Update Story
📢 গল্পঃসিনিয়র_খালাত_বোন_যখন_বউ পর্বঃ০৬    📢 গল্পঃসিনিয়র_খালাতো_বোন_যখন_বউ পর্বঃ০৫    

ভাইয়ের_বন্ধু_যখন_বর😍 ---------(season 2) [🖤] part_20🍁




"রাতটা খুব যন্ত্রণায় কেটে গেলো।নির্ঘুম রাতে দু'টো মনের হাহাকার কেউ জানলো না।জিসানের কাছে এসবই পুরাতন।এভাবে কতো রাত ও নির্ঘুম কাটিয়েছে শুধু ও জানে।কি যে অসহ্য যন্ত্রণা।মনের ভেতরে কেউ ছুড়ি দিয়ে লাগাতার আঘাত করার মতো।
ভালোবাসার এই কস্ট জিসান অমৃত মনে করে প্রতিনিয়ত পিয়ে যাচ্ছে।তাইতো আজ এতো কঠোর জিসান।অপেক্ষার সিড়ি বইতে বইতে ভীষন ক্লান্ত।এতো লম্বা অপেক্ষা হয়তো জীবনে কোনও কিছু পাওয়ার জন্য করেনি যতোটা তিশার জন্য করছে।তিশা নামের পাখিটির জন্য ওর মনের ছটফটানি কেউ দেখে নি।শুধু রাগটাই সবার চোখে পড়েছে।"

---জিসানের রাগের পিছনে তিশার প্রতি অবিরাম ভালোবাসাটা কেউ দেখতে চায় না।কেনো কেউ বুঝে না,এই জিসান তিশাকে ছাড়া কতোটা অসহায়।
দুনিয়ার সবার সাথে লড়তে পারলে এই একটি জায়গায় এসে ও দূর্বল হয়ে পরে।
এতোদিন তিশার চোখে নিজের একটু ভালোবাসার জায়গা পেতে অনেক কাঠ কয়লা পুড়াতে হয়েছে।এতোকিছুর পর যখন জিসান তিশার চোখে নিজের জন্য ভালোবাসার অনুভূতি দেখতে পেয়েছে,এখন আবার ঝড়ের মতো কেনো সব ছিন্নবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছে।জিসান বুঝতে পারছে তিশাকে এভাবে দূরে রাখলে তাদের দূরত্ব আরো বাড়বে।
 তাই ডিসিশন নিয়ে নিয়েছে খুব শীঘ্রই তিশাকে নিজের কাছে নিয়ে আসবে।মানবে না করো শর্ত আর।

"-পুরো রাত তিশার চোখের পানিতে বালিশ ভিজেছে। ভালোবাসার অনুভূতিতে তিশা একদম নতুন।তাই তো ছোট কস্টও তিশাকে অনেক পুড়াচ্ছে।
জিসানকে হারানোর ভয় তিশাকেও তারা দিচ্ছে আজ।চার বছর আগে জিসানকে ঠিক এসব কারণেই বিদেশ পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।এখন আবার যদি আগের মতো করে,তাহলে এবারও তাকে আমার হারাতে হবে।কিন্তু এবারের দূরত্বে যে পুড়ে যাবো আমি।মরে যাবো আপনাকে ছাড়া।
আমি চাই না আপনার থেকে আলাদা হতে জিসান।কেনো  বুঝেন না।আপনার এই উগ্র মেঝাজ আপনাকে আমার কাছ থেকে দূরে সরিয়ে ফেলবে।"

---জিসান প্যারিস যাবার পরেরদিন তিশা তার বাবা ও তৌফিক সাহেব(জিসানের বাবা) এর কথা শুনেছিলো।জিসানকে শুধু অর্কের কারণে বিদেশ পাঠানো হয়নি।ব্যাপার আরো ছিলো।
জিসানের তিশার প্রতি অতিরিক্ত পজিসিভ হওয়া সবাইকে ভাবিয়ে তুলে ছিলো।শুধু অর্ক না,এর আগেও জিসান তিশার জন্য অনেককে আঘাত করেছে,কেউ কেউতো মৃত্যু থেকে বেঁচে আসছে।কিন্তু কতোদিন।এভাবে চলতে থাকলে একদিন না একদিন জিসান বড় কোনও ক্রাইম করে ফেলবে।
তখন অপসোস করেও লাভ হবে না।সময় থাকতেই কিছু একটা করতে হবে।তাইতো অর্কের ব্যাপারকে হাতিয়ার করে জিসানের বাবা ও তিশার বাবা মিলে প্লানিং করলো।আপাতত জিসানকে তিশা থেকে দূরে রাখাই ভালো।
কিন্তু সেদিন তারা আশা করেনি,জিসান যে ১৩ বছরের পিচ্ছি তিশাকে বিয়ে করার কথা বলবে।'

