Update Story
📢 গল্পঃসিনিয়র_খালাত_বোন_যখন_বউ পর্বঃ০৬    📢 গল্পঃসিনিয়র_খালাতো_বোন_যখন_বউ পর্বঃ০৫    

ভাইয়ের_বন্ধু_যখন_বর😍 --------(season 2) [🖤]part_31🍁




"আজকের সকালটা জিসান ও তিশার নতুন জীবনের সূচনা করছে।দীর্ঘ অপেক্ষার পর জিসান আজ তিশাকে পরিপূর্ণ ভাবে পেয়ে যে।নো পৃথিবীর সব সুখ পেয়ে গেলো।এ এক অদ্ভুত অনুভূতি।একটা চাদরের নিচে দুটো শরীর আজ লেপ্টে আছে।জরোসরো হয়ে তিশা জিসানের বুকে মাথা রেখে ঘুমিয়ে আছে।আজকের সকালের ঘুমটা জিসানের তারাতারিই ভেঙ্গে গেলো।কেনো?জিসানের জানা নেই।সারারাত মাত্র কয়েক ঘন্টাই ঘুমাতে পেরেছে,তবুও কেনো জানি আজ ক্লান্ত লাগছে না।বরং  নিজেকে আজ পরিপূর্ণ লাগছে।তার পরিপূর্ণের একটিতো কারণ এই মেয়েটি।
যে আজ একদম বাচ্চাদের মতো আমার বুকের মাঝে জড়িয়ে ধরে ঘুমিয়ে আছে।মনে হয় ছেড়ে দিলেই চলে যাবো কোথাও।"

__জিসানের এক হাত তিশার কোমড়ে,আরেক হাত তিশার পিঠে।জিসান তিশার কোমড়টা ধরে নিজের সাথে আরো একটু মিশিয়ে নিয়ে কপালে একটা চুমো দিলো।তিশাও আড়মোড়া দিয়ে একটু জেগে গিয়ে,জিসানের উন্মুক্ত বুকে নিজের ঠোঁটাটা ছুঁয়ে দিলো।এটা দেখে জিসানের মুখেও একটা তৃপ্তির হাসি ফুটে উঠলো।

"কিছুক্ষণ পর তিশা উঠতে নিলে,জিসান তিশার হাতটা ধরে,তিশার আঙ্গুল গুলোর মাঝে নিজের আঙ্গুলগুলো ডুকিয়ে মুঠিতে করে নিলো।তিশাকে আবার নিজের কাছে টেনে নিলো,কোথায় যাওয়া হচ্ছে।"

___তিশা জিসানের বুকে মাথাটা রেখেই বলে, উঠতে হবে না।

'-এখনো বেশ সময় আছে,এতো তারাতারি তোকে উঠতে হবে না।কিছুটা বিশ্রামের প্রয়োজন তোর।আজ আবার রাতে রিসেপশনের পার্টি আছে।তাই আরো কিছুক্ষণ ঘুমা।'

___তিশা মুখটা একটু উঠিয়ে ইনোসেন্ট একটা ভাব নিয়ে,সবাই কি ভাববে।

"জিসান একটু মৃদো হেসে, তিশার মাথাটা বুকের সাথে চেপে ধরে,চুলগুলো হাতাতে লাগলো।কেউ কিছু ভাববে না।দুনিয়াতে আমরাই নতুন কাঁপল না,সবার আইডিয়া আছে, তোকে চিন্তা করতে হবে না।"

___জিসান নিজেই কিছুক্ষণ পর তিশাকে ডাক দিলো,তিশাএএএ।একদম সপ্ট কন্ঠে। 

"হুম।"

___থ্যাংক ইউ জান,এমন একটা রাতের জন্য।আমার ২৭বছর জীবনের সবথেকে সুন্দর রাত ছিলো কাল।আর এসবই সম্ভব হয়েছে তোর জন্য।তিশাকে শক্ত করে নিজের সাথে জড়িয়ে নিয়ে।
তিশার হাতে একটা কিস করে,আমার জীবনে আসার জন্য থ্যাংক ইউ।আমাকে এভাবে ভালোবাসার জন্য থ্যাংক ইউ।আমার মাঝে নিজেকে বিলানোর জন্য থ্যাংক ইউ জান।
সারাজীবন এভাবেই আমার পাশে থাকিস।তোর মাঝে আমি নিজের অস্থিত্ব দেখতে চাই।জীবনের বাকি পথগুলো তোকে নিয়েই পারি দিতে চাই।মরনের পরও তোকে ভুলতে চাই না আমি।

