ভাইয়ের_বন্ধু_যখন_বর😍 --------(season 2) [🖤] part_29🍁
"কোনো জিনিস মন থেকে চাইলে,আল্লাহ তার বান্দাকে কখনো নিরাশ করেনা।আর চাওয়াটা যদি পবিত্র হয় তাহলেতো কথাই নেই।জিসানের প্রতিটি চাওয়ায় ছিলো তিশা।মনের ভেতরে প্রচণ্ড ভাবে বিশ্বাস করতো,তিশাই সেই নারী যাকে বিধাতা ওরই পাজর দিয়ে সৃষ্টি করেছে।তাইতো জীবনে জিসান অন্য কোনও নারীতে আসক্ত হয়নি।কেনো জানি এই এক নারীর মাঝে পুরো পৃথিবী খুঁজে পায়।তাইতো সম্পর্কের প্রথমেই সম্পর্ককে একটা পবিত্র নাম দিয়ে দিয়েছে।নিজের ভালোবাসার জোরে সেই মেয়েটিকেই নিজের অর্ধাঙ্গিনী বানিয়ে ফেলেছে।আর অর্ধাঙ্গানীকে চাওয়া,খুব করে চাওয়া নিশ্চয়ই দোষের কিছুনা।আর আজ ওর সব চাওয়া পূর্নতা লাভ করতে যাচ্ছে।সবার মর্জিতে জিসান ও তিশার বিয়ের ডেট ফিক্সড হয়ে গেলো।
____Destination weeding জিসানের ইচ্ছা।তাইতো নিজের ইচ্ছা পূরণ করার জন্য শহর থেকে দূরে একটা রিসোর্ট ভাড়া করে নিলো।মেহমানদের সুবিধার জন্য আশেপাশের হোটেল গুলোও বুক করে ফেললো।বিয়ের পাঁচদিন আগেই সবাই রিসোর্ট এ আসার প্লান হলো।কিন্তু এসবের কিছুই তিশার কানে এখনো পৌঁছায়নি।বিয়েতে তিশার জন্য ড্রেস হতে শরু করে জুয়েলারি সব জিসান নিজে চয়েজ করেছে।তিশাকে নিজের পছন্দ রং এ সাজাবে বলে।তবে প্রতি ক্ষেত্রে তিশার পছন্দ অপছন্দ অবশ্যই মাথায় রেখেছে।
তিশাকেও সারপ্রাইজ দেওয়ার সব আয়জন শেষ করেছে জিসান।তাদের মেহেদি হতে শুরু করে, গায়ে হলুদ,বিয়ে এখানেই হবে।আর রিসেপশনের আয়েজন ঢাকায় করা হয়েছে।
"-সকাল সকাল তিশার মায়ের চিল্লাচিল্লিতে ঘুম ভেঙ্গে গেলো তিশার।ঘুম ঘুম চোখেই তিশা মায়ের দিকে তাকিয়ে, কি হয়েছে মা।এমন ষাঁড়ের মতো চিল্লাচ্ছো কেনো।মায়ের কিছু বলার আগে রায়হান ও চিল্লাতে চিল্লাতে তিশার রুমে আসলো।"
--কি হলো মা,তেমাদের হয়নি এখনো।
'আমার তো হয়েছে,তোর এই কামচোরা বোনকে বল,কখন ধরে ডাকছি উঠার নামই নেয়না।'
---তিশা ছোট ছোট চোখ দিয়ে মা আর ভাইয়ের কার্যকলাপ বুঝার চেষ্টা করছে।ভাইয়া কি হয়েছে।কোথাও যাবে তোমরা।বলার সাথে সাথে মা আর ভাইয়া একধমক দিয়ে,রেডি হতে বলে চলে গেলো।তাও আবার নতুন ড্রেস পরে।মাথায় আমার কিছু আসছে না,হলো কি এদের।
"দুপুরে আমাদের গাড়ী এসে পৌঁছালো,একটা রিসোর্ট এর সামনে।গাড়ীটি রিসোর্ট এর সামনে থামনোর পরই তিশার চোখ ছানাবড়া হয়ে যায়।এটা কি দেখছে ও।এতো সুন্দর ভিউ ওর আগে দেখেনি তিশা।বিশাল এলাকা জুরে রিসোর্ট টি বানানো হয়েছে।চারপাশে নাম না জানা হাজারো ফুল দেখা যাচ্ছে।তার উপর পুরো রিসোর্ট টিকে অসম্ভব ভাবে সাজানো হয়েছে মনে হয় কারো বিয়ে।তিশার মাথায় কিছুই আসছে না।কার বিয়ে এখানে,রিসোর্টের ভেতরে পা দেওয়ার সাথে সাথে চারপাশ থেকে গোলাপের পাপড়ি ফেলা হচ্ছে তিশার দিকে।তিশা আশ্চর্যের চরম সীমায় আছে এখন।