"তাইতো তিশা এখন ভয় পায়,জিসানকে হারাবার ভয়,তার থেকে দূরে থাকার ভয়।তাকে ছাড়া বেঁচে থাকার ভয়।
জিসানের সময়ের আগে দেশে চলে আসার কারণ,তিশার বাবার যে পছন্দ হয়নি,তা সে মুখে না বললেও হাভভাবে তিশা বুঝে গিয়েছে।জিসান নিজের রাগটাকে সংযোত না করতে পারলে বাবা যে আপনার থেকে আমাকে আলাদা করে ফেলবে তা কেনো বুঝেন না।আজ তিশার ভেতরেও একটা ভয় কাজ করছে জিসানকে হারানোর।"

||
||

"আজ তিশা কলেজে যায় নি।সারারাত কান্নাকাটি করার জন্য,সকাল সকাল মাথা চেপে ধরে বসেছিলো।নিশিকে ফোন করে বলে দিলো কলেজে যাবেনা।আসল কথা জিসানের সামনে যাবে না।
-কাল তিশা ওর কোচিং এর ফ্রেন্ডসদের সাথে কথা বলে জানতে পারছে,সাব্বির স্যারকে কেউ খুব মারছে,ব্যাচারার অবস্থা খারাপ।হাতেপায়ে ব্যান্ডিজ।কিন্তু কে করেছে কেউ বলতে পারছে না।
আর সাব্বির স্যারও নাকি ভয়ে মুখ খুলছে না।তিশা একটা দীর্ঘ শ্বাস ছেড়ে, মনে মনে ভাবছে আমিতো জানি কে করেছে।কিন্তু তাকে কিছু বলার মতো সাহস আমারও নেই।"

---সকালে জিসান গাড়ী নিয়ে সোজা তিশাদের বাসার দিকে রওনা দিলো।
কিছুক্ষণ আগের ঘটনা-----
জিসান আজ নিজেও লেট করে উঠেছে ঘুম থেকে।তিশা যায়নি বলে নিশিও আজ কলেজ ফাকি দেওয়ার সুযোগ পেয়েছে।এসময় নিশিকে বাসায় দেখে কারণ জানতে চাইলে,নিশি তোতা পাখির মতো সব বলে দেয় ভাইকে।এর পর জিসান রেগে বাসা থেকে বের হয়ে যায়।

"কলিংবেলের শব্দে তিশার মা দরজা খুলে দেয়।তিশার মায়ের সাথে কিছু কথা বলে,জিসান সোজা হন হন করে চলে যায় তিশার রুমে।
মাথা আজ ভীষন খারাপ জিসানের।কিছুতেই নিজের রাগটা কন্ট্রোল করতে পারছে না কাল রাত থেকে।এই মুহুর্তে ওর শুধু তিশা চাই।যা ওর নেশা।একমাত্র ওষুধ এটাই।
কি আশ্চর্য তাই না,যে ব্যাথা দিয়েছে,তাকে দিয়েই মলম লাগাবে।তা না হলে শান্তি নাই।"

---তিশা পড়ার টেবিলে মাথাটা ধরে বসে আছে।কাল অনেকবার জিসান ফোন করেছিলো,কিন্তু তিশা অভিমানে রিসিভ করেনি।তিশা জানে এর জন্য জিসান ওকে ছাড়বে না,হয়তো সামনে পেলে থাপ্পড় দিবে।তিশা নিজেও ভয়ে আছে,সাথে জিসানের প্রতি অভিমানও চেপে ধরে বসে আছে।
তাইতো জিসান থেকে দূরে থাকার জন্য কলেজ মিস করলো।কিন্তু তিশা বুঝতে পারেনি,জিসান যে সকাল সকাল এসে হাজির হয়ে যাবে।
'দরজার শব্দে তিশা ভোড়কে গেলো,ভাবলো মা আসছে আবার।তিশা না দেখেই চিল্লিয়ে উঠে,মা বলছি না ভালো লাগছে না,খাবো না।কেনো বার বার ডাকো।কোনও সাড়া না পেয়ে তিশা দরজার দিকে তাকালো।একজোড়া রক্তিম চোখ,যা এখন তিশার দিকে তাকিয়ে আছে।'
-তিশার আত্মা কেঁপে উঠলো আজ জিসানকে দেখে।তার এলোমেলো চুল,পড়নে নরমাল একটা গেন্জী আর টাউজার দেখেই বুঝাই যাচ্ছে ঘুম থেকে উঠে সোজা এখানে এসেছে।