"তিশাও জিসানের বুক থেকে মাথাটা উঠিয়ে,জিসানের কপালে একটা কিস করে,আমিও আপনাকে অনেক অনেক অনেক ভালোবাসি।ডান গালে কিস করে,থ্যাংক ইউ আমাকে এতোটা স্পেশিয়াল অনুভোব করানোর জন্য।বাম গালে কিস করে,থ্যাংক ইউ আমাকে এতো ভালোবাসার জন্য।জিসানের ঠোঁটেও হালকা ছুঁয়ে লজ্জাময় মুখে  থ্যাংক ইউ কাল রাতে আমাকে পরিপূর্ণ করার জন্য।জিসানও পরম যত্নে তিশাকে দুহাতের বাহুডোরে আবদ্ধ করে নিজের উপর উঠিয়ে শুয়ে রইলো।"

---জীবনটা সত্যিই অনেক সুন্দর হয় ভালোবাসার মানুষটি পাশে থাকলে।এতো সুখ সবার কপালে সয় না,কিন্তু আমি আজ সুখী।আর এটা আমার কাছে যথেষ্ট। আমার ভালোবাসা আজ তোকেও বাধ্য করলো আমার মতো বদরাগী একটা মানুষকে ভালোবাসতে।তোর ভালোবাসাই আমার জন্য পৃথিবীর সবথেকে দামী একটা জিনিস,যেটা আমি যে কোনও মূল্যে হারাতে চাই না।
জানিনা কতোদিন বাঁচবো তবে যতোদিন বাঁচবো এই বুকে তোকে নিয়ে বাঁচবো।

জিসান ও তিশা আরোও বেশ কিছু সময় একান্ত কাটালো। আর একে অপরের মাঝে নিজেদের অনুভূতিগুলো শেয়ার করলো।

||
||

"জিসান ও তিশা নিচে নেমে যথাসময় সবার সাথে নাস্তা করে নেয়।এর পর জিসানকে যেতে হয়,কারন আজ ওদের রিসেপশন। তাই ও সারাদিন আজ ব্যস্তই থাকবে।নিশিকে তিশার সাথেই থাকার জন্য বলে,জিসান চলে যায়।তিশারও সারাদিন নিশি ও জিসানের কাজিনদের সাথে গল্প করে আর বাকি সময় ঘুমিয়ে কেটে যায়।বিকেলে নিশি কিছু বিউটিশিয়ান কে সাথে করে নিয়ে আসে তিশাকে রেডি করার জন্য।

__তিশা আজকে একটা ডিজাইনার লেহেঙ্গা পড়েছে।রেড কালারের লেহেঙ্গাটা গোল্ডেন কাজ করা আর গোল্ডেন ওরনা।অসম্ভব সুন্দর এটি।এটা নাকি জিসান প্যারিস থেকে আসার সময় ওরই এক ডিজাইনার ফ্রেন্ডকে দিয়ে ডিজাইন করে বানিয়ে নিয়ে এসেছে।আমি জাস্ট হতোবম্ভ।কি ধরনের মানুষ উনি।আমাকে আবাক করার কোনও পথ ছাড়ে না।লেহেঙ্গাটা দেখে সবাই প্রশংসা করছে।

"-গয়নাগুলো দেখে আমি আরো অবাক,কারন গহনা গুলো লেহেঙ্গার সাথে ম্যাচিং করে ক্লাসিকাল স্টাইলের মর্ডান ভার্শন গহনা ডিজাইন করা।একদম রাজকীয় লাগছে সব কিছু।টিকলি,কানের জুমকাটার ডিজাইন চোখে পড়ার মতো।তবে লেহেঙ্গা গর্জিয়াছ বলে,আমাকে জুয়েলারি শুধু টিকলি,ঝুমকা,ছোট একটা হারের সাথে কুন্দন পাথরের একটা সিতাহার আর হাতে দুটো বালা পড়ানো হয়েছে।সাজের সাথে সব কিছু একদম পার্ফেক্ট।"