সামনে যতো বাড়ছে,ততোই মুগ্ধ হচ্ছে।আরো বেশি অবাক হলো সামনে জিসানও তার পুরো পরিবারকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে।তিশা লক্ষ্য করলো,আজ জিসানের চেহারায় এক আলাদা উৎফুল্লতা দেখা যাচ্ছে।সাদা পান্জাবী আর চুড়িদার পায়জামা পরে আছে।মুখে তার দামী সেই কিলার স্মাইল। উফ!কি যে লাগছে না।
তিশা সামনে এসে জিঙ্গেস করলো,আন্টি কারো কি বিয়ে এখানে।এতো আয়োজন কেনো।"
---আমার কথা শুনে সবাই একসাথে হেসে উঠলো,এমন কি বললাম আশ্চর্য!আমি মুখটা কচুমোচু করে তাকিয়ে আছি।সবাই এখনো হাসছে।
"তখনি জিসান আমার হাতটা তার মুঠোতে নিয়ে বললো,হুম।একটা পিচ্ছি মেয়ের বিয়ে এখানে। আমি এখনো জিসানের দিকে তাকিয়ে আছি বলে,ম্যানেজমেন্ট এর এক লোককে জিসান ইশারা করলে সে ট্রেতে করে ফুলের পাপড়ির উপর একটা কার্ড আমার সামনে নিয়ে আসলো।
জিসান ইশারা করে আমাকে কার্ডটা দেখতে।কার্ড টা খুলে আমার একহাত মুখে চলে যায়।তার মানে এখানে আমার আর উনার বিয়ের আয়োজন চলছে।আমি অবাক হয়ে জিসানের দিকে তাকাই।আর উনি চোখ টিপ মেরে আমার কানের কাছে এসে বলে।
wellcome, to my kingdom..... jan....
---লজ্জায় তিশা পুরো লাল-নীল হয়ে গেলো।ওর বিয়ে অথচ ওরই খবর নেই।সবই নিশ্চয়ই এই হিটলারের প্লানিং।
সবাই তার পর তিশাকে ভেতরে নিয়ে গেলো।তিশার রুম দেখিয়ে কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিতে বললো।
||
||
"এখানকার রুমগুলোও অনেক সাজানো গুছানো।তবে তিশার সবথেকে ভালো লেগেছে রুমটার বারান্দাটা।সামনে তাকলে কিছু দূরে বিশাল একটা নদী দেখা যাচ্ছে।হয়তো রিসোর্টটা কোনও নদীর আসেপাসে বানানো।তিশার রুমের বারান্দাটা থেকে রিসোর্টের সামনের অংশটাও দেখা যায়।তিশা খেয়াল করলো,গেট দিয়ে দুটো মাইকো প্রবেশ করেছে।আর জিসান হয়তো এদের জন্যই ওয়েট করছিলো।গাড়ী থেকে কিছু ছেলেমেয়ে নেমে আসলো।দেখলেই বুঝা যাচ্ছে এরা এদেশের না।নিশ্চয়ই বিদেশ থেকে আসছে।মেয়েগুলোর শরীরে ওয়েস্টার্ন ড্রেস।ঠিক যেমন লাবণি আপু পরতো।জিসান মেহমানদের নিয়ে ভেতরে প্রবেশ করে।"
___সন্ধ্যার দিকে নিশি ও নিলু আসে আমার রুমে।আমি নিলুকে দেখে কিছুটা অবাক হলাম।তুই এখানে,নিশি দাওয়াত দিয়েছে তাইনা।নিশির দিকে তাকিয়ে।
"না আমাকে ভাইয়া ইনভাইট করেছে,শুধু আমাকে না,আবিরকেও।"
___তাই নাকি,রিয়েলি!হিটলার এতো ভালো হলো কি করে।
'তিশা দেখ আমার ভাই এমনেই ভালো,তুই সব সময় উল্টা বুঝিস।'
----আমি নিশিকে জরিয়ে ধরে,তাই নাকি।তোর ঐ খারুস ভাই যে এতোকিছু করলো,আমাকে না জানিয়ে এটা কি।
"এটাতো তোকে সারপ্রাইজ দেওয়ার জন্য।"
---আমি সারপ্রাইজ না শোকড হয়েছি বুঝলি।
"হুম,বুঝছি।এখন চল।"
---কোথায়?