"জিসানের সামনে অগ্রসারে তিশা বার বার শুকনো ঢোক গিলছে।তিশা ভাবছে ফোন না ধরার কারণে রাগাটা স্বাভাবিক কিন্তু এতো বেশি রাগের কারণ কি,ভাই কি সব বলে দিয়েছে কাল কি বলেছি।তিশা আরো কিছু ভাবার আগেই জিসান এমন একটা কান্ড ঘটিয়ে দিলো যা,তিশা জীবনেও ভাবেনি।"

---জিসান তিশার সামনে এসে একটান দিয়ে শরীর থেকে ওড়নাটা ফেলে দিলো।তিশা কিছু বুঝে উঠার আগেই তিশাকে ধাক্কা দিয়ে বিছানায় ফেলেদিলো।সব কিছু এতো দ্রুত হচ্ছে যে,তিশা রিয়েক্ট করতে ভুলে গিয়েছে।
জিসান তিশাকে বিছানার সাথে চেপে ধরে এলোপাথাড়ি কিস করতে থাকে তিশার গালে, কপালে, ঘাড়ে।

'হঠাৎ তিশার হুশ এলো,জিসান কি করছে ওর সাথে।নিজেকে ছাড়াবার বৃথা চেস্টা করতে থাকে।কিন্তু জিসানের শক্তির সাথে পেড়ে উঠে না।আজ জিসানের স্পর্শে কোনও ভালোবাসা নেই আছে শুধু রাগ,ভীষন রাগ তিশার উপর।কিন্তু জিসানের এবারের টর্চার তিশা সহ্য করতে পারলো না।একসময় কেঁদে দিলো।'

---তিশার কান্নায় জিসান চোখ মুখ শক্ত করে, 
কান্না কেনো করছিস(চিল্লিয়ে)।প্লিজ আমাকে ছাড়ুন।কি করছেন আপনে।

"তিশার গালে নিজের নাক ঘষে, কেনো ভালো লাগছে না।জিসানের কথায় তিশার আরো কান্না পেলো।আমি তোর হ্যাসবেন্ড হয়ে তোকে এভাবে স্পর্শ করছি বলে ভালো লাগছে না,তাহলে কি আমার জায়গায় সাব্বির স্যার হলে ইনজয় করতি।
'এবার তিশা করুন চোখে জিসানের দিকে তাকালো,কি বলছেন এসব।লজ্জা করে না আপনার।'

---জিসান একটু বাকা হেসে,লজ্জা!এটাতো নারীর ভূষণ। আমি দিয়ে কি করবো।
তিশা অবাক হয়ে যাচ্ছে জিসানের আজকের বিহেভিয়ারে।জিসানকে কেনো জানি অচেনা লাগছে।

"জিসান তার কনিষ্ঠ আঙ্গুল দিয়ে তিশার গালে স্লাইড করতে করতে নিচে দিকে নামাচ্ছে,আর বলছে--
যেই  স্যারের জন্য তোর পরাণ এমন ছটপট করছে জানিস সেই স্যার তোর কোথায় কোথায় নযর দিয়েছে আর কি করার প্লানিং করেছে।জিসানের কথায় তিশা স্থব্ধ। "

---জিসান উঠে পরে তিশার উপর থেকে,ফ্লোরে পরে থাকা তিশার ওড়নাটা নিয়ে তিশার দিকে ছুড়ে মারে। সাথে সাব্বির স্যারের চিঠি আর ফোনটাও।
এই ফোনে ফ্রেন্ডসদের সাথে তিশাকে নিয়ে এডাল্ট চ্যাটিং করেছে সাব্বির।যা সাব্বিরের প্রতি রাগ আরো বাড়িয়ে দিয়েছিলো জিসানের।