___যথাসময় পৌঁছালাম হল রুমে।বিশাল এক হলরুম বুক করা হয়েছে,সাথে সুন্দর ডেকোরেশন। কিন্তু এখনো জিসানকে চোখে পরেনি।গাড়ী থেকে নামতে নিলেই একটি হাত আমার দিকে বাড়িয়ে দেয় কেউ।আমি তাকিয়ে দেখি একজন সুদর্শন পুরুষ আমার সামনে দাঁড়িয়ে আছে। কালো প্যান্ট,কালো কোর্ট, ওয়াইট সার্ট এর সাথে কালো ব্লেজার।চুলগুলো আজ স্পাইক করা।এদেখি কোনও রাজ্যের রাজকুমার আর মুখে তার আজও সেই কিলার স্মাইল যা এখন আমাকে খুন করার জন্য যথেষ্ট।আমার হাতটি ধরে আমাকে বের হতে সাহায্য করলো।বাহিরে অনেক মিডিয়াও দাঁড়িয়ে ছিলো।জিসান আজ প্রথম মিডিয়ার সামনে আমাকে মুভ করালো।আমার খুব আনইজি লাগছিলো।কারন এসবের মাঝে অভ্যাস্ত নই আমি।জিসান সবার প্রশ্নের উত্তর দিয়ে আমাকে নিয়ে ভেতরে চলে গেলো।

"হল রুমের সবার নযর আমাদের উপর।সবার মুখে শুধু এক কথা মেড ফোর ইজ আদার।চেনা অচেনা অনেক মুখই আমাদের আশির্বাদ করলো।আমার বাড়ী থেকেও সবাই এসেছে।চারদিকে সবাই খুব ইনজয় করছে।জিসান এক এক করে সবার সাথে আমাকে পরিচয় করিয়ে দিলো।অনুষ্ঠান শেষ হতে হতে ১২টা বেজে গেলো।আমরা বাসায় আসতে আসতে ১টা বেজে গেলো।এতো টায়ার্ড ফিল করছি যে, চেন্জ ও করতে মন চাইছে না।তবুও জোর করে চেন্জ করে ফ্রেস হয়ে গেলাম তারাতারি।
জিসান এখনো রুমে আসেনি কি করে লোকটি আল্লাহই জানে।এতো কাজ কিভাবে করে।মুখে কোনও টায়ার্ডনেস নেই।আমি বিছানায় শোয়ার সাথে সাথেই চোখে রাজ্যের ঘুম এসে পড়লো। "

___কিন্ত গভীর রাতে কারো ভারী নিশ্বাসের শব্দে ঘুম ভেঙ্গে গেলো আমার।তবুও কেনো জানি চোখদুটো খুলতে মন চাইলো না।কিন্তু কারো ভারি নিশ্বাস কিছুতেই আমাকে ঘুমাতে দিচ্ছে না।আমি চোখদুটো খুললেই সামনে জিসানকে দেখতে পাই।আমার দিকেই অদ্ভুত দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে।
মুখে একটু বিরক্ত নিয়ে,ঘুমাচ্ছেন না কেনো, ঘুমান।আর আমাকেও ঘুমাতে দেন বলেই ওপাশ হয়ে শুয়ে পরলাম।জিসানের হাভভাব ভালো করেই বুঝেছি।ব্যাচারা কে জব্দ করার হাত কেনো ছাড়বো,আমাকে অনেক জ্বালিয়েছে,এবার বুঝো ঢেলা।

"জিসান পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে,জান!আমি জানি তুই ঘুমাস নাই।আমাকে জ্বালাবার জন্য এমন করছিস।তুই আসবি নাকি, আমি শুরু করবো।"

___কাল দেখা যাবে আজ ঘুমান।

জিসান একটানে আমাকে নিজের দিকে ঘুড়িয়ে,বহুকাল ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে পার করেছি ম্যাম,এখন থেকে ঘুম আমার জন্য হারাম।এখন থেকে রাতে শুধু রোমান্স হবে,এতোকাল আমাকে জ্বালানোর পরও তোর মন ভরেনি।এখন এতো কাছে থেকেও আমাকে জ্বালাচ্ছিস।

___আরে বাহ আমি কি করলাম।

"কি করলি!প্রথমতো এতো ছোট কেনো তুই,আরও একটু আগে দুনিয়াতে আসলে কি হতো।তাহলেতো আমাকে এতোবছর অপেক্ষা করতে হতো না।তোকে আগেই পেয়ে যেতাম।আমাকে কস্ট দেওয়ার জন্য তোর বাবা মাকে জেলে দেওয়া দরকার।তারা তোকে এতো লেট করে কেনো আনলো দুনিয়াতে।"