"-নিচে,সবাই বাগানের লনে আড্ডা দেবো বলে,আসর বসেছে।ভাইয়া তোকে নিয়ে যেতে বলেছে।ভাইয়ের ফ্রেন্ডরাও এসেছে।তিশা একটু থেমে,তোরা আমাকে এ অবস্থায় নিবি,দাঁড়া অন্তত ড্রেসটা চেন্জ করেনি।"
---ওকে,তারাতারি কর।
'-লনে জিসানের কাজিন আর ফ্রেন্ডসদের আড্ডা চলছে।আমাকে দেখা মাত্র সবাই টোন মেরে বলছে,দেখো অবশেষে দুলহানের আগমন ঘটলো। আমরা তো ভাবলাম,আজতো দেখাই পাবো না।এদের একেক জনের একেক কথায় লজ্জায় আমার গাল দুটো ব্লাশন ছাড়াই লাল হয়ে গেলো।কয়েকজন বাদে প্রায়ই সবাই আমাকে চিনে তাইতো আমাকে টোন মারতে তাদের ভালোই লাগছে।আড় চোখে জিসানকে খুঁজতে নিলে,একি দুটে চোখ আমার দিকে তাকিয়ে মিটিমিটি হাসছে।তবে আজ তার এই হাসি আমার অসহ্য লাগছে।আমাকে একা এখানে রেখে বন্ধুদের সাথে আড্ডা চলছে মিঃ জিসানের।কিছুক্ষন পর নিজেই আমার কাছে এসে তার বিলাতি ফ্রেন্ডসদের সাথে পরিচয় করে দিলো।বিদেশ থেকে এলেও এদের সকলের আচরন খুবই মার্জিত ছিলো।
প্রায় বেশ রাত পর্যন্ত আমাদের আড্ডা চললো,এরপর সবাই যে যার রুমে চলে গেলো।'
---নেক্সট মর্নিং প্রচণ্ড হৈ চৈ আর মিউজিক এ আমার ঘুম ভাঙ্গলো।বারান্দায় এসে বাহিরে তাকিয়ে দেখি। জিসান ওর ফ্রেন্ডস আর কাজিনদের সাথে ভলিবল খেলছে বাগানে।কি লোকরে বাবা।
ঘেমে পুরো শরীর একাকার অথচ সে মহা আনন্দে থ্রী কোয়ার্টার প্যান্ট আর ওয়াইট কালারের সেন্ডও গেন্জী পরে এই গরমে খেলায় মেতে আছে ।আমার কেনো জানি মনে হচ্ছে এই লোক বিয়ে করতে আসেনি,ফ্রেন্ডসদের সাথে পিকনিক এ আসছে।উনাকে দেখেতো এমনিই মনে হচ্ছে এখন আমার।
"রায়হান ক্লান্ত হয়ে,পানি খেতে আসলে,সামনে কিছু একটা দেখে রেগে দাঁড়িয়ে যায়।
-জিসানও রায়হানের পিছনে পিছনে আসছিলো।রায়হানকে এমন স্থির দেখে ওর দৃস্টির বরাবর তাকালো।
-জিসান ওদিকে তাকিয়ে বললো,তোর বোনকে একটা আছাড় মারতে মন চাইছে আমার।
"রায়হান ও বিরবির করে বলে উঠলো আমারও মন চাইছে আছাড় মারতে তোর বোনকে।"
---তাহলে,দাঁড়িয়ে আছিস কেনো এখানে।
"রায়হান অবাক করার দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে জিসানের দিকে।কারণ ও যে কথাটা নিশিকে উদ্দেশ্য করে বলেছিলো তা কি জিসান বুঝেছে।"
---আর জিসান চললো,তিশাকে আছাড় মারতে।
"তিশা ও নিশি জিসানের কাজিন নীড়, হীরা আর ওর ফ্রেন্ডসদের সাথে কথা বলছিলো।আর কিছু একটা বিষয় নিয়ে খুব হাসছিলো।সাথে আবির ও নিলুও ছিলো।কিন্তু তিশাতো ভুলেই গিয়েছিলো,যে দুটো চোখ সব সময় ওকে নযরে রাখে।