জিসান নিজের চুলটা আঙ্গলের সাহায্যে আঁচড়াতে লাগলো।আর আড় চোখে তিশার দিকে তাকালো।তিশা এখনো কান্না করছিলো।জিসান আর কিছুই বললো না চলে গেলো।

"তিশা নিজেকে একটু সামলিয়ে চোখের পানি মুছে চিঠিটা কুড়িয়ে পড়তে লাগলো।চিঠিটা শুধু চিঠি ছিলো না,এতে ছিলো এডাল্ট কিছু কথা,যা পড়ে তিশার কান দিয়ে ধোঁয়া বের হতে লাগলো।এর পর ফোন চেক করে তিশার অনেকগুলো ছবি পেলো।ম্যাসেনজারে অনেক এসেমেস ছিলো,যা বেশিরভাগ তিশাকে নিয়ে।যা খুবই নোংরা। তিশা বুঝে গেলো সাব্বির স্যার একজন মানসিক বিকৃতি টাইপের লোক।"

---আমাদের সমাজে এই টাইপের কিছু লোক আছে,যাদের আপনে দেখে বুঝতেই পারবেন না তাদের মস্তিষ্কে কি সব নোংরামি আছে।তারা দেখতে তো মানুষের বাচ্চার মতোই হয়।
তাই তাদের আসল রূপটা দেখা যায় না।কিন্তু সময়ের সাথে এদের মানুষ রূপি জানোয়ারটা আস্তে আস্তে প্রকাশ পায়।সাব্বির স্যারও এমনি ছিলো।তাকে দেখে বা তার ভালো মানুষের অভিনয়ে কেউ বুঝতেই পারবে না,মানুষটির মধ্যে কতো নোংরামি ভরা।তাইতো তিশাও বুঝেনি।তিশার মতো বোকা মেয়ের বুঝার কথাও না।

||
||

"জিসান বাসায় এসেই শাওয়ার নিতে চলে গেলো।লম্বা একটা শাওয়ার নিয়ে অফিসে যাওয়ার জন্য রেডি হতে লাগলো।শার্টের কলার ঠিক করার সময় নিজের গলায় আচড়ের দাগ দেখতে পেলো।তিশার নকের আচড়।তখন হয়তো লেগে গিয়েছে।জিসান শার্টটা পড়তে পড়তে কাল রাতের কথা চিন্তা করতে লাগলো।"

---কাল কাগজটা পড়েই মাথাটা খারাপ হয়ে গিয়েছিলো।ঠিকানা নিয়ে জিসান বের হলো সাব্বিরের কোচিং সেন্টারের উদ্দেশ্যে।
ব্যাচেলর বলে নিজের বাসাই কোচিং করায় সাব্বির।যাওয়ার পথে রায়হান কে কল করে সব বলে দেয়।রায়হান জানে জিসানের রাগ অনেক বেশি।রাগের মাথায় কিছু না কিছু করে ফেলবে।আর বিষয়টা যদি তিশার হয়,তাহলে কাউকে খুন করতেও জিসান একবার ভাববেও না।
তাই ফোন পাবার সাথে সাথে রায়হান ওদের কিছু ক্লোজ ফ্রেন্ডসদের সাথে করে নিয়ে গেলো।কিন্তু রায়হান পৌঁছাবার আগেই জিসান কাজ সেড়ে ফেলেছে।মারতে মারতে সাব্বিরের অবস্থা খুবই খারাপ।
আসেপাসের কেউ সাহস পায়নি ধরার।রায়হান গিয়ে জিসানকে আটকালও আর ওদের ফ্রেন্ডসরা রাস্তা থেকে সাব্বিরকে তুলে কিছুটা সামলিয়ে পানি খাওয়াতে লাগলো।

'জিসানের রাগ কিছুতেই কমছিলো না।মারের সময় সাব্বিরের ফোনটা নিচে পড়ে গিয়েছিলো।কি মনে করে যেনো জিসান ফোনটা তুলে চেক করতে লাগলো।এরপরই ফোনে এসব দেখতে পেয়ে।জিসান যেনো হিংস্র বাঘ হয়ে গেলো।এরপর আরেক দফা সাব্বিরকে মারলো।'
-রায়হান ও আটকিয়ে রাখতে পারলো না।পুলিশ ক্যাশ যাতে না হয় এর জন্য সাব্বিরকে জিসানদের হাসপাতালে ফ্রেন্ডসদের দিয়ে পাঠিয়ে দিলো।

