায়।হাতে থাকা তারিনের খেলনাটা পড়ে যায়।চোখ দিয়ে পানি পড়তে তাকে,হিচকিও উঠে যায়।কিন্ত শব্দ করে কাঁদতে পারছে না।"
---তিশা শুন মা,আমার কথা শুন।
"আমি কিছু বলতে চাচ্ছিলাম।কিন্তু আমি বেশি কষ্ট পেলে আমার মুখ দিয়ে কথা বের হতে চায় না।সব কিছু দলা পাকিয়ে ফেলি।"
---আমি অনেক কষ্টে আন্টিকে জিঙ্গেস করলাম,"মা,ভাইয়া কোথায়?"
'তিশা তোমার বাবা মা চলে গিয়েছে,রায়হান জিসানের বাবার সাথে কোনও এক কাজে বাহিরে গিয়েছে।তোমার কিছু লাগলে আমাকে বলো মা।আমার হাতটা ধরে।'
---এতোক্ষণে মিসেস রুমি ও রোকসানাও রুমের বাহিরে আসলো দেখতে সমস্যা কী?তিশাকে দেখেই যেনো তাদের মাথা আরো গরম হয়ে গেলো।রাগে তিশাকে আরো অনেক কিছু শুনিয়ে দিলো।
'দেখছেন আপা।আমি বলেছিলাম না এরা এমনই হয়।রুমের বাহিরে দাঁড়িয়ে আমাদের কথাগুলো শুনছিল।কেমন মেয়েরে বাবাহ!'
মিসেস রুমী___এই তোমার বাবা মা কী কোনও শিক্ষা দেয়নি।কেমন মেয়ে তুমি লজ্জা সরমের মাথা খাইছো মনে হয়।
রাবেয়া বেগম ধমক দিয়ে তাদের চুপ করালো।কিন্ত ততোক্ষণে দেরি হয়ে গিয়েছে তিশা সেখান থেকে দৌঁড়ে বাড়ীর বাহিরে চলে গেলো।"
চলবে......
No comments