হঠাৎ সামনে জিসানকে আসতে দেখে,হীরা,নীড় সহ সবাই পালালো।কিন্তু তিশা কিছুই বুঝলো না,সবাই কোথায় গেলো হঠাৎ।পিছনে ঘুরে জিসানকে দেখে তিশাও শোকড!এবার বুঝলো সবাই কেনো গেলো।
তিশাও জিসানকে না দেখার ভ্যান করে চলে যেতে নিলে,জিসান হাত ধরে তিশাকে হ্যাচকা টান দিয়ে সামনে আনে।"
---কি সমস্যা কি?(তিশা)
"জিসান কিছু না বলেই তিশাকে কোলে তুলে নেয়।তিশাতো ছটফট করতে লাগলো নামানোর জন্য,কিন্তু জিসান ডোন্ট কেয়ার লুক নিয়ে একটা ডেবিল হাসি দিলো।তিশা এই হাসির রহস্য বুঝার আগেই জিসান তিশাকে নিয়ে ঝাপ দিলো সুইমিংপুল এ।"
---তিশা চেঁচিয়ে বলে উঠলো নোওওওওও।
"-কিন্তু চিৎকার করেও লাভ হয়নি।তিশা অলরেডি পানিতে।হঠাৎ ঝাপ দেওয়ায় নাকে মুখে পানি ঢুকে কাশতে লাগে তিশা।তার উপর তিশার পানিতে ফোভিয়া থাকায়,জিসানকে শক্ত করে ঝাপটে ধরে আছে।প্লিজ জিসান আমাকে ছাড়বেন না প্লিজ।"
---তিশার মুখে এই প্রথম নিজের নাম শুনে জিসান যেনো সব ভুলে গিয়েছে। তিশার কোমড় জরিয়ে একদম কাছে টেনে নিলো।মুহুর্তেই দুটো ভেজা শরীর একে ওপরের সাথে লেপ্টে গেলো।হঠাৎ দুজন সব কিছু ভুলে একে ওপরের দিকে তাকিয়ে রইলো।যেনো আজ চোখের ইশারায় মনের কথা হবে।
"কিছুক্ষণ পর মিউজিকের উচ্চ শব্দে তিশার ধ্যান ভাঙ্গে।জিসানকে ঢেলে সরাতে নিলে,এক ইঞ্চিও সরাতে পারলো না।কেমন নেশা লাগা চোখে এখনো জিসান চেয়ে আছে।
তিশা কাপাকাপা গলায় বললো,ছাড়ুন আমায়।জিসান যেনো কিছুই শুনলো না।বরং তিশার দিকে তাকিয়ে সামনে আসা ভেজা চুলগুলো কানের পেছনে গুজিয়ে দিয়ে কানে কানে বললো,আর মাত্র তিনদিন।
এর পর আমি কিন্তু আর কন্ট্রোল করতে পারবো না নিজেকে জান।জিসানের কথার মানে বুঝতে পেরে, তিশা যেনো লজ্জায় পানিতেই মিশে যেতে মন চাইছে।উফ!"
---নিশিও তখন পালাতে গিয়ে রায়হানের সামনে পরে গেলো।মুখে একটু মেকি হাসি দিয়ে পাশ কেটে চলে যেতে নিলে।রায়হান হ্যাচকা টান দিয়ে সামনে আনে।ঘটনার আকস্মিক নিশি ভয় পেয়ে যায়।কিন্তু ভয়টা কিছুক্ষণ পর রাগে পরিণত হয়।কারণ রায়হান নিজের রাগ কন্ট্রোল করতে নিশির মাথায় একবোতল পানি ঢেলে দেয়।
"এসব কি রায়হান ভাই।"
---গরম,প্রচণ্ড গরম তো। তাই ঠাণ্ডা করছি।
"আপনার গরম লাগলে,আপনি গিয়ে ডুব দেন কোথাও আমাকে কেনো ভিজালেন।চিল্লিয়ে।"
---কারণ আগুন লেগে যাচ্ছিলো,তাই সময় থাকতে নিভিয়ে দিলাম।আবার লাগলে এবার পুড়িয়ে ফেলবো।বুঝলি!