"এতোকিছুর পর আবার তিশার এধরনের কথাবার্তা জিসানের রাগ কয়েকশগুন বাড়িয়ে দিয়েছিলো।তাইতো আজ এর জ্বাল মিটালো সাইকোর মতোই করেই।"

---তিশার সাথে তখন এমন করতে চাইনি জিসান।রাগটা এতোই ছিলো যে,নিজেকে কন্ট্রোল করতেও পারেনি।কিন্তু তিশার কান্নামাখা মুখটায় যেনো সব রাগ নিমিষে উড়ে গেলো।তাইতো সাথে সাথে তিশাকে ছেড়ে দিলো।

                       "আয়নায় নিজেকে আরো একবার দেখে নিলো।বিশাল এক এটিটিউড নিয়ে অফিসে যাওয়ার জন্য বের হয়ে গেলো।জিসান জানে ওকে কি করতে হবে আর কিভাবে।তাই ও এখন শান্ত।ঠিক যেমন তুফান আসার আগে প্রকৃতি শান্ত হয়ে যায়।"

---অফিসে ম্যানেজার এর সাথে কিছু বিষয় নিয়ে আলোচনা করছিলো।এমন সময় জিসানের মোবাইলে একটা ফোন আসে,সাথে ভিডিও।ফোনটা রিসিভ করে কথা বলে,ভিডিওটা ওপেন করে একটা ঝটকা খেলো।সাথে সাথে অফিস থেকে বের হয়ে গেলো।রাস্তায় রায়হানকেও পিক করে নিলো।

'-ওয়াট জিসান!কি হয়েছে কি?এতো আর্জেন্ট ডাকলি কেনো।ইয়ার আমি তোদের অফিসের কর্মচারী মালিক না যে যখন তখন বের হয়ে যাবো।

"জাস্ট সেট আপ রায়হান।তুই ভালো করেই জানিস বাবা তোকে জাস্ট শুধু এম্পোলয়ার মনে করেনা।পুরো বিজনেস তোর ভরসায় ছেড়ে দিয়েছে।
তুই কতোটা ইম্পোরটেন্ট অফিসের জন্য সবাই জানে।কিন্তু এখন ওসব বাদদে এটা দেখ।তোর বোন কি করেছে।"

---রায়হান ভিডিওটা ওপেন করে এক মিনিট শোকড এর মধ্যে ছিলো। এটা কি তিশা,সাথে তো নিশি, নিলি ও আছে।আর বাকি সব কে।ওর কোচিং এর ফ্রেন্ডস। 

"তিশা ওর ফ্রেন্ডসদের সাথে নিয়ে হাসপাতালে এসেছে।সাব্বির স্যার এর কেবিনে গিয়ে ব্যাচারাকে টেনে হিচড়ে বেড থেকে ফেলে দিলো সবাই মিলে।
সাব্বির স্যার কিছুই বুঝে উঠতে পারলো না।কি হচ্ছে কি?কাল তো শুধু ধোলাই খেয়েছি, আজ তো গণ ধোলাই ক্ষেতে হবে মনে হয়।
বিস্মিত চোখে সবার দিকে তাকিয়ে আছে।সবাই সাব্বির স্যারকে মারতে লাগলো।সবার হাতে কিছু না কিছু ছিলো।কারো হাতে ক্রিকেট ব্যাট,কারো হাতে লাঠি,কেউ কেউতো কিছু পায়নি বলে ডাল ঘুটনি নিয়ে এসেছে।
সাব্বির স্যার চিৎকার দিতে লাগলো,স্টুডেন্ট আমি তোমাদের টিচার।ভুলে গিয়েছো।"

---তিশা মারতে মারতে বলতে লাগলো,টিচার বলেইতো এতোদিন সম্মান করেছি।কিন্তু তুইতো টিচারের নামে কলঙ্ক।
 হারামি একটা।মেয়েদের নোংরা নযরে দেখিস। কি ভেবেছিলি মেয়েরা অসহায়,দূর্বল।তাই যা খুশি তাই করবি।এই দেখ তোর যম এসে পড়েছে। জানিস আমি কে? আমি তোর যম,লেডি ডন।
আজ তোকে এমন সাইজ করবো যে জীবনে কোনও মেয়ের দিকে তাকাবার আগে দশবার চিন্তা করবি।