___ছিঃ আপনার মুখে কিছুই আটকায় না।কিসব বলছেন।

"আমি কি বললাম।আমি জাস্ট আমার কষ্টটা শেয়ার করছি তোর সাথে।তুই একমাত্র নারী যাকে দেখলে আমি কন্ট্রোললেস হয়ে পরি।কতোবার তোকে কাছে পেতে মন চেয়েছে,তা তুই যদি জানতি তাহলে আমার থেকে ১০০হাত দূরে থাকতি।"

___হয়েছে ছাড়ুন আর এখন ঘুমান।

"কোনও ঘুমটুম নেই,জিসান আমার ঘাড়ে মুখ ডুবিয়ে, এখন শুধু রোমান্স হবে।আমি জানি এই লোকটি কোনও কথা শুনবে না আজ।তাই আবারও দুজনই হারিয়ে গেলাম ভালোবাসার এক অন্য জগতে।"

--নিয়মে আমাদের আজ আমার বাবার বাড়ী যাওয়ার কথা ছিলো। কিন্তু মিস্টার জিসানের অন্য প্লানিং চলছে।আমি ঘুম থেকে উঠার পরই আমাকে নাস্তা করিয়ে প্যাকিং করাতে বসে পড়লো,আমি আগ্রহের সাথে তার দিকে তাকালে,সে আমাকে কাছে টেনে কানেকানে বললো,হানিমুনে যাওয়ার জন্য রেডি হয়ে যাও ডিয়ার। আমরা আজ রাতে প্যারিসে যাচ্ছি।আমি আবাক করা দৃষ্টিতে তার দিকে তাকিয়ে রইলাম।এই লোক কতো কিছু প্লানিং করে রেখেছে।এতো কিছু রাখে কিভাবে পেটে।ব্যাথা করে না।

||
||

"দীর্ঘ কয়েক ঘন্টা জার্নির পর আমরা অবশেষে আলোর শহর প্যারিসে পৌঁছালাম।জীবনে প্রথম নিজের দেশ ছেড়ে এতো দূর আসা।জিসান আমার হাতটা শক্ত করে ধরে রেখেছে,মনে হয় ছেড়ে দিলে হারিয়ে যাবো।আমি কি ছোট বাচ্চা নি আজব পাবলিক।বেশ কিছুক্ষণ হলো আমরা এয়ারপোর্ট থেকে বের হয়ে দাঁড়িয়ে আছি। জিসান বার বার ঘড়ি দেখছে,আর কাকে যেনো কল করছে। হয়তো কারো অপেক্ষা করছে।"

___হঠাৎ আমার সামনে একটা ব্লাক কালারের গাড়ী এসে দাঁড়ালো।আমি একটু ভয়ই পেয়ে গেলাম এভাবে গাড়ী থামার কারনে।জিসানও আমার পাশে এসে দাঁড়ালো। গাড়ী থেকে একটা ছেলে নামলো,বলাবহুল্য ছেলেটা সেই লেভেলের ড্যাসিং।জিসানের থেকে কোনও অংশে কম না।তবে তার সৌন্দর্য চোখে পড়ার কারন তার নীল চোখ।হঠাৎ জিসানের কথায় আমার টনক নড়ে।

"তিশা ও হলো,নিলয়।আমার ফ্রেন্ড।রায়হানের পর যদি আমি কারো ক্লোজ থাকি তা হলো নিলয়।আমি একটু বেয়াক্কল মার্কা প্রশ্ন করে উঠলাম,উনার নীল চোখের কারণে কি  উনার বাবা মা নিলয় নাম রেখেছে।নাকি লেন্স পরে আছে। 
--জিসান একটু হেসে দিলো,আমার কথায়।আমাকে এক হাত দিয়ে জড়িয়ে ধরে বললো,নিলয় এতো শোকড হবার কিছুই নেই।আমি আগেই বলেছি,আমার বউ একটু বোকা।
"নিলয় হু হা করে হেসে জিসানকে এসে জড়িয়ে ধরে বললো,বস।ইউ আর রাইট।একদম সেম।যেমন তুই বলেছিস।এই কিউটের ডিব্বাকে ছেড়ে তুই কিভাবে প্যারিসে পরেছিলি।আমি হলেতো কিডন্যাপ করে সাথে নিয়ে আসতাম।"