রায়হানের কথা নিশির মাথার উপর দিয়ে গেলো।কি বলে গেলো।পাগল নি।
||
||
"আজ তিশার মেহেদি। গাড় সবুজ রং এর একটা সিল্ক শাড়ীর সাথে,হালকা কিছু ওর্নামেন্ট পরানো হলো।মেহেদি দিতে জাতে সমস্যা না হয়,তাই চুলগুলোকে কিছুটা এলোমেলো খোঁপা করে রাখে।মাথায় একটা বড় টিকলি পড়িয়ে দিলো।তিশার জন্য আলাদা বিউটিশিয়ান আনা হয়েছে।তারাই মেহেদির জন্য তৈরি করে দিলো তিশাকে আজ।"
___মেহদি দেওয়ার জন্যও আলাদা আর্টিস্ট এসেছে।আমি হাত রেখে ওয়েট করছি তারা মেহেদি না দিয়ে কারো জন্য ওয়েট করছে।হঠাৎ ডিজে মিউজিক চালু করলো।আর আমার সামনে কিছু মেয়ে নাচতে লাগলো।
ফুল ভলিউম এ গান চলছে,
O Mehandi Pyar Wali Hatho Pe Lagogi
Ghar Mere Bad Gair Ka Basaogi
Ho Mujhe Marne Se Ho Mujhe Marne Se
Ho Mujhe Marne Se Pehle Hi Yakin Tha
Ki Ye Kam Mere Bad Karogi
O Dil Tod Ke Hasti Ho Mera
Wafaye Meri Yad Karogi
O Dil Tod Ke
Haa Dil Tod Ke Hasti
Ho Mera Wafaye
Meri Yad Karogi
O Dil Tod Ke
Karti Thi Jab Baat Lagakar
Thar Thar Jaiss Fool Hain Jharte
Hoth Hai Tere Jaise Gulab Ke
Do Latte Aptte Apas Me Ladte
Mai Bhi Lada Un Logo Se..
Jo kahte The To Nakli Hai
Rishte Tode Yaar Bhi Chhode
Tere Liye Ki Tu Aski Hai
Asli Yaha Par Koi Nahi.
Teri Jaisi Firti Lakhon Hai
Dil Loot Ke Ese Hasti Hai
Tu Ladki Hai Daku Hai
Kay Yaad Wo Jamana Mere Payar Ka
Chain Lut Na Tu Dil Ke Karar Ka
Kay Yaad Wo Jamana Mere Payar Ka
Chain Lut Na Tu Dil Ke Karar Ka
Ho Jab Dunia Mein Jab Dunia
Mein Main Na Raha
To Kise Barbad Karogi
O Dil Tod Ke Hasti Ho Mera
Wafaye Meri Yaad Karkgi
Ho Dil Tod Ke
Ho Dil Tod Ke Hasti Ho
Wafaye Meri Yad Karogi
Ho Dil Tod Ke Hasti Ho
Wafaye Meri Yad Karogi
___সেই গানের মাঝেই মেয়েগুলো ইশারা করে সামনে দেখাচ্ছে, আমি তাকিয়ে তো ক্রাশড।ও মাই গোড!আমি সত্যিই উনার উপর ক্রাশ হলাম আজ।আমার বরটাও আমার সাথে মেচিং করে,গাঢ় সবুজ রং এর পান্জাবী আর উপরে কুটি পরে আমার দিকে আসছে।সবার আগে আমাকে মেহেদি দিবে বলে।আমিতো চোখেই ফেরাতে পারছিনা।
সবাই বলে,বিয়ের খবর পেলে নাকি মেয়েরা সুন্দর হয়ে যায়।এদেখি উল্টা,দিন দিন বর আমার আরো বেশি হ্যান্ডশাম হয়ে যাচ্ছে।
উনি কখন যে এসে আমার হাতে উনার নামটা লিখেছে বুঝতেও পারলাম না।এর পর কি সুন্দর ফ্রেন্ডস আর কাজিনদের সাথে গানের তালে তালে নাচতে লাগলো।আমিতো চোখই ফিরাতে পারছি না।মন চাইছে নিজের চোখের থেকে একটু কাজল নিয়ে উনাকে লাগিয়ে দি।