'-সাব্বির আর মাইর সহ্য করতে পারছে না, তাই তিশার পা ধরে মাপ চাইছে।.....মারে মা আমারে এবারের মতো ক্ষমা করে দে।দোহাই লাগে আমি আপনাগো টিচার ছিলাম।একবার ক্ষমা কইরা দেন।'

"-এদিক দিয়ে হাসপাতালের কোনও স্টার্ফ ওদের আটকানোর সাহস পাচ্ছে না নিশিকে দেখে।কারণ হাসপাতালটা জিসানদের আর এখানে সবাই জিসানের পরিবারকে চিনে।
তাওহিদ খবর পেয়ে দৌঁড়ে আসে।নার্সদের সাহায্যে মেয়েদের কে সাব্বিরের কাছ থেকে সরিয়ে ফেলে।তাওহিদ এর ইশারায় কিছু স্টার্ফ এসে সাব্বিরকে নিয়ে যেতে নিলে,তিশা চিল্লিয়ে উঠে,স্টোপ।"

--- তাওহিদ তিশাকে থামানোর চেস্টা করে।তিশা তাওহিদ কে বলে,ভাইয়া আমি শুধু কথা বলবো এক মিনিট।
তিশা সাব্বিরের সামনে গিয়ে,অসুস্থ বলে এক সপ্তাহের  টাইম দিলাম এই শহর ছেড়ে চলে যাবি কাথা বালিশ নিয়ে।তা না হলে এটা দেখছিস,সাব্বিরকে মারার ভিডিও ওরাও করেছে।
এটা ফেসবুকে ভাইরাল করে দিবো।তখন কি হবে জানেন তো স্যার।সাব্বির ঢোক গিললো।আর মাথা নেড়ে তিশার কথার সায় দিলো।
তিশা আর ফ্রেন্ডসরা যখন সাব্বিরকে মারছিলো,তারই একটা ভিডিও করে হাসপাতালের একজন ডাক্তার (জিসানের ফ্রেন্ড) জিসানকে পাঠিয়েছিলো। 

||
||

"তিশা, নিশি ও তাদের ফ্রেন্ডসরা হাসপাতাল থেকে হাসতে হাসতে বের হলো।কিন্তু সামনে জিসান আর রায়হানকে দেখে বিলাইয়ের মতো চুপছে গেলো সবাই।তিশার ফ্রেন্ডসরাও জিসান ও রায়হানকে খুব ভালো করে চিনে।তাই তারা সময় বুঝে তিশা ও নিশিকে ফেলে কেটে পড়লো।"
'তিশা নিশির কানে কানে ফিসফিসেএ বলে ওই এই দুই বাদর এখানে কি করে।তুই বলেছিস আমরা এখানে আসছি।'
-একদম না,তিশা।আমার ক্রাশের কসম। মনে হয় তাওহিদ ভাই ফোন করে নালিশ দিয়েছে।নিশি একটু কেঁদে কেঁদে কথাটা বলে।
তোর হিটলার না জানি আজ কি করে আমার সাথে।

'তোর সাথে মানে,ওই ছেমরি আমাকে মনে হয় ছেড়ে দিবে।অলরেডি সকালে ট্রেইলার দেখিয়েছে।'

---নিশি তিশার দিকে সন্দেহ নযরে তাকিয়ে সকালে কি হয়েছে।

'এসব কথা এখন শুনবি নাকি পালাবি।আগে এখান থেকে কেটে পরি,বাকি সব পরে।নিশি ও তিশা পালাতে নিলে রায়হান খপ করে ওদের হাত দুটো ধরে ফেলে।'

"ভাইয়া ছেড়ে দেনা প্লিজ। আমার কোনও দোষ নেই।সব দোষ এই চুন্নিটার।"