___আমি তাদের দিকে এখনো বেয়াক্কল এর মতো তাকিয়ে আছি।জিসান একটু দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে,আমার দিকে তাকিয়ে সেগুলো অনেক বেদনাময় দিন ছিলো।আর কেউ না দেখলে তুইতো দেখেছিস,নিলয়কে উদ্দেশ্য করে।

"হুম,বাট!এখন আমি খুশি তোদের একসাথে দেখে।আরেকটা কথা,আজ রাত তোদের জন্য পার্টির আয়েজন করেছি ক্লাবে।সো মাস্ট বি কাম।আগে চল,তোদের হোটেলে পৌঁছে দিই।তোদের রেস্ট এর প্রয়োজন।"
--জিসান আমাকে নিয়ে গাড়ীতে বসে পরলে,কিছুক্ষণের মধ্যে আমরা পুলম্যান প্যারিস বারসি হোটেলে পৌঁছে গেলাম।এটা একটা বিলাশবহুল পর্যাটক হোটেল।সাধারণত প্যারিস শহরের হোটেলগুলো নাকি ব্যয়বহুল।আর এটাতো বিশাল জায়গা নিয়ে হোটেলটি বানানে হয়েছে।প্যারিস বাসীরা একে বারসি ভিলেজও বলে।"

____আমি এসেই রুমটা দেখতে লাগলাম।খুব সুন্দর করে সাজানো গোছানো।সব কিছু সাদা ধবধবে।চাদর হতে শুরু করে পর্দাগুলোও।বালকানিতে দাঁড়ালে পুরো রিসোর্টটা দেখা যায়।জিসান ঠিকই বলেছে,প্যারিসে আসলে নাকি যে কেউ এর প্রেমে পরে যাবে।রাস্তা ঘাট হতে শুরু করে সব কিছু যেমন পরিষ্কার তেমনি চারপাশের পরিবেশটা বেশ মনোমুগ্ধকর। হঠাৎ জিসান এসে জড়িয়ে ধরলো।ইউ লাইক ইট।

হুম,এটা অনেক সুন্দর। আমার অনেক ভালো লেগেছে।

___আরো অনেক কিছু আছে এখানে দেখার মতো।আমরা কাল থেকে শুরু করবো।এখন ফ্রেস হয়ে নে।আমি খাবার ওডার করছি।খেয়ে বিশ্রাম নেওয়া দরকার।রাতে আবার পার্টিতে যেতে হবে।

কিন্তু এখানে কি বাঙ্গালি খাবার পাওয়া যাবে।

___জি ম্যাম, এই হোটেলে সব দেশের খাবার পাওয়া যায়।কারণ এটা পর্যাটক হোটেল।বিভিন্ন দেশ থেকে মানুষ আসে।তাই সব ধরনের খাবারই পাওয়া যায়। ডোন্ট ওয়ারি।
আমরা ফ্রেস হয়ে খাওয়া দাওয়া করে লম্বা একটা ঘুম দিলাম।আমার উঠতে উঠতে সন্ধা সাতটা বেজে গিয়েছে।উঠে দেখি জিসান নেই পাশে।এদিক ওদিক তাকানোর পর বালকানিতে চোখ পরে,ফোনে কথা বলছে।আমি গিয়ে উনার পিঠে মাথা রেখে জড়িয়ে ধরি।জিসান কিছুটা হচকিয়ে যায়।আমার হঠাৎ এমন করায়।এর পর হাতটা ধরে সামনে এনে বলে,ঘুম কেমন হলো।

"হুম ভালো।বাট মনে হয় অনেকক্ষণ ঘুমিয়েছি।
ইটস ওকে,এটা জার্নির কারনে।তুই গিয়ে ফ্রেস হো।ইউ আর হাঙ্গরি, রাইট।আমি ঠোঁট দুটো উল্টিয়ে মাথা নাড়লাম।একচুয়েলি ক্ষুধার কারণেই ঘুমটা ভেঙ্গে গিয়েছে।ফ্রেস হয়ে দুজনেই কিছুটা খেয়ে নিলাম এর পর নয়টায় আমরা পার্টির জন্য রওনা দিলাম।
একটা আশ্চর্য জিনিস হলো,সাহেব আজ আমাকে লেডিস ব্লু রং এর জিন্স, ওয়াইট লেডিস শার্ট আর উপরে একটা জেকেট পরতে দিলো।কারণ এখন বাহিরের ওয়েদার একটু ঠাণ্ডা। আমি অবাক জিসান আমাকে এসব পড়তে দিলেন।কারন আমার মনে আছে একদিন আমি নিশির সাথে বাহিরে যাওয়ার জন্য জিন্স আর শর্ট কামিজ পরে বের হয়েছিলাম বলে আমার গালে জোরে একটা পরেছিলো। দুদিন পর্যন্ত কিছু ক্ষেতে পারিনি গালের ব্যাথায়।আর এই সাহেব আমার জন্য এসব নিয়ে এসেছে এখানে পড়ার জন্য।হাউ স্ট্রেঞ্জ! "