---মেহেদি অনুষ্ঠানও ভালো ভাবে শেষ হলো।বর আমার ভালোই এন্জয় করেছে।মনে হলো তার একারি বিয়ে,আমি মনে হয় মেহমান। বেড়াতে এসেছি।তবে আজ থাকে নাচতে দেখে আমি নিজেও কিছুটা অবাক।সবসময় সিরিয়াস চেহারা নিয়ে ঘোরা আমার বরের মাঝে যে এখনো এতোটা বাচ্চামি লুকিয়ে আছে,তাতো আজ তাকে না দেখলে জানতামই না।
"হঠাৎ কারো নিশ্বাস এসে আমার পিঠে বারি খাচ্ছে। তাকিয়ে দেখার আগেই আমার শাড়ীর খোলা অংশে হাত ঢুকিয়ে আমাকে নিজের সাথে জরিয়ে নিলো।তার পারফিউম এর মাতাল করা ঘ্রাণটা আজ আমাকে যেনো আরো মাতাল করছে।দুহাতে দুপায়ে মেহেদি বলে,নড়তেও পারছিলান না।স্ট্যাচু হয়ে বসে আছি।আর জিসান সেই সুযোগটাই কাজে লাগাচ্ছে।কখনো কানে শুঁড়শুঁড়ি দিচ্ছে,কখনে কোমড়ে।আর আমিতো না উঠতে পারছি,না উনাকে বাধা দিতে।আমার এ অবস্থা দেখে মিটিমিটি হাসছে সাহেবে।"
---সমস্যা কি? আমাকে এভাবে টর্চার করছেন কেনো।
"আমি কখন তোকে টর্চার করলাম।আমি কি তোকে মেরেছি,জাস্ট একটু....... ইশারায় দেখালো।"
---আমি কিঞ্চিত রাগ দেখিয়ে,আপনি বেহায়া হয়ে যাচ্ছেন দিন দিন, এভাবে চলতে থাকলে বিয়ের আগেই পালাবো আমি এখান থেকে।
"একথা শুনার পর জিসান আমার পেটটা খামচিয়ে ধরলো।আমি ব্যাথায় আ আ করে উঠলাম।কিন্তু এতে উনার কোনও ভ্রূক্ষেপ নেই।আমাকে নিজের সাথে একদম মিশিয়ে,চেস্টা করে দেখতে পারিস।এটা আমার রাজ্য।আমার অনুমতি ছাড়া একটা মোশাও ডুকতে পারবেনা,না পারবে বেড়তে।এতো ইজি না জান আমার কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়া।
সো এসব উল্টাপাল্টা চিন্তা বাদ দিয়ে,হা কর।অনেক সময় হয়েছে,তোর কিছুই খাওয়া হয়নি।তাই আমি খাবার নিয়ে এসেছি।"
___কি দরদ,ইস!ব্যথা দিয়ে মলম লাগাতে আসে।হিটলার কোথাকার।জীবনেও ভালো হবে না।
জিসান নিজেও খেলো,আমাকেও ঢেসে ঢেসে খাওয়ালো।আজব মানুষ।
||
||
"আজ গায়ে হলুদ। হলুদের আয়োজনও বাগানে করা হয়েছে খোলা জায়গায়।তবে খুব সুন্দর করে ডেকোরেশন করা হয়েছে।বাসন্তী রং এর সিল্ক কাতান এর উপর তাজা ফুলের গহণা।আর কোনও আর্ণামেন্ট আমাকে আজ পড়ানো হয়নি।শুধু ফুল দিয়ে আমাকে ভরিয়ে তুলেছে।যেহেতু ছেলে মেয়ে একই জায়গায় তাই গায়ে হলুদও একসাতে আয়োজন করা হয়েছে।গায়ে হলুদের তত্ত্ব গুলোও খুব সুন্দর করে সাজানো হয়েছে।শুনেছি এসব নাকি তানজিলা ভাবি নিজের হাতেই করেছে।সত্যিও অসাধারণ একজন নারী।যতোদেখি অতোই মুগ্ধ হই আমি।কখনো কোনও অভিযোগ করে না,তার যেনো কারও প্রতি কোনও অভিযোগই নেই।এমনকি তাওহিদ ভাই তার হাসপাতালে এতোই ব্যস্ত থাকে যে,ভাবিকে সময়ও দিতে পারেনা।তবুও কখনো ভাইয়ার সাথে মুখ কালো করাতো দূরে থাক রাগও করতে দেখি নি।তারমতো একটা বড় বোনের খুব শখ ছিলো আমার।আর আজ জিসানের জন্য পেয়েও যাচ্ছি।"