---কি বললি তুই তিশা।নিশি তিশার দিকে তেড়ে আসতে নিলে,রায়হান নিশির হাত ধরে, টান দিয়ে সরিয়ে ফেলে।ব্যাস একদম চুপ।নিশি ও তিশার ভয়ে মাখা মুখটা দেখে হেসে উঠে রায়হান।সিরিয়াসলি তোরা দুইটা ভিতুর ডিম নাকি লেডি ডন।তো আমার লেডি ডন আপনাদের গ্যাং কোথায়।
ডনকে ফেলে ভয়ে পালিয়ে গিয়েছে।এখন কি হবে।নিশি ও তিশা এখনও রায়হানের দিকে তাকিয়ে আছে। ভাইয়ের মতিগতি বুঝতে পারছে না।একবার আড় চোখে জিসানকেও দেখে নিলো তিশা।

"সানগ্লাস পড়ে বুকে হাত রেখে গাড়িতে হেলান দিয়ে নিরব দর্শকের মতো দাঁড়িয়ে আছে।কিন্তু সবথেকে বেশি রিয়েক্ট তারই করার কথা ছিলো।জিসানের এই নিরবতা তিশাকে যেনো বেশি আঘাত করছে।এতোটা আঘাত তো জিসান ওকে মারলেও পেতো না।"

---রায়হান তিশা ও নিশির হাত ধরে টেনে গাড়ীর সামনে যেতে যেতে বললো।চল তোদের আজ ট্রিট দেবো,আমার পক্ষ থেকে।
লেডি ডন বলে আবার ভুবন বুলানো হাসি দিলো।মনে হয় এবছরের শেরা জোকস ছিলো এটা।

'-জিসানও রায়হান গাড়ীর সামনে বসেছে আর পেছনে নিশি ও তিশা।নিশিতো ফোনেই ব্যস্ত,কিন্তু তিশার মনটা ভালো না।
এতো সময়ের মধ্যে জিসান একবারও ওর দিকে তাকায়নি।এটা দেখে তিশার মনটা অস্থির হয়ে পরেছে।জিসানের সাথে কথা বলতে চায়,কিন্তু পারছে না।ওরা চার জন একটা রেস্টুরেন্ট থেকে লাঞ্চ সেরে নিলো।এখানেও রায়হান নিশি ঝগড়া করলেও,তিশা ও জিসান চুপ ছিলো।'

---লাঞ্চের পর ওরা কিছুক্ষণ গাড়ীতে করে ঘুড়লো।হঠাৎ নিশি জিদ ধরলো রাস্তার ওপর পাশে বসে থাকা কুলফি আইসক্রিম খাবে।জিসান গাড়ী সাইড করে নেমে পড়লো।
রায়হান কে বললো ওদের আইসক্রিম খাইয়ে আনতে,ও যাবে না।
'তিশাও খাবে না বলে,রায়হান নিশিকে নিয়ে গেলো।রাস্তা পার হবার সময় খুব সাবধানে নিশির হাত ধরে পার করলো রায়হান ।নিশিতো খুশিতে গদগদ করতে লাগলো।এই ভরসার হাতটাইতো ও ধরতে চায় সারা জীবনের জন্য।'

"গাড়ীতে হেলান দিয়ে জিসান মোবাইল টিপছে। তিশা সামনে এসে দাঁড়ালেও জিসান একবার তাকালো না।জিসানের ইগনোর টা তিশা মেনে নিতে পারছে না,তবুও সাহস করে জিসানের পাশে দাঁড়িয়ে জিসানের দিকে তাকিয়ে মাথাটা নিচু করে.... আম সরি।
আমি আসলে জানতাম না.....তিশার কথা শেষ করার আগেই জিসানের ফোন আসলে জিসান তিশা থেকে একটু দূরে সরে দাঁড়ায়।"

---তিশা তার বিষণ্ণতা ঘেরা মনটা নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে।জিসানের দিকে লক্ষ্য করে দেখে যে,জিসান কারো সাথে খুব হেসে কথা বলছে।তিশা শুনার জন্য জিসানের একটু কাছে গেলে লাবনির নামটা শুনে ওখানেই  থমকে যায়।
জিসানের মুখে লাবনি নামটা কেনো জানি একদম সহ্য হয়না তিশার।চোখগুলো দিয়ে পানি পড়ছে,কিন্তু তিশার সেদিকে কোনও মনোযোগ নেই।তিশা বেসামাল হয়ে সামনে যেতে থাকলে,হঠাৎ একটা গাড়ী এসে...
আআআআআআআআ।

চলবে........।

[ভুলত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টতে দেখবেন।মতামত জানাবেন।]

No comments