___আশ্চর্য বিষয় জিসানও ব্লু জিন্স আর ওয়াইট শার্ট পড়েছে।উফ কি যে লাগছে।একদম আমার প্রিয় কেডভেরি চকলেট।খেয়ে ফেলতে মন চাইছে।আমার জামাইটা এতো রসগোল্লার মতো কেনো।দেখলেই কেমন লোভ লাগে।
"জিসান আয়নায় দাঁড়িয়ে বেশ কিছুক্ষণ ধরে দেখছে তিশা তাকিয়ে কিছু একটা  ভাবছে। জিসান একটু দুষ্ট হাসি দিয়ে তিশার কাছে এসে কোমড়টা জড়িয়ে নিজের সাথে চেপে ধরে বললো,ইউ নো জান।
আমরা একটু দেরি করে যেতে পারি।যদি তোর এখন শাওয়ার নিতে সমস্যা না থাকে।"
--তিশা ব্যাপারটা বুঝতে পেরে জিসানকে ঢেলে সরাতে নেয়।ছাড়ুন, সব সময় মাথায়,এসব ঘুড়ে আপনার।

হুম,হানিমুনে এসেছি, এসব ঘুরবে নাতো কিসব ঘুড়বে।

___কিন্তু এখন না,পার্টির জন্য লেট হচ্ছি আমরা, ছাড়ুন।

উম,কাছে যেহেতু এসে পড়েছি,তাহলে কিছু না নিয়ে তো যাবো না,কিছু না কিছুতো দিতে হবে।তাইনা।

"কি লাগবে।ভ্রুটা কুঁচকিয়ে।"

___জিসান কিছু বলতে না দিয়ে, তিশার ঠোঁটদুটো দখল করে নিলো।হঠাৎ এমন করায় তিশাও শোকড!

"আমরা যথাসময় ক্লাবে এসে পরলাম।একটা জিনিস লক্ষ্য করলাম,এই শহরে বার আর নাইট ক্লাবগুলো বেশি। বিদেশি কালচার বলে কথা।কিন্তু আমি এই প্রথম এসেছি,তাই একটু ভয় আর আনইজিফিল লাগছে।জিসান আমার হাতটা ধরে,জান তোর ইচ্ছা না হলে আমরা যাবো না।আমি নিলয়কে বুঝিয়ে বলে দেবনি।
-আমিও জিসানের হাতের উপর হাত রেখে,ইটস ওকে।আমি যাবো।নিল ভাইয়া আমাদের জন্যই এটা আয়োজন করেছে,না গেলে তার মনটাও খারাপ হয়ে যাবে।
"ওকে,বাট তোর ভালো না লাগলে আমাকে বলবি,আমরা সাথে সাথেই চলে যাবো ওকে।"
-আমি মাথা নেড়ে হা বললাম।আমরা ভেতরে যাওয়ার সাথে সাথে জিসান ও নিল ভাইয়ের ফ্রেন্ড সার্কেল আমাদের ওয়েলকাম করে সবাই হাত মিলালো।জিসানও আমাকে সবার সাথে পরিচয় করিয়ে যতোটা পারছে কম্ফোর্টেবল করার চেস্টা করছে।

||
||

হঠাৎ ক্লাবের সব লাইট অফ হয়ে যায়।চারদিকে সোরগোল করা সব শব্দও বন্ধ হয়ে যায়।শুধু আমার উপর একটা লাইট জলে উঠে,সাথে সাথে মিউজিক ও চলা শুরু হয়ে যায়।গান চলছে

Bulaave Tujhe Yaar Aaj Meri Galiyaan
Basau Tere Sang Main Alag Duniya....