____হলুদে নাকি গোলাপজল,চন্দন ও দুধ মিক্সড করে এনেছে,জাতে কনের সৌন্দর্য আরো প্রকাশ পায়।বাহ কি আদর!প্রথমে জিসানকে হলুদ ছোঁয়ালো,কারণ বরের ছোঁয়ানো হলুদই নাকি কনেকে দিতে হয়।তবে এটাতো মিঃ জিসানের হলুদ বলে কথা।তার আগে কি আমাকে কেউ হলুদ ছোঁয়াতে দেবে,ইম্পসিবল।
উনার কপালে লাগানো হলুদ থেকে হলুদ নিয়ে আমার দুগালে লাগিয়ে দিলো।ইস কি লজ্জা!আশেপাশের সব আত্মীয় স্বজন মিটমিট করে হাসছে।আর এ লোকের তাতে কিছু আসে যায় আসেনা।কিন্তু আমার কথাতো চিন্তা কর।
"এরপর সবার আগে আমার বাবা মা,ও জিসানের বাবা মা আমাদের হলুদ লাগালো।অদ্ভুত বিষয় হলো,রায়হান ভাই ও নিশি দুজন একসাথে এলো হলুদ লাগাতে।কিন্তু এসে দুজন ঝগড়া করা শুরু করে দিয়েছে।কে আগে হলুদ দিবে তা নিয়ে।"
-হঠাৎ জিসান ধমক দিয়ে বললো,এতো ঢং না করে একসাথে হলুদ দিয়ে বিদায় হো তোরা।জিসানের কথা শুনে আমরা তিনজনেই তাকালাম তার দিকে।
রায়হান ভাই ও নিশি এরপর চুপচাপ একসাথেই হলুদ দিয়ে চলে গেলো।
- আমি আসলে বুঝি না,এই লোকটি রায়হান ভাই ও নিশির ব্যাপারটা জানে কিনা।মাঝে মাঝে একটু সন্দেহ হয়।"
___নিশি হারামি কিছু হলুদ নিয়েও গেলো,এটা আর কেউ না দেখলেও আমি ঠিকই দেখেছি।খুব ভালো করে জানি কেনো।নিশি হলুদ নিয়ে কাউকে খুঁজছে। হঠাৎ পেয়েও গেলো তার কাঙ্ক্ষিত ব্যক্তিকে।রায়হান রিসোর্ট এর লোকদের সাথে কথা বলছিলো আয়েজন নিয়ে।নিশিও এসে পাশে দাঁড়ালো।নিশিকে দেখে রায়হান ভ্রকুচকে বললো,ওয়াট!
"নিশি মুখে একটা বিস্তৃত হাসি এনে,জানেন রায়হান ভাই বর কণের হলুদ নাকি আন মেরিডদের লাগালে,তাদের বিয়ের ফুলও নাকি ফুটে তারাতারি।"
___তাই নাকি,তোকে এসব হাবিজাবি কথা কে শিখায় বলতো।
"হাবিজাবি না,সত্যি!"
----ওকে তুই লাগিয়ে নে বেশি করে,তাহলে তিশার বিয়ের পর তোর বিয়েটারও আয়োজন সেরে ফেলবো।কি বলিস!
"নিশি একটু হেসে,তার জন্যই তো এসেছি।"
---মানেএএ!
"কিছু বোঝার আগেই নিশি ওর দুহাত ভরা হলুদ রায়হানের মুখে মেখে দিলো,তার জন্য রায়হান মোটেও প্রস্তুত ছিলো না।
আপনার বন্ধুর বিয়ে,আপনি কুমাড়া থাকবেন কেনো।হলুদ দিয়ে দিলাম,যাতে আপনার বিয়েটাও তারাতারি হয়ে যায়।হলুদ দিয়েই নিশিতো দৌঁড়।আজকে আর ওকে কেউ খুঁজেও পাবেনা।
আর রায়হান সেতো শোকড!
No comments