____হঠাৎ কেউ আমার কোমড় ধরে সমানে ঘুড়ালো,আমি কিছুটা ভয় পেলেও জিসানকে দেখে ঠান্ডা হয়ে যাই।এসেই আমার পনিটেল করা চুলগুলো খুলে দেয়।আমার কোমড়কে ধরে তার আরো কাছে টেনে নেয়।একহাতে কোমড়,আর এক হাত আমার হাতে রাখে।কি হচ্ছে আমর বুঝতে একমিনিট সময় লেগে গেলো।
জিসান আমার সামনে,গান এখনে চলছে

Bulaave Tujhe Yaar Aaj Meri Galiyaan
Basau Tere Sang Main Alag Duniyaa
Na Aaye Kabhi Dono Mein Jara Bhi Faasle
Bas Ek Tu Ho, Ek Main Hu Aur Koi Na

Hai Mera Sab Kuch Tera Tu Samajh Le
Tu Chahe Mere Haq Ki Zameen Rakh Le
Tu Saason Pe Bhi Naam Tera Likh De
Main Jiyu Jab Jab Tera Dil Dhadke

Tujhse Mera Ye Jee Nahi Bharta
Kuch Bhi Nahi Asar Ab Karta
Meri Raah Tujhi Se Meri Chaah Tujhi Se
Mujhe Bas Yahi Reh Jana

____তিশা জিসানের গলা জরিয়ে ধরলো,আর জিসানে হাত তিশার কেমড়ে।একজন আরেক জনের এতোই কাছে যে নিশ্বাসটুকুও অনুভোব করতে পারছে।
গানের তালে তালে জিসান আমাকে নাচাচ্ছে। এই কাপল নাচগুলো আমি অনেকবার নিশি আর আমি শখ করে শিখেছিলাম,তাই জিসানকে বেশি কস্ট করতে হয়নি।তার সাথে স্টেপ বাই স্টেপ নেচে চলতে।

Lagi Hai Teri Aadatein Mujhe Jab Se
Hai Tere Bin Pal Vi Baras Lagte
Bulawe Tujhe Yaar Aaj Meri Galiyaan
Basau Tere Sang Main Alag Duniya

Jo Hove Tu Udas Mujhe Dekh Hasde
Tu Chahe Mere Haq Ki Zameen Rakh Le
Tu Saason Pe Bhi Naam Tera Likh De
Main Jiyu Jab Jab Tera Dil Dhadke

Tujhse Mili To Shikha Maine Hasna
Aaya Mujhe Safar Mein Thaharna
Main To Bhool Gayi Duniya Ka Pata
Yaara Jab Se Tujhe Hai Jaana

____জিসান আমার দিকে এক দৃষ্টে তাকিয়ে আছে।আর গানের তালে দুজন আমরা হারিয়ে যাচ্ছি।কারো কোনও হুস নেই।

Hai Tu Hi Dil Jaan Hai Meri Ab Se
Ve Zikar Tera Na Jaye Mere Lab Se
Bulawe Tujhe Yaar Aaj Meri Galiyaan
Basau Tere Sang Main Alag Duniyaa

Jo Howe Tu Udas Mujhe Dekh Hasde
Tu Chahe Mere Haq Ki Zameen Rakh Le
Tu Sanso Pe Bhi Nam Tera Likh De
Main Jiyu Jab Jab Tera Dil Dhadke

____গানটা শেষ হয়ে গিয়েছে,মুহুর্তে আবার নিরবতা। কিন্তু আমি আর জিসান এখনো এভাবেই দাঁড়িয়ে আছি।তবে কিছুক্ষণ পর করতালিতে আমাদের হুস আসলো।মুহুর্তে আমার এতো লজ্জা লাগলো,যে দৌঁড় দিতে মন চাইছে।জিসান বুঝে আমাকে তার কাছে টেনে নিলো।তার সব ফ্রেন্ডসরা সবাই চিয়ার করছে।

"কিন্তু হঠাৎ কেউ করতালি দিতে দিতে আমাদের সামনে আসছে।লাইটগুলো বন্ধ বলে চেহারা স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে না।আস্তে আস্তে সামনে এলে,দেখে আমি চমকিয়ে যাই,লাবণি আপু।"

____কংগ্রেস জিসান। বিয়ে করে ফেললে,আর দাওয়াত ও দিলে না।আমি খুবই রাগ তোমার উপর।জিসান রাগী দৃষ্টিতে নিলয়ের দিকে তাকালো,চোখের ইশারায় বোঝালও,লাবণি এখানে কি করে।

নিলয় ও ইশারায় বুঝালো ও জানে না।

চলবে.........।

No comments